আনন্দ ও ত্যাগের অনন্য মহিমায় উদ্ভাসিত পবিত্র ঈদ-উল-আযহা। পবিত্র আল কোরআনের সুরা হজ্ব এর ৩৭ নং আয়াতে বলা হয়েছে-“আল্লাহ্ তায়ালার দরবারে কোরবানীর পশুর মাংস কিংবা রক্ত কিছুই পৌঁছায় না, বরং তোমাদের ধর্ম নিষ্ঠাই তাঁর কাছে পৌঁছায়। এভাবেই তিনি তাদের তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন, যেন তোমরা আল্লাহ্র শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করতে পারো-এ জন্য যে তিনি তোমাদের পথ দেখিয়ে দিয়েছেন। আর সুসংবাদ দাও সৎ কর্মপরায়ণদের।”
এই মহিমান্বিত পবিত্র দিনে আমরা কোরবানীর মাধ্যমে ধর্ম নিষ্ঠার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি অর্জন এবং মানুষ হিসেবে শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করে সকলের মধ্যে আনন্দ ভাগাভাগি করে থাকি। ঈদ-উল-আযহা কোরবানীর মাধ্যমে শান্তি, সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ববোধের অনুপম শিক্ষা দেয়। এ দিনে হিংসা ও হানাহানি ভুলে মানুষ সাম্য, মৈত্রী ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়।
কিন্তু এবার প্রাণঘাতী করোনাকালে ভিন্নভাবে ঈদ উদযাপন করবো আমরা। মুসলিম সমাজে প্রতি বছরই ঘরে ঘরে চাঁদ রাত, খোলা মাঠে ঈদের জামাত, কোরবানী ও ঈদ উৎসব পালনের মধ্য দিয়ে দিনটি সুদীর্ঘকাল ধরে পালিত হয়ে আসলেও আজ সারা বিশ্ব করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় এবার ঈদ উদযাপন হবে একান্তই ঘরোয়া পরিবেশে। এটি আমাদের আবহমান ঈদ ঐতিহ্যের বিপরীত হলেও প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব জনিত কারণে উন্মুক্ত স্থানে বড় পরিসরে ঈদের জামাত পরিহারের নির্দেশনা থাকায় মুসল্লীদের জীবন ঝুঁকি বিবেচনা করে স্বাস্থ্য বিধি মেনে এ বছর ঈদগাঁহ বা খোলা জায়গার পরিবর্তে ঈদের জামায়াত নিকটস্থ মসজিদে আদায় করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাস্ক পড়ে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে আমরা ঈদের নামাজ আদায় করবো। এবারের ঈদ উৎসব হোক পরিবারের সবার সুস্থতা, বাড়ীতে থেকে নতুনভাবে ঈদ আবিষ্কার। পরিচ্ছন্ন পরিবেশে পশু কোরবানী এবং পশুর চামড়া সংরক্ষণেও আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করবো।
করোনাকালে স্বাস্থ্য বিধি মেনে ঈদ উদযাপনের প্রত্যাশায় রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবাইকে জানাই ঈদের শুভেচ্ছা। এই পবিত্র দিনে মানুষে মানুষে প্রীতি ও বন্ধনের যোগসূত্র আরো সুদৃঢ় হোক। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশগড়ার প্রত্যয়ে প্রযুক্তি নির্ভর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে আসুন এই ঈদ-উল-আযহায় আমরা নেই সুন্দর শপথ। ঈদ মোবারক।
(দিলসাদ বেগম)
জেলা প্রশাসক
রাজবাড়ী।