বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩৩ পূর্বাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

আফিফ-নুরুলের জুটিতে ডাবল লিড বাংলাদেশের

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৫ আগস্ট, ২০২১

১২২ রানের সহজ টার্গেটে খেলতে নেমে ৬৭ রানে পঞ্চম উইকেট হারিয়েছিলো বাংলাদেশ। ফলে ৫ উইকেট হাতে নিয়ে শেষ ৫১ বলে ৫৫ রান দরকার ছিলো টাইগারদের। ঐ অবস্থায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টুয়েন্টিতে জয় নিয়ে চিন্তায় পড়ে বাংলাদেশ।
কিন্তু ষষ্ঠ উইকেটে ৪৪ বলে অনবদ্য ৫৬ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে দুর্দান্ত এক জয় এনে দেন আফিফ হোসেন ও নুরুল হাসান সোহান। তাদের জুটির কল্যাণেই ৮ বল বাকী রেখে দ্বিতীয় টি-টুয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারায় বাংলাদেশ। এতে পাঁচ ম্যাচের টি-টুয়েন্টি সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল মাহমুদুল্লাহর দল। আফিফ ৩৭ ও নুরুল ২২ রানে অপরাজিত থাকেন ।
এ ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১২১ রান করে অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ১৮ দশমিক ৪ ওভারে ৫ উইকেটে ১২৩ রান করে ম্যাচ জিতে নেয় টাইগাররা।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচে সমতা আনার লক্ষ্যে টস জিতে এবার প্রথমে ব্যাট করার সিদ্বান্ত নেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড। এ ম্যাচেও ব্যাট হাতে সুবিধা করতে পারেননি অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার জশ ফিলিপ ও অ্যালেক্স ক্যারি। ৫ দশমিক ৪ ওভারে ৩১ রানের মধ্যে বিদায় নেন এই দুই ওপেনার।
তৃতীয় ওভারে দলীয় ১৩ রানে ক্যারিকে বিদায় দেন অফ-স্পিনার মাহেদি হাসান। নাসুম আহমেদকে ক্যাচ দেয়ার আগে ১১ রান করেন ক্যারি। গতকাল প্রথম ম্যাচে ইনিংসের প্রথম বলেই ক্যারিকে বোল্ড করেছিলেন মাহেদি।
ফিলিপকে ১০ রানের বেশি করতে দেননি বাংলাদেশের কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান। তাকে বোল্ড করেন ফিজ।
দুই ওপেনারের বিদায়ের পর দলের হাল ধরেন মিচেল মার্শ ও মইসেস হেনরিক্স। শুরুতে সর্তকার সাথে খেললেও, পরবর্তীতে রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেন তারা। ১৪তম ওভারে অস্ট্রেলিয়ার রান রেট ৬ এর উপর নিতে পারেন মার্শ ও হেনরিক্স। তার আগ পর্যন্ত ৬ এর নিচেই ছিলো।
তবে ১৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে দলীয় ৮৮ রানে এই জুটিতে ভাঙ্গন ধরান বাংলাদেশের সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৫ বলে ৩০ রান করা হেনরিক্সকে বোল্ড করেন সাকিব। তৃতীয় উইকেটে মার্শের সাথে ৫২ বলে ৫৭ রান করেন হেনরিক্স।
দলীয় রান তিন অংকে পৌঁছানোর আগে থেমে যায় মার্শের ইনিংসও। বাঁ-হাতি পেসার শরিফুলের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন মার্শ। ৫টি চারে ৪২ বলে ৪৫ রান করেন মার্শ। তখন অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ৯৯ রান। ইনিংসের ২৩ বল বাকী ছিলো।
এরপর ১৮তম ওভারের তৃতীয় ও চতুর্থ বলে যথাক্রমে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড ও অ্যাস্টন আগারকে শিকার করেন মুস্তাফিজ। ওয়েড ৪ ও আগার শুন্য রানে ফিরেন। হ্যাট্টিকের সুযোগ তৈরি হলেও, ওয়াইড দিয়ে সুযোগ হারান ফিজ। নিজের তৃতীয় ওভারে মাত্র ৩ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন তিনি।
পরের ওভারে ৩ রান করা  আ্যাস্টন টার্নারকে আউট করে   অস্ট্রেলিয়ার সপ্তম ও নিজের দ্বিতীয় উইকেট শিকার করেন শরিফুল।
শেষ দিকে দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান মিচেল স্টার্কের ১৩ ও এন্ড্রু টাইয়ের ৩ রানের সুবাদে ১২১ রানের সংগ্রহ পায় অস্ট্রেলিয়া।
