॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের পূর্ব ভবদিয়ায় করোনা ভাইরাসে গ্রামের একজন মারা গেছে এমন বিষয়কে কেন্দ্র করে বিতর্কের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় লাবলু মোল্লা(৪০) নিহত হওয়ার ঘটনায় ১৯জনের নামে মামলা হয়েছে।
মামলায় অজ্ঞাত আরো ৭/৮জনকে আসামী করা হয়েছে। গত ২১শে মার্চ রাতে নিহতের স্ত্রী জাহেদা বেগম(৩৫) বাদী হয়ে রাজবাড়ী সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। রাজবাড়ী থানার মামলা নং-২৮, ধারাঃ ১৪৩/৩০৭/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০২/৩৪ দঃ বিঃ।
মামলার আসামীরা হলো ঃ পূর্ব ভবদিয়া গ্রামের সুলতান ফকির(২২), ডাঃ খালেক ফকির(৪০), গাফফার ফকির(৫২), মনজু ফকির ওরফে নুরুল ইসলাম(৬০), ছালেক ফকির(৩০), ছত্তার ফকির(৫০), রাজিয়া খাতুন(৪৫), হাসি বেগম(৩৫), মাসুদ ফকির(২০), মামুন ফকির(২৫), মিরাজ ফকির(২০), ফিরোজ ফকির(২৫), শান্ত(২৫), রিপন মন্ডল(২৫), আওলাদ সরদার(৩০), মোজাম্মেল ফকির(২৮), গোলাপ ফকির(৬০), মমতা বেগম(৫০) ও সোহান(১৮)।
এদের মধ্যে সুলতান ফকির, গাফফার ফকির, মনজু ফকির ওরফে নুরুল ইসলাম, ছালেক ফকির, ছত্তার ফকির, রাজিয়া খাতুন, হাসি বেগম, সোহান ও সন্দিগ্ধ হিসেবে একই গ্রামের মৃত আনছার ফকিরের ছেলে মালেক ফকির (৪০)কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গত ২১শে মার্চ সকালে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত লাবলু মোল্লা পূর্ব ভবদিয়া গ্রামের মৃত অখেল উদ্দিনের ছেলে।
মামলা সূত্রে প্রকাশ, গত ১৮ই মার্চ পূর্ব ভবদিয়া গ্রামে খলিল মন্ডল নামে এক ব্যক্তি ৩মাস অসুস্থ থাকার পর তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়। এ মৃত্যুর ঘটনায় একই গ্রামের মামলার ২নং আসামী ডাঃ খালেক ফকির এলাকায় প্রচার করে খলিল মন্ডল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। তখন নিহতের বড় ভাই মান্নান মোল্লা ডাঃ খালেককে বলে তুমি এলাকায় মিথ্যা গুজব ছড়াচ্ছো কেন। এনিয়ে তাদের মধ্যে তর্কবিতর্ক হলে স্থানীয় দফাদার ওহাব বিষয়টি মিমাংশা করে দেন। পরের দিন ১৯শে মার্চ সকালের দিকে মান্নান মোল্লা স্থানীয় জোনাবের মুদি দোকানে গেলে ডাঃ খালেক ফকির তাকে এলোপাতারীভাবে ঘুষি মারে। এ সময় দফাদার ওহাব ও মান্নার মোল্লার আত্মীয়স্বজন প্রতিবাদ করলে উল্লেখিতরা তাদেরকে দেখে নেবে বলে হুমকি দেয়। এ জের ধরে গত ২১শে মার্চ সকাল ৭টার দিকে মান্নান মোল্লার ভাই বাবলু মোল্লা, ওয়াজ উদ্দিন মোল্লা ও ভাতিজা সিরু মোল্লা ধান ক্ষেত নিড়ানোর জন্য বাড়ী থেকে রওনা করে সালেকের মুদি দোকানের সামনে পৌছালে উল্লেখিত আসামীরা তাদের উপর পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দেশীয় ধারালো অস্ত্র, লোহার রড, বাশের লাঠি ও কাঠের বাটাম দিয়ে এলোপাতারীভাবে মারপিট শুরু করে। এ সময় তাদের চিৎকার শুনে মান্নান মোল্লার ছোট ভাই লাবলু মোল্লা গম থেকে দৌড়ে এগিয়ে এলে তারা তাকে লোহার রড ও চাপাতির ঘারা দিয়ে বেদমভাবে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। খবর পেয়ে মান্নান মোল্লা ও তার পরিবারের লোকজন এগিয়ে এলে উল্লেখিতরা পালিয়ে যায়। এ সময় পরিবারের লোকজন আহতদের রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক লাবলু মোল্লাকে মৃত ঘোষণা করে। আহতদের মধ্যে বাবলু মোল্লাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ওয়াজউদ্দিন ও সিরুকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
রাজবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ স্বপন কুমার মজুমদার জানান, এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় ৯জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল ২২শে মার্চ আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়।