শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০২:৩৩ অপরাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

এসএসসি পরীক্ষাতে জিপিএ-৫ পাওয়া দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সুবর্ণা বিসিএস কর্মকর্তা হতে চায়

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৮ মে, ২০১৮

॥কাজী তানভীর মাহমুদ॥ জন্মের দুই মাস পরেই মারা যায় বাবা। ভিটে-বাড়ীহীন অসহায় হতদরিদ্র মায়ের পরম মমতায় একে একে ১৬টি বছর পার করে এসে আজ সফলতা অর্জন। তবুও একমুঠো ভাতের চিন্তায় রাতের ঘুম আসাই দায়। এত কিছুর পর আবার জন্মগতভাবে দুটি চোখের দৃষ্টি নেই বলে নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যেই বড় হতে হয়েছে। নানাবিধ সমস্যা আর দারিদ্রতার সাথে যুদ্ধ করে বেড়ে ওঠা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সুবর্ণা রাণী দাস এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে।
তার এই অভাবনীয় সাফল্য দেখে খুশি সুবর্ণার মা কণিকা রানী দাসসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ। সুবর্ণা রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নের হরিণধরা গ্রামের মৃত সুভাষ চন্দ্র দাসের মেয়ে। লেখাপড়ার পাশাপাশি সুবর্ণা সমানতালে দক্ষ কবিতা আবৃত্তি আর গানে। তার এই প্রতিভার কথা জেলার অনেকেরই জানা। চলতি বছরের দাদা ভাই শিশু কিশোর প্রতিযোগিতায় উপজেলা এবং জেলা পর্যায়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছে সে। সুবর্ণা রাণী দাস রাজবাড়ী শহরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইয়াছিন উচ্চ বিদ্যালয়ের অন্ধ শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় মানবিক বিভাগ হতে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ ধাপটি সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হয়ে ভবিষ্যতের দিনগুলো নিয়ে আজ বেশ চিন্তিত সুবর্ণা ও তার মা।
সুবর্ণা রাণী দাসের সাথে আলাপকালে সে জানায়, রাজবাড়ী জেলার একটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চাই। ভালো করে লেখাপড়া শেষে করে একজন বিসিএস কর্মকর্তা হব। উচ্চ শিক্ষিত হয়ে দেশ ও মায়ের জন্য কিছু করব। আমার মা অনেক কষ্ট করে আমাকে এই পর্যন্ত এনেছে। সে আর পারছে না। আমার বাবা নেই। পরিবারে নেই কোন উপর্জনক্ষম ব্যক্তি। সরকারের কাছে আকুল আবেদন, আমি পড়তে চাই। মানুষের মত মানুষ হতে চাই। নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই’।
সুবর্ণার মা কণিকা রাণী দাস বলেন, সুবর্ণার জন্মের দুই মাস পরেই তার বাবা সুভাষ চন্দ্র দাস মারা যান। তারপর থেকে আমি মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে বেঁচে আছি। আমার মেয়েটি লেখাপড়ায় অনেক ভালো। সে ভালো রেজাল্ট করেছে। মেয়েটির লেখাপড়া চালিয়ে যেতে সরকার ও সমাজের হৃদয়বান ব্যক্তিদের সহযোগিতা কামনা করছি।
ইয়াছিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সাইদা খানম বলেন, বিদ্যালয়ের অন্ধ শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় শিক্ষক বোরহানের কাছে সুবর্ণা ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত ব্রেইল পদ্ধতিতে লেখাপড়া করেছে। এবারের এসএসসি পরীক্ষায় সে রাইটারের মাধ্যমে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। গত ৬ই মে পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর দেখা যায়, সে জিপিএ-৫ পেয়েছে। তার এই সাফল্যে বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা অনেক খুশি হয়েছেন। সুবর্ণা জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ আশা করেও ৪.৫০ পেয়েছিল। তারপর সে এসএসসি’তে জিপিএ-৫ পেতে কঠিন অধ্যবসায়ের মাধ্যমে কাঙ্খিত ফল অর্জন করেছে। সে লেখাপড়ার পাশাপাশি কবিতা আবৃত্তি ও গানেও পারদর্শী। পড়ালেখার সাথে সাথে সহশিক্ষা কার্যক্রমেও সে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে চলেছে। সে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে চায়। বড় হয়ে সে বিসিএস কর্মকর্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখে। তার এই স্বপ্ন পূরণে আমরা দোয়া করি। তার সার্বিক মঙ্গল কামনা করি।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!