॥স্টাফ রিপোর্টার॥ ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গত ১৪ই অক্টোবর দুপুর দেড়টায় রাজবাড়ী জেলার পাংশা ও কালুখালী উপজেলার স্কুল শিক্ষক আসাদুল বারী খান হত্যা, সাবেক কৃষকলীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মুন্সী নাদের হোসেন হত্যা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রবিউল ইসলাম হত্যা, ইউপি সদস্য শওকত হোসেন হত্যা, ফিরোজ হোসেন হত্যা ও ভ্যান চালক আব্দুর রহিম হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন চলাকালে মানববন্ধনকারী লোকজন ও দায়িত্বরত পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় শাহবাগ থানার এস.আই জাফর বাদী হয়ে ৬জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত ৮/১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
বাংলাদেশ পেনাল কোডের ১৪৩/১৪৭/১৮৬/৩৩২/৩৩৩/৩৫৩/১০৯ ধারায় তিনি বাদী হয়ে গতকাল ১৫ই অক্টোবর শাহবাগ থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ১৪ই অক্টোবর দুপুর দেড়টায় ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের ফুটপাটের উপর বেশ কিছু সংখ্যক মানুষ রাজবাড়ী জেলায় সংঘঠিত স্কুল শিক্ষক আসাদুল বারী খান হত্যা, সাবেক কৃষকলীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মুন্সী নাদের হোসেন হত্যা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রবিউল ইসলাম হত্যা, ইউপি সদস্য শওকত হোসেন হত্যা, ফিরোজ হোসেন হত্যা ও আব্দুর রহিম হত্যার প্রতিবাদে ৬টি ব্যানার নিয়ে মানববন্ধন শুরু করেন। শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই কিছু লোকজন অবৈধ জনতাবদ্ধ হয়ে মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী লোকজনদের মানববন্ধন কর্মসূচী বন্ধ করতে বলেন। মানববন্ধনে অংশ গ্রহণকারী লোকজন মানববন্ধন বন্ধ না করতে চাইলে তারা হঠাৎ মানববন্ধনকারী লোকজনদের উপর মারমুখি আচরণ করে ব্যানার টেনে হিঁচড়ে ছিঁড়ে ফেলে। তখন প্রেসক্লাবে দায়িত্বরত এস.আই জাফরসহ পুলিশ ফোর্স সেখানে গিয়ে মানববন্ধনে বাঁধা প্রদানকারীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলে তারা পুলিশের সাথেও দুর্ব্যবহার ও মারমুখী আচরণ করে। তাদেরকে বার বার নিবৃত্ত করার এক পর্যায়ে তারা আকস্মিক ভাবে পুলিশের উপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে করতে বিভিন্ন দিক দিয়ে চলে যায়। তাদের নিক্ষিপ্ত ইট পাটকেলের আঘাতে পুলিশ কনস্টেবল আশিক মাথায় গুরুতর আঘাত প্রাপ্ত হয় এবং অন্যান্য ফোর্সও সাধারণ জখম হয়। আহত পুলিশ কনস্টেবল আশিকসহ অন্যান্যদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
মামলার এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়, পরবর্তীতে পুলিশ মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী এবং সাক্ষী পাংশার কাচারীপাড়া গ্রামের মৃত নাদের মুন্সীর পুত্র মাহফুজুর রহমান টুটুল, বয়রাট গ্রামের বিএম এহতেশাম, কালুখালী উপজেলার চরকুলটিয়া গ্রামের তোফাজ্জেল হোসেন এবং মোহনপুর গ্রামের রাকিবুজ্জামান খানের সাথে কথা বলে পুলিশের উপর ইট পাটকেল নিক্ষেপের মাধ্যমে আক্রমনকারী আসামী মিজানুর রহমান মজনু(৪৫), মনোয়ার হোসেন জনি(৩৫), সাহেদ আলী(২৮), মাশুক মন্ডল(২৮), শিশিল খন্দকার(২৮) এবং নয়ন মিয়া(৩৫) এর নাম ও ঠিকানা পাওয়া যায়। উক্ত ব্যক্তিরা ছাড়াও অজ্ঞাতনামা ৮/১০ জন পুলিশের উপর ইট পাটকেলের মাধ্যমে হামলায় অংশগ্রহণ করে।
উল্লেখ্য, মামলার এজাহারনামীয় ৬জন আসামীর মধ্যে মিজানুর রহমান মজনু(৪৫) কালুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য, মনোয়ার হোসেন জনি(৩৫) পাংশা হাসপাতালের কর্মচারী, সাহেদ আলী(২৮) পাংশার নারায়নপুর গ্রামের, মাশুক মন্ডল(২৮) পাংশার বিলজালিয়া গ্রামের, শিশিল খন্দকার(২৮) পাংশা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খোন্দকার সাইফুল ইসলাম বুড়োর পুত্র এবং নয়ন মিয়া(৩৫) পাংশার নারায়নপুর গ্রামের বাসিন্দা।
শাহবাগ থানার এস.আই মোঃ আব্বাস আলী এ মামলাটি তদন্ত করছেন। এ খবর লেখা পর্যন্ত কোন আসামী গ্রেফতার হয়নি।
এ ব্যাপারে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও এজাহারভূক্ত কয়েকজন আসামীর মোবাইল বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।