॥রফিকুল ইসলাম॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের গঙ্গাপ্রসাদপুর গ্রামে মরা সুতা নদীর কুম জবর-দখলকারীরা গত ১৬ই এপ্রিল কয়েক দফায় সশস্ত্র তান্ডব চালিয়েছে।
এ সময় তারা কুম জবর-দখলের প্রতিবাদকারী ১৫/১৬ জনের বাড়ী-ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর, মারপিট, লুটপাট এবং ৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে ত্রাসের সৃষ্টি করে।
এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষ থেকে রাজবাড়ী থানায় ১১টি পৃথক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়নি।
অভিযোগ সূত্রে প্রকাশ, গঙ্গাপ্রসাদপুরের মরা সুতা নদীর কুমটি(গভীর বদ্ধ জলাশয়) সরকারী সম্পত্তি হলেও চারপাশের লোকজনের অনেক জমিও ভেঙ্গে কুমের মধ্যে চলে গেছে। স্থানীয় ১টি গোরস্থান ও ১টি মন্দিরের উন্নয়নের জন্য একসময় কুমটি লীজ দেয়া হতো। কিন্তু বর্তমানে গোরস্থান ও মন্দির পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত সরকারী/বেসরকারী সহযোগিতা পাওয়ায় কুমে চলে যাওয়া জমির মালিকরাসহ স্থানীয়রা আর কুমটি বাণিজ্যিকভাবে লীজ না দিয়ে সকলে মিলে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয়। তা সত্ত্বেও স্থানীয় প্রভাবশালী একটি চক্র কুমটি জোরপূর্বক দখল করে মাছ চাষ করার চেষ্টা করতে থাকে। কুমে চলে যাওয়া জমির মালিকরাসহ স্থানীয়রা এর প্রতিবাদ করায় প্রভাবশালী চক্রটি ক্ষুদ্ধ হয়। এই নিয়ে বিরোধের একপর্যায়ে কুম জবর-দখলকারীরা ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের নিয়ে গত ১৬ই এপ্রিল দিনে ও রাতে কয়েক দফায় সশস্ত্র হামলা চালায়। এ সময় তারা কুমে চলে যাওয়া জমির মালিকসহ কুম জবর-দখলের প্রতিবাদকারী ১৫/১৬ জনের বাড়ীতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর, মারপিট, লুটপাট এবং ৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে ত্রাসের সৃষ্টি করে।
পরে এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষ থেকে রাজবাড়ী থানায় ১১টি পৃথক অভিযোগ দায়ের করা হয়। এসব অভিযোগে গঙ্গাপ্রসাদপুর গ্রামের বছির সরদার(৪০), আগল সরদার(৪৩) ও বাবু ড্রাইভার(৫০), শাওন সরদার(২৫), রাশেদ সরদার(২২), রাজু(২১), আনিস (৩৫), ছকেল সরদার(৬০), আক্কাস সরদার(৩৫), আঃ লতিফ মৃধা(৪০), সাঈদ মৃধা(৩৫), লতিফ মোল্লা(৫৫), বড়লক্ষ্মীপুর গ্রামের নয়ন(২২), ইলিয়াস(৩৫), সাহেব আলী খাঁ (৪০)সহ অজ্ঞাতনামা ২০/২৫ জনকে আসামী করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে সিদ্দিক হেলাল আহম্মেদ, সাহিদা বেগম, আনোয়ারা বেগম, শহিদুল ইসলাম, ইসলাম, জামাল, ইমদাদুল হক রনি, শামসুল হক, আবু তালেব, রওশন ও নাজমা বেগম অভিযোগগুলো দায়ের করেছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত সিদ্দিক হেলাল আহম্মেদ বলেন, ঘটনার পর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে করোনা ভাইরাসের সমস্যার কারণে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশের আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে বিলম্ব হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা শুধু কুম জবর-দখলই নয়, মাদক ব্যবসা, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজীসহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের সাথে জড়িত। তাদের কারণে সাধারণ মানুষ অবর্ণনীয় ভোগান্তি পোহাচ্ছে। তিনি জরুরী ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান।