॥ফরিদ মোল্লা/মনির হোসেন॥ রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলার মৃগী ইউপির গাং বথুমদিয়া গ্রামে গরুতে ক্ষেতের ঘাষ খাওয়াকে কেন্দ্র করে গত ২১শে জুন সকাল ৯টার দিকে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসী হামলায় মৃগী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান বদর উদ্দিন সরদারের ভাই-ভাতিজাসহ ৫জন গুরুতর আহত হয়েছে।
আহতদের মধ্যে ৩জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ বাংলাদেশ কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকীর আপন ২সহোদরসহ মোট ৪জনকে গ্রেফতার করেছে।
এ ঘটনায় গত ২২শে জুন মৃগী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ বদর উদ্দিন সরদার বাদী হয়ে ১১জনের নাম উল্লেখ করাসহ অজ্ঞাত ৭/৮জনকে আসামী করে কালুখালী থানায় মামলা করেছেন। কালুখালী থানার মামলা নং-৭, ধারাঃ ১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩০৭/৫০৬(২)/১১৪ পেনাল কোর্ড।
মামলার আসামীরা হলো ঃ গাং বথুমদিয়া গ্রামের মৃত আমজাদ সরদারের ছেলে তুহিন সরদার(৪০), মৃত আকবর আলী সরদারের ছেলে শফিক সরদার(৪৫), মৃত ভোলাই শেখের ছেলে আলিম শেখ(৫৬), খলিল শেখের ছেলে সুমন শেখ(৪২), শাওন শেখ(৩৬), মৃত ভোলাই শেখের ছেলে খলিল শেখ(৬৫), রফিক সরদারের ছেলে রাব্বী সরদার(২৬), রকিবুল সরদার(২২), মৃত আকবর আলী সরদারের ছেলে রফিক সরদার(৫৫), মৃত আমজাদ সরদারের ছেলে শাহিন সরদার(৪৫) ও কোরবান মন্ডলের ছেলে মিজানুর মন্ডল (৪৫)সহ অজ্ঞাত ৭/৮জন।
মামলা সুত্রে জানাযায়, মৃগী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান বদর উদ্দিন সরদারের চাচাতো ভাই হায়দার সরদারের একটি বাছুর গরু গত ২০শে জুন দুপুর ১২টার দিকে বাড়ীর পাশে রফিক সরদারের জমিতে লাগানো ঘাস খায়। এ নিয়ে রফিক সরদারের ছেলে রাব্বি সরদারের সাথে হায়দার সরদারের তর্কবিতর্ক হয়। তর্কবিতর্ক ঘটনার জের ধরে পরদিন গত ২১শে জুন সকাল ৯টার দিকে প্রতিপক্ষের রফিক সরদারের লোকজন জোটবদ্ধ হয়ে হকিস্টিক, লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সাবেক চেয়ারম্যান বদর উদ্দিন সরদারের বাড়ীর সামনে রাস্তার উপর তার ভাতিজা সজীব সরদারের উপর হামলা চালায়। হামলা-মারধরের ফলে সজীব সরদারের বাম হাত ভাঙ্গাসহ ঘার, পিঠ, কানসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। সজীব সরদার হামলাকারীদলের কবল থেকে ছুটে দৌড়ে নিজ বসত ঘরে গিয়ে পালায়। এ সময় হামলাকারীরা সজীব সরদারের পিছু ধাওয়া করে বাড়ীর ওঠানে গিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করাসহ নানা হুমকী প্রদর্শন করলে সদর উদ্দিন সরদার ও সজীব সরদারের দাদী হাজেরা খাতুন নিষেধ করলে তারা ইটপাটকেল ছুড়ে ও কুপিয়ে তাদেরকে জখম করে। তাদেরকে উদ্ধার করতে গেলে আহাদ সরদার, লাল্টু সরদার ও আহসান সরদার কমবেশী আহত হয়।
এ ঘটনার পর আহতদের মধ্যে সজীব, সদর আলী ও খাদিজাকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে আনা হয়। তবে তাদের অবস্থার অবনতি দেখে তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। বর্তমানে তারা সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
কালুখালী থানার এস.আই ননী গোপাল সরকার জানান, থানায় মামলা রেকর্ডের পর গত ২২শে জুন রাতেই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে এজাহারভূক্ত আসামী তুহিন সরদার(৪০), শাহিন সরদার(৪৫), রফিক সরদার(৫৫) ও রাকিবুল সরদার (২২)কে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল ২৩শে জুন আসামীদের আদালতে পাঠানো হলে বিজ্ঞ আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছে। এ ঘটনার পর এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
উল্লেখ্য, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে তুহিন সরদার ও শাহিন সরদার বাংলাদেশ কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকীর আপন সহোদর।
গ্রেফতারকৃত তুহিন সরদার ও শাহিন সরদার দাবী করেন, তাদেরকে এ মামলায় ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে আসামী করার মাধ্যমে গ্রেফতার করা হয়েছে।