সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ০৭:৩৯ পূর্বাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

রাজবাড়ীতে পুলিশে চাকুরী দেয়ার কথা সাড়ে ৭লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ায় এক প্রতারকের বিরুদ্ধে মামলা

  • আপডেট সময় শনিবার, ২৪ জুন, ২০১৭

॥শিহাবুর রহমান॥ রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার সালমা বেগম ও সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল আহম্মেদের পরিচয় দিয়ে পুলিশে চাকুরী দেয়ার কথা বলে প্রায় সাড়ে ৭লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ায় ওবাইদুর রহমান(৩২) নামে এক প্রতারকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
গত ২২শে জুন পাংশা উপজেলার যশাই ইউনিয়নের উদয়পুর গ্রামের মৃত গনিরুদ্দিন মন্ডলের ছেলে ওমর আলী মন্ডল(৫৫) বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাত আরো ১জনকে আসামী করা হয়েছে। প্রতারক ওবাইদুর রহমান গোপালঞ্জ জেলার সদরের সুখতাইল ইউনিয়নের চন্দ্রদিঘলীয়া গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে।
মামলার বাদী যশাই ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ ওমর আলী মন্ডল জানান, তার ছেলে আরিফুল ইসলাম(২০) পাংশা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে বিএ অনার্স প্রথম বর্ষে অধ্যায়নরত রয়েছে। ২০১৬ সালের ২৮শে সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে কনষ্টেবল পদে চাকুরীর জন্য রাজবাড়ী পুলিশ লাইনে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেয়। শারীরিক, লিখিত ও ভাইবা পরীক্ষাতেও সে টিকে থাকে। কিন্তু চুড়ান্তভাবে মনোনীত হয়নি। ২০১৭ সালের ১৭ই এপ্রিল রাজবাড়ী পুলিশ লাইনে পুনরায় নিয়োগ পরীক্ষার আনুমানিক ১৫/১৬ দিন আগে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি ০১৭৩২১০৪২১১ মোবাইল নম্বর থেকে আমার ছেলে আরিফুলের মোবাইলে ফোন করে নিজেকে এডিশনাল এসপি তোফায়েল আহম্মেদ বলে পরিচয় দেয়। এরপর সে ২০১৬ সালের নিয়োগ পরীক্ষার গোপনীয় বিষয় যেমন আরিফুলের রোল নম্বর, উচ্চতা, বুকের মাপ, ওজন ইত্যাদি হুবুহু বর্ণনা করেন। তিনি আরো বলেন টাকা না দেয়ায় আরিফুলের চাকুরী হয়নি। এবার কমপক্ষে ৫লাখ টাকা নিয়ে তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি এসপিকে টাকা দিয়ে আরিফুলের চাকুরীর ব্যবস্থা করবেন। এ বিষয় নিয়ে তার সাথে আরিফুল ও আমার একাধিক বার মোবাইলে কথা হয়। এক পর্যায়ে তার কথায় বিশ্বাস করে গত ১৬ই এপ্রিল দুপুরে রাজবাড়ী সার্কিট হাউজের সামনে এডিশনাল এসপি পরিচয়দানকারী তোফায়েল আহম্মেদ ও তার বডিগার্ড পরিচয়দানকারী এক ব্যক্তির সামনে তাকে ৪লাখ টাকা দেয়া হয়। এরপর ওই দিন রাত ১০টার দিকে একজন মহিলাকে দিয়ে এসপি সালমা বেগম পরিচয় দিয়ে তার সাথে কথা বলিয়ে দিয়ে চাকুরীর বিষয়টি আরো নিশ্চিত করে। মোবাইলে এসপি সালমা বেগম পরিচয়কারী মহিলা বলেন ৪লাখ টাকা বুঝিয়া পেয়েছি, বাকী ১লাখ টাকা নিয়োগের পরে দিলেই হবে। আপনাদের আরো যদি প্রার্থী থাকে তাহলে আরো চাকুরী দিতে পারবো। ওই কথিত এসপির কথায় বিশ্বাস করে তিনি তার সুমন্ধির ছেলে সজীবকেও চাকুরীর কথা বলেন। পরদিন ১৭ই এপ্রিল রাজবাড়ী পুলিশ লাইন মাঠে আরিফুল ও সজীব প্রাথমিকভাবে বাছাই পরীক্ষায় অংশ নেয়। সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে তারা মাঠ থেকে বাড়ী যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাইরে এসে মোবাইল ওপেন করলেই এডিশনাল এসপি পরিচয়দানকারী ওই ব্যক্তি ফোন করে জানায় তোমরা দুজনেই প্রাথমিকভাবে উত্তীর্ণ হয়েছো। আরিফুলের রোল নং-২২৩ ও সজীবের রোল নম্বর-২২৫। একই দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিনি সজীব ও আরিফুলের বাকী টাকাসহ আড়াই লাখ টাকা নিয়ে রাজবাড়ী সার্কিট হাউজে উনার সাথে দেখা করতে যান। এ সময় ওই ব্যক্তি একটি প্রাইভেটকার নিয়ে এসে টাকা নিয়ে যান। এরপর ২১শে এপ্রিল ভাইবা পরীক্ষায় তারা দুইজন অংশগ্রহণ করে। ওই দিন রাতেও তিনি আরো ৯০হাজার টাকা তাকে দেন। পরে তাদের দু’জনের চাকুরী না হলে গত ২৫শে এপ্রিল তিনি তার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি টাকা ফেরত দিবেন বলে জানান। এরপর থেকেই তার মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়।
পরে খোঁজ নিয়ে তিনি জানতে পারেন এডিশনাল এসপি তোফায়েল আহম্মেদ রাজবাড়ীতে কর্মরত নেই। পরে তিনি পাংশা পুলিশকে ওই মোবাইল নম্বরটি দেন। ওই নম্বরের কললিষ্টের সুত্র ধরে মোবাইলের রেজিস্ট্রেশন নম্বরে থাকা ছবি থেকে তিনি ওই ব্যক্তিকে সনাক্ত করেন এবং নাম পরিচয় জানতে পারেন।
এ ঘটনায় তিনি গত ২২শে জুন রাজবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন। রাজবাড়ী থানার মামলা নং-৪২, ধারাঃ ১৭০/৪২০/৪০৬/১০৯/৩৪ পেনাল কোর্ড। রাজবাড়ী থানার এস.আই এনছের আলী মামলাটি তদন্ত গ্রহণ করেছেন। তবে প্রতারক ওবাইদুরকে এখনো গ্রেফতার হয়নি।
এ ব্যাপারে রাজবাড়ী থানার ওসি মোঃ আবুল বাশার মিয়া, মামলার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, প্রতারককে গ্রেফতারের জন্য চেষ্টা চলছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!