॥আবুল হোসেন॥ মাদকসক্ত ছেলের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে গতকাল বুধবার সকালে যুবক রাতুল শেখ (২৮)কে পুলিশে সোপর্দ করেছে তার পরিবার।
সে রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের কিয়ামদ্দিন মোল্যা পাড়ার মান্নান শেখের ছেলে। নেশার টাকা হাতে না পেলে স্ত্রীকে মারধর ও বাড়ি-ঘর ভাংচুর করতো। তার অত্যাচর সহ্য করতে না পেরে পরিবার গতকাল বুধবার সকালে পুলিশে দেয়।
থানা পুলিশ ও রাতুলের পরিবার জানায়, পরিবারের দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে রাতুল শেখ সবার বড়। সঙ্গদোষে রাতুল ইয়াবার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। দিন দিন ইয়াবা সেবন বেড়ে গেলে রাতুলের অত্যাচার বেড়ে যায়। প্রতিদিন নেশার জন্য টাকা দিতে হয়। না দিলেই ঘরের জিনিসপত্র ভাংচুর শুরু করে। নেশার জগত থেকে ফেরাতে প্রায় ৪বছর আগে পরিবার বিয়ে দেয়। ঘরে আড়াই বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। তাতেও কোন পরিবর্তন না হয়ে উল্টো নেশার জন্য স্ত্রী ও একমাত্র শিশু সন্তানকে জিম্মি করে মা-বাবার কাছ থেকে টাকা আদায় করে। গত রমজান মাসের আগে ঋন করে পরিবার থেকে একটি ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা কিনে দেয় তাকে। কিন্তু প্রতিদিনের নেশার টাকা জোগাড় হলেই অটোরিক্সা চালানো বাদ দিয়ে নেশায় মত্ত হয়ে উঠে। গত ৪/৫দিন আগে অটোরিক্সাটি তার থেকে নিয়ে অন্যত্র ভাড়া দেয় পরিবার। এখন বাড়তি আয় বন্ধ হওয়ায় রাতুল নেশার টাকা জোগাড় করতে প্রতিদিন ঘরে ফিরে স্ত্রীকে মারধর করে। এমনকি নিজের শিশু সন্তানকে জিম্মি করে মায়ের কাছ থেকে টাকা আদায় করে।
রাতুলের মা এলিনা মান্নান জানান, রাতুলেল অত্যাচারে গত মঙ্গলবার তার স্ত্রী বাবার বাড়ি গেছে। উপায় না পেয়ে রাতুল সন্ধ্যার পর ঘরে প্রবেশ করলেই কৌশলে বাইরে থেকে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। এরপর গতকাল বুধবার সকালে সংবাদ দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। গত এক মাসে অন্তত ৩০ হাজার টাকা নেশার পিছনে নষ্ট করেছে। এখন ভাবছি কষ্ট হলেও দুই-আড়াই বছর জেলে থাকুক।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মির্জা আবুল কালাম আজাদ জানান, পরিবারের সহযোগিতায় নিজ বাড়ি থেকে গতকাল বুধবার সকালে রাতুলকে আটক করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে ২১টি ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করে দুপুরে রাজবাড়ীর আদালতে পাঠানো হয়েছে।