॥কবির হোসেন॥ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন ও জেলা শিল্পকলা একাডেমীর আয়োজনে গতকাল ২৫শে মে সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কামরুন নাহার চৌধুরী লাভলী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) রেবেকা খান, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার(পাংশা সার্কেল) মোঃ ফজলুল করিম ও ফরিদপুরের বোয়ালমারী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর শংকর চন্দ্র সিনহা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা শিল্পকলা একাডেমীর কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আঃ রাজ্জাক কাজল।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কামরুন নাহার চৌধুরী লাভলী বলেন, জাতীয় কবি সামান্য কিছু নয়। কবিদের জীবন যাপন ও সমাজে উঠে আসা সামান্য কোন ব্যাপার নয়। কবি শব্দের অর্থ স্কুলের ছোট ছোট বাচ্চারা জানে না কিন্তু কবিতা তারা মুখস্ত বলতে পারে। কবি শব্দের অর্থ ছোটবেলা থেকেই জানতে হবে। প্রাথমিক ও প্রি-ক্যাডেট থেকেই ছাত্র-ছাত্রীদের বোঝাতে হবে কবিতা শব্দের অর্থ। তাহলে তারা বুঝতে পারবে। বড় হলে তারা উৎসাহিত হবে কাজী নজরুল ইসলাম সম্পর্কে জানতে। আসলে কোন দিবসে তাকে স্মরণ করেই বোঝানো যাবে না কাজী নজরুল কি ছিলেন। কাজী নজরুল দরিদ্র ঘরে জন্ম নিয়েছিলেন। তাই ছোটকালে তার নামই ছিল দুখু মিয়া। দরিদ্র ঘরে জন্ম নিলেও তিনি জাতীয় কবি হিসেবে পরিচিত আমাদের কাছে। কবি নজরুলের জ্ঞান শিশুদের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার স্বপ্নের দেশ গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী বলেন, দরিদ্র ঘরে জন্ম নিয়েও জাতীয় কবি হওয়াটা অসামান্য ব্যাপার। বর্তমানে বিজ্ঞান চর্চা করতে করতে সাহিত্য চর্চা ঢাকা পড়ে যাচ্ছে।
তিনি কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবনের শুরু থেকে সমাপ্তি পর্যন্ত আলোচনা করে বলেন, তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক একজন কবি। তিনি ইসলাম ধর্মের জন্য ২হাজার গজল রচনা করে গেছেন। দারিদ্রতার কারণে কাজী নজরুলকে করতে হয়েছে রুজির খোঁজ, অন্যদিকে রবীন্দ্রনাথ বংশীয় সূত্রে জমিদারী দেখার জন্য আসেন কুষ্টিয়ায়। দু’জনের দু’টি লেখা বঙ্গবন্ধুর কাছে পাঠানো হলে তিনি একজনের লেখা রণসঙ্গীত হিসেবে ও অন্যজনের লেখা জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গ্রহণ করেন।
অসুস্থ্য কাজী নজরুলকে বঙ্গবন্ধু নিজ প্রচেষ্টায় বাংলাদেশে এনে ধানমন্ডিতে একটি বাড়ী দেন, যা এখন নজরুল একাডেমী হিসেবে পরিচিত। ক্লাস নাইন পড়–য়া এই কবির লেখা পড়ে আমাদেরকে সর্বোচ্চ ডিগ্রী লাভ করতে হয়। আলোচনা সভার শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।