॥কাজী তানভীর মাহমুদ॥ দীর্ঘ প্রায় চার বছর ধরে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চোখের ডাক্তার নেই। ফলে চোখের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে আসা রোগীরা বিনা চিকিৎসায় ফিরে যাচ্ছেন।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের প্রশাসনিক বিভাগের তথ্য মতে, ২০১৪ সালের ৩রা নভেম্বর থেকে হাসপাতালের চোখের চিকিৎসকের পদটি শূন্য রয়েছে। এরপর ৩ বছর ৭মাস পার হলেও মন্ত্রণালয় থেকে আসেননি কোন চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। প্রতি মাসেই সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসকের শূন্য পদের কথা উল্লেখ করে চাহিদা পাঠালেও মেলেনি চক্ষু চিকিৎসক। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ টিকেট কাউন্টারে পোস্টার টানিয়ে দিয়েছে যে, বর্তমানে হাসপাতালে চোখের ডাক্তার নেই। তাই টিকেট কাউন্টার থেকেই ফিরে যাচ্ছেন রোগীরা। বঞ্চিত হচ্ছেন চিকিৎসা সেবা থেকে।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের টিকেট কাউন্টারের সামনে কথা হয় ৫৬বছর বয়সী বৃদ্ধ আব্দুল গফুরের সঙ্গে। তিনি বলেন, চোখের সমস্যা নিয়ে অনেক দিন ধরেই তিনি অসুস্থ। হাসপাতালে এলে বললো চোখের কোন ডাক্তার নেই। আরেক রোগী হালিমা বেগম(৬০) বলেন, চোখের ডাক্তার দেখাতে গ্রাম থেকে নাতির সঙ্গে হাসপাতালে এসেছি। এখন শুনলাম হাসপাতালে চোখের ডাক্তার নেই। মাটিপাড়া এলাকার বৃদ্ধা শরিফুন বিবি(৬০) বলেন, অনেক দিন ধরেই হাসপাতালে আসছি। টিকেট কাউন্টার থেকে বলে চোখের ডাক্তার নাই। হাসপাতালে সব ডাক্তার আছে তো চোখের ডাক্তার নাই কেন?
সদর হাসপাতালের টিকেট কাউন্টারে দায়িত্বরত কম্পাউন্ডার কোরবান হোসেন জানান, প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১শ রোগী চোখের ডাক্তারের টিকেট চান। হাসপাতালে চোখের ডাক্তার নেই কয়েক বছর ধরে। তাই আমরা চোখের ডাক্তারের টিকেট বিক্রি করি না। রোগীদের জানাতে পোস্টার লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন চোখের ডাক্তার দেখাতে আসা অনেক রোগী ফিরে যান।
হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ ওবায়দুর রহমান জানান, ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসের ৩ তারিখ থেকে হাসপাতালের চোখের চিকিৎসকের পদটি শূন্য রয়েছে। প্রতি মাসে মন্ত্রণালয়ে শূণ্য পদের জন্য চাহিদা পাঠানো হয়ে থাকে।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ স্বপন কুমার কুন্ডু জানান, প্রতি মাসে নির্দিষ্ট ফরমে সদর হাসপাতালে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্ত্যবরত চিকিৎসক ও শূন্য পদ উল্লেখ করে তালিকা পাঠানো হচ্ছে। মন্ত্রণালয় থেকে চোখের ডাক্তারের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হলেই হাসপাতালে চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আসবে।
রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ রহিম বক্স জানান, হাসপাতালের শূন্য পদগুলোর জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর নিয়মিত চাহিদা পত্র পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু কোন সুরাহা পাচ্ছি না। হাসপাতালে অতি দ্রুত একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রয়োজন।