॥মোক্তার হোসেন॥ রাজবাড়ী-২ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিম বলেছেন, কলেজ থেকে অবসরে গেলেও তার (অবসরপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ একেএম শফিকুল মোরশেদ আরুজ) কাজ শেষ হয়ে যায় নাই। তার কাছে অনেক প্রত্যাশা রয়েছে। পাংশা কলেজ সরকারীকরণে আরুজের অনেক অবদান আছে।
গতকাল ১০ই ফেব্রুয়ারী দুপুরে পাংশা সরকারী কলেজের অবসরপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ ও সাবেক অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) একেএম শফিকুল মোরশেদ আরুজের অবসরজনিত বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিম এমপি এসব কথা বলেন।
এমপি মোঃ জিল্লুল হাকিম আরো বলেন, খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন পাংশা কলেজে জনসভায় আসেন। সে সময়ে কলেজের অনেক শিক্ষক বিএনপিতে যোগ দেয়। কলেজের শিক্ষকরা তাকে সোনার ধান উপহার দেয়। কিন্তু খালেদা জিয়া কলেজের জন্য কিছুই করেন নাই। পরবর্তীতে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হলে পাংশা কলেজে জনসভা করেন তিনি। আরুজ একা নেতৃত্ব দিয়ে সেই জনসভা সফল করে। জনসভায় শেখ হাসিনা কলেজ সরকারীকরণের প্রতিশ্রুতি দেন। প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে আরুজ অনেক কাজ করেছে। সে বিষয়টি মনে রাখতে হবে।
তিনি বলেন, আরুজ আমার পরিবারের একজন সদস্যর মত। আমার ছোট ভাইয়ের মত সে। তাকে আমি অনেক ভালোবাসি। প্রশাসনিক পদে থেকে কাজ করার কারণে তার প্রতি অনেকের ক্ষোভ থাকতে পারে সেটি আপনারা ভুলে যাবেন।
এমপি জিল্লুল হকিম আরো বলেন, আমরা কলেজের অনেক ভবন নির্মাণ করেছি। কিছুদিনের মধ্যে ৫তলা বিশিষ্ট আরো একটি ভবন নির্মিত হবে। হোস্টেল নির্মিত হবে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, লেখাপড়া করে কলেজের মুখ উজ্জ্বল করতে হবে। মাদক থেকে দূরে থাকতে হবে। লেখাপড়া শিখে নিজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর সামাজিক উন্নয়নে সর্বপরি দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখার গুরুত্বারোপ করেন তিনি। কলেজ প্রতিষ্ঠায় যাদের অবদান রয়েছে, তাদের নামফলক স্থাপনের দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন প্রধান অতিথি মোঃ জিল্লুল হাকিম এমপি।
পাংশা সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাঃ আতাউল হক খান চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত বিদায়ী অতিথি সাবেক উপাধ্যক্ষ একেএম শফিকুল মোরশেদ আরুজ, কালুখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আলিউজ্জামান চৌধুরী টিটো, পাংশা সরকারী কলেজ শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক একেএম শরিফুল মোরশেদ রনজু, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক এবিএম ফরিদ আহমেদ, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক ডলি পারভীন ও একাদশ শ্রেণির ছাত্রী সাদিয়া ইসলাম প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে এমপি মোঃ জিল্লুল হাকিম এমপির সহধর্মিনী মিসেস সাঈদা হাকিম, অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাঃ আতাউল হক খান চৌধুরীর সহধর্মিনী আনজুমান আরা খান চৌধুরী ও সাবেক উপাধ্যক্ষ একেএম শফিকুল মোরশেদ আরুজের সহধর্মিনী লুবনা মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন পাংশা সরকারী কলেজ শিক্ষক পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুর রউফ।
অনুষ্ঠানে একেএম শফিকুল মোরশেদ আরুজকে কলেজের পক্ষ থেকে মুজিব শতবর্ষ ক্রিস্টাল ক্রেস্ট এবং কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, ভূগোল, ব্যবস্থাপনা, হিসাববিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, উদ্ভিদবিজ্ঞান ও গণিত বিভাগের পক্ষ থেকে বিভাগীয় প্রধানগণ ক্রেস্ট উপহার প্রদান করেন।
দুপুর ১২টার দিকে পাংশা সরকারী কলেজের এমপি জিল্লুল হাকিম চত্বরে কলেজের বিএনসিসি দল বিদায়ী অতিথি একেএম শফিকুল মোরশেদ আরুজকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। গার্ড অব অনার মঞ্চে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিম এমপি, মিসেস সাঈদা হাকিম ও অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাঃ আতাউল হক খান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
গার্ড অব অনার শেষে প্রধান অতিথি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিম এমপি কলেজের হিসাববিজ্ঞান শাখা ও আইসিটি ল্যাব উদ্বোধন করেন। অবসরজনিত বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৩০শে অক্টোবর একেএম শফিকুল মোরশেদ আরুজ কলেজের উপাধ্যক্ষ পদ থেকে অবসরে যান।