॥প্রতিনিধি॥ আদালতের বিচারিক কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে খুলনা জেলা ও দায়রা জজ জেসমিন আনোয়ারকে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে।
গতকাল ১২ই জুন রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপ-সচিব(প্রশাসন-১) মোঃ মাহবুবার রহমান সরকার স্বাক্ষরিত(৪১৩-/১(১৩)-বিচার-৩/১টি-০১/২০১৭) স্মারকে এ আদেশ দেওয়া হয়েছে।
আদেশে বলা হয়, জেলা জজ জেসমিন আনোয়ার খুলনার জেলা জজের বর্তমান পদের দায়িত্বভার ছেড়ে দিয়ে পরবর্তী জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার নিকট হস্তান্তর করে অবিলম্বে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান করবেন।
উল্লেখ্য, খুলনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারকের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে জেসমিন আনোয়ারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের দুর্নীতি, অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। খুলনার বড় বড় মাদক ব্যবসায়ীদের জামিনে মুক্তিসহ কালোবাজারিদের বিভিন্ন মামলায় জামিনে মুক্ত করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে গত ১৫ই এপ্রিল আইনমন্ত্রীর নিকট সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এম মুজিবর রহমান, অ্যাডভোকেট গাজী আব্দুল বারী, অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা ফারাজী, অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ হোসেন বাচ্চু, শেখ ইউনুস আহম্মেদ, শেখ সোহরাব হোসেন, আব্দুল মালেক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিনা মিজানুর রহমান, শেখ নূরুল হাসান রুবা, মোল্লা মোহাম্মদ মাসুদ রশিদসহ সিনিয়র আইনজীবীরা লিখিতভাবে অভিযোগ করেন।
জেলা ও দায়রা জজ জেসমিন আনোয়ারের বিরুদ্ধে আনা উক্ত অভিযোগের সঙ্গে একমত পোষণ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এমপি, খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান এমপি, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হারুনুর রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম মোস্তফা রশিদী সুজা এমপি তাকে অবিলম্বে খুলনা থেকে প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়ে আইনমন্ত্রীর নিকট লিখিতভাবে সুপারিশ করেন।
সুত্র জানায়, আইনজীবীদের উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা ও দায়রা জজ জেসমিন আনোয়ারকে আইন ও বিচার মন্ত্রণালয় থেকে কারণ দর্শানোর নোটিস প্রদান ও তাকে খুলনা থেকে চট্টগ্রামের লেবার কোর্টে বদলি করা হয়। কিন্তু কোনো এক অদৃশ্য কারণে তার বদলির আদেশ স্থগিত করা হয়।
আইনজীবীদের লিখিত অভিযোগে জানাযায়, ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে খুলনা জেলা ও দায়রা জজ হিসাবে জেসমিন আনোয়ার যোগদানের পর থেকেই অনৈতিক ও অবিচারিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন। এছাড়া তিনি অর্থের বিনিময়ে মাদক ব্যবসায়ীদের একের পর এক জামিন দিয়ে বিতর্কিত হয়ে পড়েন। এছাড়া তিনি সরকারী বাসভবনে বসবাস করেও তিনি ‘বাড়ি ভাড়া করে বসবাস করছেন’ দেখিয়ে ৭ লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ১০ই জুন জাতীয় দৈনিকে ‘খুলনা জেলা ও দায়রা জজকে প্রত্যাহারের দাবী আইনজীবীদের’ শীর্ষক সংবাদ প্রকাশিত হয়।