॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ী থেকে প্রকাশিত দৈনিক রাজবাড়ী কণ্ঠ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক খান মোহাম্মদ জহুরুল হক(৪৬) এবং বার্তা সম্পাদক ও স্টাফ রিপোর্টার জাহাঙ্গীর হোসেন(৪০) এর বিরুদ্ধে রাজবাড়ীর ২নং আমলী আদালতে দুই কোটি টাকার মানহানী মামলা দায়ের হয়েছে।
মিথ্যা বানোয়াট, ষড়যন্ত্রমূলক এবং মানহানীকর সংবাদ প্রকাশের অভিযোগে গতকাল ১২ই নভেম্বর রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আতিউর রহমান নবাব বাদী হয়ে রাজবাড়ীর ২নং আমলী আদালতে দঃ বিঃ’র ৫০০/৫০১/৫০২ ধারায় মামলাটি দায়ের করেন। আদালতের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আরিফুজ্জামান মামলটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য কালুখালী থানার ওসিকে আদেশ দিয়েছেন। মিস.পি মামলা নং-৩১১/২০১৭।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত ৮ই নভেম্বর দৈনিক রাজবাড়ী কণ্ঠের প্রথম পাতায় “একই দিনে ৪শ ৫০ মেঃ টন চালের ছাড়পত্র প্রদান-কালিকাপুরে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের নামে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে ১ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকার চাল হরিলুট’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়। চেয়ারম্যান মোঃ আতিউর রহমান নবাবের শত্রƒপক্ষীয় লোকের দ্বারা বেআইনী বাধ্য বশীভূত হয়ে অপসাংবাদিকতা ও হলুদ সাংবাদিকতার আশ্রয়ে তার মান-সম্মানহানীর উদ্দেশ্যে উল্লেখিত মিথ্যা ও মানহানীকর সংবাদটি প্রকাশ করা হয়। পত্রিকায় খবরটি প্রকাশের পর পত্রিকার হকার কালিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদসহ কালুখালী ও পাংশা উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে জনসম্মুখে হকারের মাধ্যমে চেয়ারম্যান মোঃ আতিউর রহমান নবাবের নামে বিভিন্ন মানহানীকর চটকদার কথা উচ্চারণপূর্বক পত্রিকার কপি বিক্রি করে তাকে সামাজিক, রাজনৈতিক ও মানসিকভাবে মারাত্মকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়।
মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়, সরকারী জি,আর প্রকল্প বাস্তবায়ন হয় প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির(পিআইসি) মাধ্যমে এবং উক্ত প্রকল্প গুলির ছাড়পত্র প্রদান করেন সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং তদারকির দায়িত্বে থাকেন সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হিসাবে আমার শুধুমাত্র প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি গঠন সঠিকতার বিষয়ে মন্তব্য করার দায়িত্ব থাকে।
এ ঘটনার পরদিন ৯ই নভেম্বর চেয়ারম্যান মোঃ আতিউর রহমান নবাব ডাকযোগে পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক বরাবর লিখিত প্রতিবাদ লিপি প্রদান করে তা প্রকাশের জন্য অনুরোধ জানান। তা স্বত্ত্বেও প্রতিবাদলিপিটি প্রকাশ করা হয়নি।
মামলায় বলা হয়, মোঃ আতিউর রহমান নবাব কালিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের পরপর ২বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত রয়েছেন। বর্তমানে কালিকাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কালুখালী থানা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার পিতা জীবদ্দশায় সুনামধন্য স্কুল শিক্ষক ছিলেন। ভাই-বোনেরাও সুশিক্ষিত ও সমাজে প্রতিষ্ঠিত। তাদের বিপুল পরিমাণ আবাদী জমি এলাকার দরিদ্র কৃষিজীবী মানুষের জীবিকার উৎস। প্রকাশিত সংবাদটি তার পরিবারের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য ও সুনামকে ভুলুন্ঠিত করেছে। প্রকাশিত সংবাদে চেয়ারম্যান মোঃ আতিউর রহমান ও তার পরিবার রাজনৈতিক, সামাজিক ও মানসিকভাবে ক্ষতি ও হয়রানীর শিকার হয়েছেন উল্লেখ করে সুবিচারের দাবী জানানো হয়। বিজ্ঞ আদালত আগামী ৭ই জানুয়ারী-২০১৮ তারিখ মামলাটির পরবর্তী তারিখ ধার্য্য করেছে।
আদালতে বাদী মোঃ আতিউর রহমান নবাবের পক্ষে এডঃ এএনএম শাহিদুল ইসলাম এবং এডঃ মোঃ রফিকুল ইসলাম মামলা পরিচালনা করেন।
এদিকে গতকাল রবিবার বিকেলে নিজের “নবাব চেয়ারম্যান” নামক ফেসবুক স্ট্যাটর্সে চেয়ারম্যান মোঃ আতিউর রহমান নবাব উল্লেখ করেন, স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের মিথ্যা অপপ্রচারের বিরুদ্ধে আজ কোর্টে আইনের আশ্রয় নিলাম। আমাকে এবং আমার পরিবারকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেয়-সম্মানহানী করার উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের মুখপত্র ৯০ দশকের সেই ছাত্র শিবির নেতার সম্পাদিত দৈনিক রাজবাড়ী কণ্ঠ পত্রিকায় গত ০৮/১১/২০১৭ইং তারিখে সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট, ষড়যন্ত্রমূলক, মানহানীকর এবং অসম্মানজনক সংবাদ পরিবেশন করায় আমি উক্ত পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক সাবেক শিবিরের নেতা এবং সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আজ ১২ই নভেম্বর রাজবাড়ীর আদালতে মামলা দায়ের করেছি। এ ব্যাপারে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।