সনাতন হিন্দু ধর্মের প্রবক্তা ও প্রাণপুরুষ মহাবতার আরাধ্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে রাজবাড়ীর হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা।
বাংলাদেশ উদার ধর্মীয় মূল্যবোধের রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের বুকে পরিচিত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর নেতৃত্বে এ দেশের হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সকল ধর্মের মানুষ মিলেই মুক্তিযুদ্ধ করেছে এবং বর্তমানে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সবাই অবদান রেখে চলেছে। আমাদের সংবিধানে সকল ধর্মের সমানাধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। আজ সরকারীভাবে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ও প্যাগোডাসহ সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়নে সমান দৃষ্টি দেয়া হচ্ছে। ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’-এই মূলমন্ত্র আজ শান্তি, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি রক্ষায় আমাদের অহংকার।
শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব একটি শিক্ষণীয় ঘটনা। দুষ্কৃতিকারীর বিনাশ, সৎ ব্যক্তিদের পরিত্রাণ ও মঙ্গলময় জীবনের সংগঠনেই জন্মাষ্টমীর তাৎপর্য। হিন্দু শাস্ত্রমতে, আজ থেকে প্রায় ৫হাজার বছর পূর্বে দ্বাপর যুগে এ দিনে এক বৈরী সমাজে দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের উদ্দেশ্যে নিরাকার ব্রক্ষ্ম বাসুদেব ও দেবকীর সন্তান হিসেবে পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ হয়েছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। নানা ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে শ্রীকৃষ্ণ মানবজাতির কাছে জীবন ধারণের অনন্য উদাহরণ রেখে গেছেন। শ্রীকৃষ্ণ যেমন একদিকে বাঁশি হাতে বৃন্দাবনের রাখাল ও অন্যদিকে তেমনি ধর্মযুদ্ধে অর্জুনের সাহায্যদানকারী সারথি। শ্রীকৃষ্ণকে অতি মানব, অবতার যাই বলা হোক না কেন তিনি মানুষ দেহধারী অমিতগুণ ও শক্তির অধিকারী একজন ঐতিহাসিক পুরুষ। তিনি সৎ গৃহস্থ, রাজনীতিক, বীরযোদ্ধা, ধর্মপ্রচারক ও ধর্মসংস্কারক।
ভক্তি, শ্রদ্ধা ও উৎসবমুখর পরিবেশে সারা দেশের ন্যায় রাজবাড়ী জেলার সর্বত্র জেলা প্রশাসনের সহায়তায় হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রাণের ধর্মীয় উৎসব হিসেবে শুভ জন্মাষ্টমী সাড়ম্বরে উদযাপনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। জেলা প্রশাসন তথা সরকারের এ আয়োজন হিন্দু সম্প্রদায়কে আরো আস্থাশীল করেছে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বৃদ্ধি পেয়েছে।
আসুন আমাদের দীর্ঘদিনের লালিত সম্প্রীতির ঐতিহ্য রক্ষায় ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলে একযোগে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও দেশপ্রেমের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত রূপকল্প-২০২১ ও রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে একটি সুখী সমৃদ্ধ উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে আত্মনিয়োগ করি।
আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে শান্তি, সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপনে জন্মাষ্টমী উৎসব বিশেষ ভূমিকা রাখবে এই কামনায় শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আমি হিন্দু ধর্মাবলম্বীসহ রাজবাড়ীবাসীর সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনা করছি।
(মোঃ শওকত আলী)
জেলা প্রশাসক
রাজবাড়ী।