॥স্টাফ রিপোর্টার॥ র্যাব-৮ ফরিদপুর ক্যাম্প গোপন অনুসন্ধানে জানতে পারে যে, দীর্ঘদিন ধরে ফরিদপুর জেলার একদল সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র ‘লটারীতে টাকা পেয়েছে মর্মে’ প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন লোকজনদের নিকট হতে প্রতারণামূলকভাবে বিকাশের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এই চক্রকে শনাক্ত করে আটকের জন্য র্যাব কার্যক্রম শুরু করে।
এরই এক পর্যায়ে গত ১৪ই ফেব্রুয়ারী মোঃ মেহের আলী(২৬) পিতা- মৃত বাহার মন্ডল, সাং-ভাইলক্ষীপুর, থানা-চারঘাট, জেলা-রাজশাহীকে প্রতারক চক্রের সদস্যরা ফরিদপুর এলাকা হতে ফোন করে জানায় যে, সে তেত্রিশ লক্ষ টাকা লটারীতে বিজয়ী হয়েছেন। উক্ত তেত্রিশ লক্ষ টাকার ভ্যাট বাবদ তেত্রিশ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে তাদের দিলে সে তেত্রিশ লক্ষ টাকা পাবে। র্যাব এই সংবাদটি পাওয়ার পর এ বিষয় নিয়ে কাজ শুরু করে। প্রতারক চক্রদের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর ট্র্যাকিং করে জানতে পারে যে, প্রতারক চক্রের সদস্যদের অবস্থান ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানাধীন কাউলিপাড়া এলাকায়। সুনির্দিষ্টভাবে এ তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৮ ফরিদপুর ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রইছ উদ্দিনে নেতৃত্বে র্যাবের একটি বিশেষ দল ১৪ই ফেব্রুয়ারী বিকেল ৫টার দিকে ওই এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে প্রতারক চক্রের সদস্য রুবেল আহম্মেদ(৩০), পিং-মোঃ আলী আকবর এবং মোঃ জহিরুল হাওলাদার(৩৮), পিং-মোঃ বারেক হাওলাদার, উভয় সাং-তুযারপুর, থানা-ভাঙ্গা, জেলা-ফরিদপুরদ্বয়কে আটক করে। আটককৃতদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে তারা প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করে এবং জানায় যে, ফরিদপুর জেলার সদরপুর থানাধীন সদরপুর কলেজ মোড় পিয়াজখালী রোডের কাজী হাশেম কমপ্লেক্সের নীচতলায় টিপু মোবাইল সেন্টারের মালিক মোঃ টিপু কাজী(২৬) তাদের সহযোগী এবং তার মাধ্যমেই তারা বিকাশে লেনদেনের কার্যক্রম করে। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওইদিনই সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে অভিযান চালিয়ে মোঃ টিপু কাজীকে (পিতা-মোঃ আপতা কাজী, সাং-ঢেউখালী, থানা-সদরপুর, জেলা-ফরিদপুর) আটক করা হয়। এ সময় তার দোকান তল্লাশী করে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন কোম্পানীর ৬টি মোবাইল ফোন, বিভিন্ন অপারেটরের ২০টি সিম এবং প্রতারণামূলকভাবে বিকাশের মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া নগদ ৩৯হাজার ৯৫০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে তারা মোবাইলের মাধ্যমে বিভিন্ন লোকদের প্রলোভন দেখিয়ে প্ররোচিত করে প্রতারণামূলকভাবে মোটা অংকের টাকা আত্মসাত করার কথা স্বীকার করে। এ ঘটনায় র্যাব বাদী হয়ে উল্লেখিতদের বিরুদ্ধে ফরিদপুর জেলার সদরপুর থানায় একটি প্রতারণা মামলা দায়ের করেছে।