॥স্টাফ রিপোর্টার॥ আগামী ২২শে জানুয়ারী বুধবার ইলেকট্রনিকস পাসপোর্ট (ই-পাসপোর্ট) কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদিন সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অধিকতর নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সম্বলিত ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনার উদ্বোধন করবেন।
গতকাল ১৯শে জানুয়ারী সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ই-পাসপোর্ট ভবন ও ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম উদ্বোধন সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ কথা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি বলেন, এই পাসপোর্ট বহির্বিশ্বে বাংলাদেশী পাসপোর্টের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি করবে এবং পাসপোর্টের নিরাপত্তা অধিকতর নিশ্চিতকরণসহ ই-পাসপোর্টের মাধ্যমে বিদেশ ভ্রমণ ও ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সহজ হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের আওতাধীন ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় জার্মান কোম্পানী ভেরিডোস জিএমবিএইচ কর্তৃক ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। ই-পাসপোর্টের মেয়াদ হবে ৫ থেকে ১০ বছর।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর প্রাথমিকভাবে রাজধানীর আগারগাঁও, উত্তরা ও যাত্রাবাড়ী থেকে ই-পাসপোর্ট সরবরাহ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ৪৮ পৃষ্ঠার ৫বছর মেয়াদী সাধারণ ফি ৩৫০০ টাকা, জরুরী ফি ৫৫০০ টাকা ও অতীব জরুরী ফি ৭৫০০ টাকা এবং ১০ বছর মেয়াদী সাধারণ ফি ৫০০০ টাকা, জরুরী ফি ৭০০০ টাকা ও অতীব জরুরী ফি ৯০০০ টাকা।
নতুন পাসপোর্টের ক্ষেত্রে অতীব জরুরীতে ৩দিনে, জরুরীতে ৭দিনে ও সাধারণ পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে ২১দিনের পাসপোর্ট পাওয়া যাবে। তবে পুরনো অথবা মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্ট রি-ইস্যু করার ক্ষেত্রে অতীব জরুরী পাসপোর্ট ২দিনে, জরুরী পাসপোর্ট ৩দিনে ও সাধারণ পাসপোর্ট ৭দিনের মধ্যে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।
এছাড়া, বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে সাধারণ আবেদনকারী, শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা আলাদা ই-পাসপোর্ট ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে সাধারণ আবেদনকারীদের জন্য ৪৮ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ১০০ মার্কিন ডলার ও জরুরী ফি ১৫০ মার্কিন ডলার। ১০ বছর মেয়াদী সাধারণ ফি ১২৫ মার্কিন ডলার ও জরুরী ফি ১৭৫ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।
ই-পাসপোর্টের আবেদনপত্র জাতীয় পরিচয়পত্র(এনআইডি) বা জন্ম নিবন্ধন সনদ(বিআরসি) অনুযায়ী পূরণ করতে হবে। অপ্রাপ্ত বয়স্ক(১৮ বছরের কম) আবেদনকারী, যার জাতীয় পরিচয়পত্র(এনআইডি) নেই, তার পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র(এনআইডি) নম্বর অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের ডিজিটালাইজড আইডি কার্ড দেওয়া হয়েছে। সেটি নিবন্ধন রয়েছে। কাজেই তথ্য গোপন করে কোনও রোহিঙ্গাদের ই-পাসপোর্ট গ্রহণের সুযোগ নাই। তারপরও রোহিঙ্গারা যদি বিভিন্ন ধরনের ফাঁক-ফোকরের মাধ্যমে ই-পাসপোর্ট করতে যায় তাহলে বিভিন্ন প্রশ্নে তারা ধরা পড়বে।
তিনি বলেন, ই-পাসপোর্টের জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে তবে বিভিন্ন ধরনের নাজেহাল এড়াতে এটি অনলাইনে করার চেষ্টা করছি যেন অতীতের তুলনায় সহজ হয়।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ২০২০ সালের মধ্যে দেশের সর্বত্র ই-পাসপোর্ট চালু হবে। বাংলাদেশে প্রথম ই-পাসপোর্ট পাবে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী। প্রতিদিন ২৫হাজার পাসপোর্ট ইস্যু করা যাবে।’
সংবাদ সম্মেলনে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।