॥স্টাফ রিপোর্টার॥ প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করার স্বপ্ন দেখছেন উল্লেখ করে পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল(আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, সেই উন্নত দেশের উপযোগী পুলিশ বাহিনী গড়তে কাজ করা হচ্ছে।
আইজিপি গতকাল ২৬শে জুন রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তরা আঞ্চলিক পুলিশ লাইন্সের নবনির্মিত ব্যারাক ভবন উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, উন্নত দেশের পুলিশ হতে হলে পুলিশের সেবা জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে হবে বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে। পুলিশকে মাদকমুক্ত হতে হবে এবং মানুষের কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নেয়া যাবে না। মানুষের প্রতি নিষ্ঠুরতা নয়, মানবিক আচরণ করতে হবে। জনগণের সেবায় নিয়োজিত পুলিশ অফিসার ও ফোর্সের সার্বিক কল্যাণও নিশ্চিত করা হবে বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি।
পুলিশের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও আধুনিকায়নের মাধ্যমে এই পরিবর্তন আনার কথা বলেন বেনজীর আহমেদ ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের(ডিএমপি) কমিশনার শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত আইজি ড. মোঃ মইনুর রহমান চৌধুরী এবং আবুল খায়ের গ্রুপের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোঃ আবু সাঈদ চৌধুরী বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে ঢাকাস্থ বিভিন্ন ইউনিটের প্রধান, অতিরিক্ত আইজিগণসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ প্রধান হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, পুলিশের কোনো সদস্য ড্রাগ খাবে না, ড্রাগের সাথে কোনভাবেই সম্পর্কযুক্ত থাকবে না।
তিনি ক্যান্সার চিকিৎসার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, কোন ব্যক্তি ক্যান্সার আক্রান্ত হলে আক্রান্ত অংশ কেটে অপসারণ করা হয়। পুলিশের কোন সদস্য যদি ড্রাগের সাথে সম্পর্কযুক্ত থাকে তাহলে নির্দয়ভাবে তাকেও পুলিশ থেকে অপসারণ করা হবে। এ ব্যাপারে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।
পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে আইজিপি বলেন, দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয় ৮ই মার্চ। তখন পুলিশ এ ভাইরাস প্রতিরোধে সুরক্ষা সামগ্রীর জন্য অপেক্ষা না করে জনগণের সুরক্ষায় কাজ শুরু করেছে। এখন পুলিশের ২লাখ সদস্যের প্রত্যেকের জন্য পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রী রয়েছে।
করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, ‘আমরা মাত্র দুই সপ্তাহে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালকে ২৫০ বেড থেকে ৫০০ বেডের কোভিড-১৯ হাসপাতালে রূপান্তর করেছি। পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার জন্য রাজধানী ঢাকায় একটি উন্নত বেসরকারি হাসপাতাল ভাড়া করা হয়েছে, স্কুল-কলেজ এবং হোটেল ভাড়া করে আইসোলেশন সেন্টারে পরিণত করা হয়েছে’।
বেনজীর আহমেদ বলেন, করোনা পরীক্ষার জন্য যেখানে চার সপ্তাহের কম সময়ে পিসিআর মেশিন স্থাপন করা যায় না, সেখানে মাত্র ১২ দিনে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতলে পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। শুধু ঢাকায় নয়, ঢাকার বাইরে বিভাগীয় হাসপাতালগুলোকে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে।
করোনাকে জয় করে পুলিশ সদস্যরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, দেশে করোনায় এখন মৃত্যুর হার কমছে। করোনা আক্রান্ত হয়ে জাতীয় পর্যায়ে মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩ ভাগ। পুলিশে মৃত্যুর হার মাত্র শূণ্য দশমিক ৫ ভাগ।
আইজিপি বলেন, পুলিশ সদস্যদের আবাসিক সংকট নিরসনের এলক্ষ্যে স্বল্পমেয়াদে অস্থায়ী ভিত্তিতে ব্যারাক ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। ডেমরায় করা হয়েছে, উত্তরাতে করা হলো। পূর্বাচলেও ব্যারাক ভবন নির্মাণ করা হবে। দীর্ঘমেয়াদে বহুতল ভবন নির্মাণও করা হবে।
আইজিপি পুলিশ লাইন্স চত্বরে একটি কৃষ্ণচূড়া গাছের চারা রোপণ করেন।