॥ইউসুফ মিয়া॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলীপুরে আপন ভাবীকে ধর্ষণ ও ধর্ষণের দৃশ্য মুঠোফোনে ধারণের পর ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় গ্রেফতারকৃত দেবর সোহেল শেখ ওরফে রিয়াজুল শেখ(২৬) এর ৫দিনের রিমান্ড শুনানী আজ ৯ই ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত হবে। সোহেল শেখ বর্তমানে জেল হাজতে আটক রয়েছে। সে আলীপুর গ্রামের মৃত কাশেম শেখের ছেলে।
জানাগেছে, ২০১২ সালে সোহেল শেখের ভাই প্রবাসী জাকির শেখের সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ওই গৃহবধুর বিয়ে হয়। বিয়ের দেড় বছর পর জাকির বিদেশ থেকে বাড়ীতে আসে। ৪মাস দেশে থাকার পর আবার সে বিদেশে চলে যায়। স্বামী বিদেশ চলে যাওয়ার পর থেকে সে ওই বাড়ীতেই থাকতো। গত ১৬ই সেপ্টেম্বর দুপুর ২টার দিকে নিজ শয়ন কক্ষে থাকাকালে তার দেবর সোহেল তাকে মুখ চেপে ধরে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। এরপর থেকে সোহেল তার সাথে বিভিন্ন সময়ে দৈহিক মেলামেশা করে আসছিল। এর ফাঁকে সোহেল তার সহযোগীদের দিয়ে কৌশলে ওই দৈহিক মেলামেশার চিত্র মোবাইলে ধারণ করে। বিষয়টি টের পেয়ে গৃহবধু সোহেলের পরিবারকে জানায়। কিন্তু তারা কর্ণপাত না করায় গত বছরের ১লা ডিসেম্বর সে তার পিতার বাড়ীতে চলে যায়। এক পর্যায়ে সোহেল সেই ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।
এ ঘটনায় ওই গৃহবধু বাদী হয়ে গত ২৬শে জানুয়ারী রাজবাড়ী থানায় সোহেলকে আসামী করে মামলা দায়ের করে। রাজবাড়ী থানার মামলা নং-৪৬, ত্ং-২৬/১/২০১৭, ধারাঃ ২০১২ সালের পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ৮(১)/৮(২) তৎসহ ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী/০৩) এর ৯(১)/৩০। মামলায় অজ্ঞাত আরো ২/৩জনকে আসামী করা হয়। পুলিশ ওইদিনই রাতে সোহেলকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর তার পকেটে থাকা মানিব্যাগের ভিতর থেকে ধর্ষণের ভিডিও ধারণকৃত ১টি মেমোরী কার্ড উদ্ধার করা হয়। সে তার কাছে আরো একাধিক ভিডিও চিত্র আছে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করে। ওই ঘটনায় তাকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ পরদিন ২৭শে জানুয়ারী তাকে আদালতে সোপর্দ করলে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রাজবাড়ী সদর থানার এসআই জাহিদুল ইসলাম জানান, সোহেল শেখ তার ভাবীকে ধর্ষণের ভিডিওচিত্র নেটের মাধ্যমে প্রচার করে এবং এলাকার বিভিন্ন জনকে দেখায়। তাকে গ্রেফতারের পর তার মানিব্যাগে ভাবীকে ধর্ষণের একটি ভিডিওচিত্রের মেমোরীকার্ড পাওয়া যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ধর্ষণের কথা স্বীকার করলেও সহযোগীদের নাম-ঠিকানা প্রকাশ করেনি। এজন্য তাকে একান্তে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা গেলে ধর্ষণের আরো ভিডিওচিত্র পাওয়া যেতে পারে। সে জন্যই তার ৫দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়।