॥মোক্তার হোসেন॥ রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার বাবুপাড়া ইউপির ভট্টাচার্যপাড়া গ্রামের আরশেদ আলী প্রামাণিকের ছেলে বাবুপাড়া ইউপির পাংশা প্রপার দাখিল মাদরাসার ৭ম শ্রেণির ছাত্র পিয়াস(১৪) গত ১৯শে ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাড়ী থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। তিনরাত পর গতকাল ২২শে ডিসেম্বর সকাল ১০টার দিকে স্থানীয় লোকজন রায় মশায়দের পুকুরে পিয়াসের মৃতদেহ দেখতে পায়।
খবর পেয়ে পাংশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাখাওয়াত হোসেন, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার(পাংশা সার্কেল) মোঃ ফজলুল করিম ও পাংশা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোফাজ্জেল হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পাংশা থানা পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রাজবাড়ী মর্গে পাঠিয়েছেন।
এদিকে তুচ্ছ ঘটনায় পরিকল্পিতভাবে কিশোর পুত্র পিয়াসকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবী করেছেন নিহতের পিতা আরশেদ আলী প্রামাণিক।
জানাযায়, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ৬টার দিকে বাড়ীর অদূরে রাস্তায় একই গ্রামের মালেক শেখের ছেলে হিরার সাথে পিয়াসের কথা হয়। পরে অজ্ঞাত ব্যক্তির মোটর সাইকেলে পিয়াস রশিদ মোড় এলাকার দিকে যায়। রাতে বাড়ীতে না ফেরায় পরিবারের লোকজন আত্মীয়-স্বজন ও বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে। কোথাও পিয়াসের সন্ধান না পেয়ে আরশেদ আলী গত ২১শে ডিসেম্বর পাংশা থানায় ৮৪১ নম্বর জিডি করেন।
আরশেদ আলী প্রামাণিক জানান, গত ১৬ই ডিসেম্বর দুপুরে বাবুপাড়া ইউপির চাঁদপুর-ফুলতলা গ্রামের এক মেয়েকে লক্ষ্য করে পিয়াস পা দিয়ে একটি খোয়া ছুরে মারে। বিষয়টি ওই মেয়ে তার ভাই ইমরানকে জানায়। ইমরান ক্ষুব্ধ হয়ে পিয়াসকে হুমকী দেয়।
আরশেদ আলী আরো জানান, গত বৃহস্পতিবার চাঁদপুর-ফুলতলা গ্রামে রফিকুল ইসলামের বাড়ীতে গিয়ে তার কাছে ওই ঘটনার জন্য বারবার ক্ষমা চেয়ে এসেছি। পিয়াসকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান তিনি।
ঘটনার বিষয়ে পাংশা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোফাজ্জেল হোসেন জানান, মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রাজবাড়ী মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট ছাড়া কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে ঘটনার মোটিভ উদঘাটন ও জড়িতদের বিষয়ে তথ্যানুসন্ধান চলছে বলে জানান তিনি।
তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে মাদরাসা ছাত্র পিয়াস সবার ছোট। মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের পরিবারের লোকজনের আহাজারীতে এলাকার বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। ময়না তদন্ত শেষে গতকাল শুক্রবার রাত ৮টায় ভট্টাচার্য গ্রামে জানাযা নামাজ শেষে হাজরাপাড়া গোরস্থানে নিহতের দাফন সম্পন্নœœ করা হয়।