বাংলাদেশের মুস্তাফিজ ২৩ রানে ৩ উইকেট নেন। শরিফুল ২টি, মাহেদি-সাকিব ১টি করে উইকেট নেন।
সিরিজে ডাবল লিড নিতে ১২২ রানের সহজ টার্গেটের জবাবটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ২১ রানের মধ্যে প্যাভিলিয়নে ফিরেন দুই ওপেনার মোহাম্মদ নাইম ও সৌম্য সরকার। তৃতীয় ওভারে সৌম্যকে খালি হাতে ফেরান অস্ট্রেলিয়ার পেসার স্টার্ক। পরের ওভারে নাইমকে থামান অস্ট্রেলিয়ার আরেক পেসার জশ হ্যাজেলউড। ৯ রান করেন নাইম। দুই ওপেনারই বোল্ড হন।
এরপর মাহেদি হাসানকে নিয়ে শুরুর ধাক্কা সামলে উঠার চেষ্টা করেন তিন নম্বরে নামা সাকিব আল হাসান। মারমুখী মেজাজে না থাকলেও, দলের রানের চাকা সচল রেখেছিলেন সাকিব-মাহেদি। অষ্টম ওভারে অস্ট্রেলিয়ার স্পিনার এডাম জাম্পাকে লং-অফ দিয়ে ছক্কা মেরে দলের স্কোর ৫০এ নেন ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পাওয়া মাহেদি।
তবে পরের ওভারে ভাঙ্গে সাকিব-মাহেদি জুটি। ৪টি চারে ১৭ বলে ২৬ রান করা সাকিবকে বোল্ড করেন অস্ট্রেলিয়ার মিডিয়াম পেসার এন্ড্রু টাই। তৃতীয় উইকেট সাকিব-মাহেদি জুটি ৩২ বলে ৩৭ রান করেন।
সাকিবের আউটে বিপদ বিপদেই পড়ে বাংলাদেশ। এরপর দ্রুতই প্যাভিলিয়নে ফিরেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মাহেদি। রানের খাতা খোলার আগেই মাহমুদুল্লাহকে শিকার করেন স্পিনার অ্যাস্টন আগার। ১টি ছক্কায় ২৪ বলে ২৩ রান করা মাহেদিকে থামান জাম্পা।
১১ দশমিক ২ ওভারে দলীয় ৬৭ রানে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন মাহেদি। ঐ সময় ৫১ বলে ৫৫ রান দরকার ছিলো বাংলাদেশের।
এ অবস্থায় জুটি বাঁধেন আফিফ হোসেন ও নুরুল হাসান। দেখেশুনে খেলার পাশাপাশি দ্রুত রানও তুলেছেন তারা। ১৩তম ওভারে ১১, ১৬ ওভারে ১৩ রান তুলে শেষ ৪ ওভারে জয়ের সমীকরণ ১৯ রানে নামিয়ে আনেন আফিফ-নুরুল।
বাকী ১৯ রান তুলতে ১৬ বল খরচ করেন আফিফ ও নুরুল। ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩১ বলে অপরাজিত ৩৭ রান করেন আফিফ। ৩টি চারে ২১ বলে ২২ রানে অপরাজিত থাকেন নুরুল।
আগামী ৬ আগস্ট একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের তৃতীয় টি-টুয়েন্টি।
স্কোর কার্ড :
অস্ট্রেলিয়া ইনিংস :
অ্যালেক্স ক্যারি বোল্ড ব মুস্তাফিজ ১০
জশ ফিলিপ ক নাসুম ব মাহেদি ১১
মিচেল মার্শ ক নুরুল ব শরিফুল ৪৫
মইসেস হেনরিক্স বোল্ড ব সাকিব ৩০
ম্যাথু ওয়েড বোল্ড ব মুস্তাফিজ ৪
অ্যাস্টন টার্নার ক মাহমুদুল্লাহ ব শরিফুল ৩
অ্যাস্টন আগার ক নুরুল ব মুস্তাফিজ ০
মিচেল স্টার্ক অপরাজিত ১৩
এন্ড্র টাই অপরাজিত ৩
অতিরিক্ত (লে বা-১, ও-১) ২
মোট (২০ ওভার, ৭ উইকেট) ১২১
উইকেট পতন : ১/১৩ (ক্যারি), ২/৩১ (ফিলিপ), ৩/৮৮ (হেনরিক্স), ৪/৯৯ (মার্শ), ৫/১০৩ (ওয়েড), ৬/১০৩ (আগার), ৭/১০৬ (টার্নার)।
বাংলাদেশ বোলিং :
মাহেদি হাসান : ৩-০-১২-১,
নাসুম আহমেদ : ৪-০-২৯-০,
সাকিব আল হাসান : ৪-০-২২-১,
মুস্তাফিজুর রহমান : ৪-০-২৩-৩ (ও-১),
শরিফুল ইসলাম : ৪-০-২৭-২,
সৌম্য সরকার : ১-০-৭-০।
বাংলাদেশ ইনিংস :
মোহাম্মদ নাইম বোল্ড ব হ্যাজেলউড ৯
সৌম্য সরকার বোল্ড ব স্টার্ক ০
সাকিব আল হাসান বোল্ড ব টাই ২৬
মাহেদি হাসান স্টাম্প ওয়েড ব জাম্পা ২৩
মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ বোল্ড ব আগার ০
আফিফ হোসেন অপরাজিত ৩৭
নুরুল হাসান অপরাজিত ২২
অতিরিক্ত (ও-৬) ৬
মোট (২০ ওভার, ৭ উইকেট) ১৩১
উইকেট পতন : ১/৯ (সৌম্য), ২/২১ (নাইম), ৩/৫৮ (সাকিব), ৪/৫৯ (মাহমুদুল্লাহ), ৫/৬৭ (মাহেদি)।
অস্ট্রেলিয়া বোলিং :
মিচেল স্টার্ক : ৩-০-২৮-১ (ও-২),
জশ হ্যাজেলউড : ৩.৪-০-২১-১ (ও-১),
অ্যাস্টন আগার : ৪-০-১৭-১,
এডাম জাম্পা : ৪-০-২৪-১ (ও-১),
এন্ড্র টাই : ৩-০-২৭-১ (ও-২),
মিচেল মার্শ : ১-০-৬-০।
ফল : বাংলাদেশ ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : আফিফ হোসেন(বাংলাদেশ)।
সিরিজ : পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!