রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫৮ অপরাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

বিশ্ব মানবতাকে সমুন্নত রাখতে জাতির পিতার সংগ্রাম ও ত্যাগ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে পথ দেখাবে -রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা

  • আপডেট সময় রবিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২০

॥নিউইয়র্ক প্রতিনিধি॥ জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে যথাযোগ্য মর্যাদায় গতকাল ১৫ই আগস্ট সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাত বার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়।
কোভিড-১৯ মহামারির প্রেক্ষিতে নিউইয়র্ক সিটি কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী সামাজিক দূরত্ব মেনে মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় আয়োজন করা হয় জাতীয় শোক দিবসের এ অনুষ্ঠান।
এর আগে স্থায়ী মিশনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার মাধ্যমে জাতির পিতার ৪৫তম শাহাদাত বার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস পালনের কর্মসূচি শুরু করা হয়। এ সময় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতির পিতা, বঙ্গমাতা এবং তাঁদের শহীদ পরিবারবর্গসহ ১৫ই আগস্টের সকল শহীদদের বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে একমিনিট নিরবতা পালন করা হয়। পরে ১৫ই আগস্টের শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
মোনাজাতের পর বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে রক্ষিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পনের মাধ্যমে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমার নেতৃত্বে মিশনের সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ।
এরপর দিবসটি উপলক্ষে দেওয়া রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয় এবং জাতির পিতার জীবন ও কর্মের উপর নির্মিত একটি বিশেষ প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
বিশ্বব্যাপী জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের প্রাক্কালে এবারের জাতীয় শোক দিবসের এ অনুষ্ঠান বিশেষ তাৎপর্য বহন করছে মর্মে স্বাগত ভাষণে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।
তিনি বলেন, জাতির পিতার সংগ্রাম ও ত্যাগ বিশ্ব মানবতাকে সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে পথ দেখাবে। ১৯৭৪ সালের ২৫শে সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রথমবারের মতো দেওয়া জাতির পিতা বাংলায় ভাষণের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, “আজ পৃথিবীর সকল দেশ এজেন্ডা ২০৩০ এর ১৭টি অভীষ্ট লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছে। বঙ্গবন্ধুর ভাষণে আমরা এর অধিকাংশের কথাই খুঁজে পাই”।
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক প্লাটফর্মে দেওয়া জাতির পিতার সেই ভাষণে শিক্ষা, সাম্যতা এবং সম্মানজনক জীবন ও জীবিকার কথা রয়েছে। তিনি জাতীয়তার সীমা পেরিয়ে আন্তর্জাতিকতাকে স্পর্শ করেছেন। তাঁর এই ভাষণে ফুটে উঠেছে বিশ্ব মানবতার আশা আকাঙ্খা। তিনি শান্তির কথা বলেছেন, মানুষের মুক্তির কথা বলেছেন, বহুপাক্ষিকতার কথা বলেছেন, উন্নত বিশ্ব ব্যবস্থার কথা বলেছেন, মানুষের ন্যায় সঙ্গত অধিকারের কথা বলেছেন। এমন ভাষণ কেবল তাঁর মতো একজন বিশ্বনেতার পক্ষেই দেওয়া সম্ভব।
পঁচাত্তরের পনের আগস্টের প্রেক্ষাপটসহ জাতির পিতার জীবন ও কর্ম তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।
প্রবাসে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “জাতির পিতার এ আদর্শ ও দেশপ্রেমের নিরন্তর অনুশীলন প্রয়োজন। জাতির পিতার অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা, মুজিব গ্রাফিক্স নোবেল আজ বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রামাণ্য দলিলে পরিণত হয়েছে। এ সকল বই পড়তে নতুন প্রজন্মকে উৎসাহিত করতে হবে। প্রতিনিয়ত জাতির পিতার জীবন ও আদর্শ চর্চার মাধ্যমেই গড়ে উঠবে দেশপ্রেমিক, উন্নত চিন্তার নতুন প্রজন্ম”।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রূপকল্প ২০২১, রূপকল্প ২০৪১ এবং ডেল্টা পরিকল্পনা ২১০০ বাস্তবায়নে সকলকে আরও নিবেদিত হওয়ার আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা গড়ে তুলব জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা। জাতীয় শোক দিবসে এটাই হোক আমাদের অংগীকার”।
দিবসটি উপলক্ষে বাণী প্রদান করেন ইউনেস্কোর মহাপরিচালক মিজ্ অড্রে অজৌলে। বাণীতে তিনি বলেন, মানুষের অধিকার আদায় ও স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম ও ত্যাগের যে আদর্শ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেখে গেছেন তাঁর শাহাদাতের চার দশক পরেও বিশ্ব তা স্মরণ করছে।
ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছে মর্মে বাণীতে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান অর্ন্তভুক্তিমূলক, ন্যায়সঙ্গত ও গণতান্ত্রিক সমাজের যে স্বপ্ন দেখে তা-ই যেন বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চে দেওয়া ভাষণে উল্লেখ করেছেন যা উইনেস্কোর মেমোরি অফ দ্যা ওর্য়ার্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্ট্রারে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
আলোচনা পর্বে বক্তব্য রাখেন মিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ। বক্তব্যের পাশাপাশি ১৫ই আগস্ট স্মরণে কবিতা পাঠ করা হয়। পনের আগস্টের এই শোককে শক্তিতে রূপান্তর করার মাধ্যমে জাতির পিতা যে স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখেছিলেন স্ব স্ব অবস্থান থেকে তা অর্জনের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন আলোচকগণ।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!