॥হেলাল মাহমুদ॥ রাজবাড়ী জেলার ৩টি গেজ পয়েন্টের মধ্যে ২টি পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে জেলার বিভিন্ন স্থান প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এছাড়া বন্যার আশংকাও সৃষ্টি হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, রাজবাড়ী জেলায় পদ্মা নদীর পানি পরিমাপের জন্য ৩টি গেজ পয়েন্ট রয়েছে। সেগুলো হলো- গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া, রাজবাড়ী সদর উপজেলার মহেন্দ্রপুর এবং পাংশা উপজেলার সেনগ্রাম। তার মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় দৌলতদিয়া পয়েন্টে ৩০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে বিপদসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে এবং সেনগ্রাম পয়েন্টে ২৩ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া মহেন্দ্রপুর পয়েন্টে গত ২৪ ঘন্টায় ৩৭ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেলেও বিপদসীমার নীচেই রয়েছে।
পদ্মা নদীর এই পানি বৃদ্ধিতে তীব্র স্রোতের সৃষ্টি হয়ে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরী চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। পারাপারে প্রায় দ্বিগুণ সময় লাগায় দৌলতদিয়া ঘাটে যানবাহনের দীর্ঘ সারির সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে নদী পার হওয়ার জন্য ২দিনও অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিসি’র দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) আবু আব্দুল্লাহ রনি জানান, এই নৌরুটের ১৫টি ফেরীর মধ্যে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ‘বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান’ নামের বড় একটি ফেরী মেরামতের জন্য ডকইয়ার্ডে রয়েছে এবং তীব্র স্রোতের জন্য ‘সন্ধ্যা মালতি’ নামের আরেকটি ফেরী চলাচল করতে পারছে না। এর পাশাপাশি কোরবানীর পশু বোঝাই ট্রাক অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার করার কারণে সাধারণ পণ্যবাহী ট্রাকগুলোর পারাপার হতে সময় লাগছে। এছাড়া তীব্র স্রোতের কারণে শিমুলিয়া-কাঁঁঠালবাড়ী নৌরুটে ফেরী চলাচল করতে সময় বেশী লাগার কারণে ওই রুটের অনেক যানবহনও এই রুটে চলে আসছে।
অপরদিকে, লঞ্চ ঘাটের প্রবেশ পথের কিছু অংশও পানিতে ডুবে গেছে। জোড়াতালি দিয়ে কোনরকমে কাজ চালানো হচ্ছে। লঞ্চ ঘাটের ম্যানেজার নুরুল আনোয়ার মিলন জানান, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গত রাত থেকে যাত্রীদের কষ্ট করে লঞ্চে উঠতে হচ্ছে। যাত্রীর সংখ্যাও অনেক কমে গেছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয়ের কর্মচারী হাবিবুর রহমান জানান, তারা বালুভর্তি বস্তা ফেলে লঞ্চ ঘাটের প্রবেশ পথ সচল রেখেছেন। তবে অব্যাহতভাবে পানি বাড়তে থাকলে ভোগান্তি বাড়বে।
অপরদিকে, পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে গত কয়েকদিন ধরে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়নে নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু ফসলী জমি, বসতবাড়ী ও অন্যান্য স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বিভিন্ন স্থান (নিম্নাঞ্চল) প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি বন্যার আশংকাও দেখা দিয়েছে।