॥হেলাল মাহমুদ॥ রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের বাসভবনের পাশের পান্না চত্বর-ভবানীপুর সড়কের নীচ দিয়ে যাওয়া সংযোগ ড্রেনের স্লাব ভেঙ্গে বড় আকৃতির গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ওই সড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন ও পথচারী চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
শহরের পান্না চত্বর থেকে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কটির পাশেই রয়েছে জেলা প্রশাসক ও সরকারী কর্মকর্তাদের স্টাফ কোয়ার্টার, ব্যাচেলর ডরমেটরী, সড়ক জনপথ এবং গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সরকারী বাসা, সরকারী গণগ্রন্থাগার, কেন্দ্রীয় ঈদগাঁহ ময়দান, ঐতিহ্যবাহী রেলওয়ে ময়দান, চেম্বার অব কমার্স ভবন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয়, কবরস্থান, শিল্প প্রতিষ্ঠান, স্কুল-মাদ্রাসা, মসজিদ, মার্কেট, দোকান-পাটসহ সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্থাপনা। যার ফলে সড়কটি দিয়ে সবসময়ই জিপ, মাইক্রোবাস, মোটর সাইকেল, ইজিবাইক, ট্রাক, রিক্সা, বাইসাইকেল, নসিমনসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করে। সাধারণ পথচারীদের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদেরও যাতায়াত করতে হয়। এ অবস্থায় প্রধান সড়কের কয়েকগজ দূরেই সরকারী কর্মকর্তাদের ডরমেটরী ভবন(বাসভবন) থেকে আড়াআড়িভাবে সড়কের নীচ দিয়ে অপর পাশে যাওয়া ড্রেনটির স্লাব ভেঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ গর্ত হওয়ায় দুর্ভোগের পাশাপাশি যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা বিরাজ করছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের নীচ দিয়ে যাওয়া সংযোগ ড্রেনের ৫টি স্লাবের একটির মাঝখানে ভেঙ্গে বড় আকৃতির গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আরো ২টি স্লাবের বেশ কিছুটা অংশেও ভাঙ্গা শুরু হয়েছে। যানবাহন চালকরা ওই জায়গা দিয়ে যাওয়ার সময় ধীর গতিতে খুব সাবধানে পার হচ্ছে। কিন্তু সেখানে কোন সতর্কতামূলক কোন চিহ্ন, সাইনবোর্ড বা এ জাতীয় কোন কিছু নেই। ফলে ওই সড়কে নতুন চালকদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে। না জানা থাকার কারণে দ্রুত গতিতে যাওয়ার সময় আচমকা সড়কের মাঝখানের ভাঙ্গাচোরা গর্তের সামনে পড়ে হতভম্ব হয়ে কোন রকমে দুর্ঘটনা এড়াচ্ছে। পথচারীদেরও সাবধানতার সাথে জায়গাটি পার হতে হচ্ছে।
রহিম শেখ নামের একজন রিক্সা চালক বলেন, এখানে মাঝে-মধ্যেই রিক্সার চাকা আটকে যায়-অনেক সময় উল্টেও যায়। যাত্রীরা চিৎপটাং হয়ে পড়ে যায়। আবার ক্রসিং করার সময় বিপরীত দিকের রিক্সাগুলোর গর্ত ও ভাঙ্গাচোরা এড়াতে গিয়ে সংঘর্ষও হয়। জরুরী ভিত্তিতে জায়গাটি মেরামত করা দরকার।
ইউসুফ মিয়া নামের একজন মোটর সাইকেল চালক বলেন, আমাকে প্রায়ই এ সড়ক দিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যেতে হয়। কিন্তু যাওয়ার সময় ভয় লাগে। একটু উনিশ-বিশ হলেই দুর্ঘটনা নিশ্চিত। অনেক মোটর সাইকেল চালককে এখানে পড়ে যেতে শুনেছি।
পান্না চত্বর এলাকার টাউন মক্তব সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণীর ছাত্র আকাশ শেখ বলেন, স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে সড়কের গর্ত পার হতে ভয় লাগে। একটু বেখেয়ালী হলেই দুর্ঘটনা ঘটবে। অনেককে পড়ে যেতেও দেখেছি। দ্রুত জায়গাটি ঠিক করা দরকার।
সাবিনা বেগম নামে এক পথচারী বলেন, নিজে তো খুব খেয়াল করে জায়গাটি পার হই। কিন্তু আমার দুই সন্তান স্কুলে পড়ে। ওদের জন্য দুশ্চিন্তা হয়। পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে দাবী থাকবে ড্রেনের স্লাবগুলো ঠিক করার।
এ ব্যাপারে রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরী বলেন, ওই ভাঙ্গা-গর্তের কারণে জনগণের দুর্ভোগ হচ্ছে, কথাটা ঠিক। কিছুদিন আগে নতুন স্লাব বসানো হলেও আবার তা ভেঙ্গে গেছে। এবার ভালো মানের স্লাব বসাবো, যাতে সহসাই না ভাঙ্গে।