॥এম.এইচ আক্কাছ॥ রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলাতে এবার সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। মাঠের পর মাঠ সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে।
গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ও দৌলতদিয়া ইউনিয়নে এবার সরিষার আবাদ হয়েছে চোখে পড়ার মতো। এছাড়া ছোট ভাকলা ও উজানচর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার মাঠসহ পদ্মা নদীর চরাঞ্চলেও ব্যাপক সরিষার আবাদ হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যেই চাষীরা তাদের প্রতীক্ষিত ফসল ঘরে তুলবেন বলে আশা করছেন।
হাউলি কেউটিল গ্রামের কৃষক আঃ রহমান বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আশা করছি এ বছর সরিষার ভালো ফলন হবে। সামনে ঘন কুয়াশা পড়লে সরিষার জন্য ঝুঁকি রয়েছে।
দেওয়ানপাড়ার কৃষক আঃ ছাত্তার মোল্লা বলেন, এ বছর সরিষার যে ফলন হয়েছে তাতে বিঘাপ্রতি ৪মণের উপরে ফলন পাওয়া যাবে আশা করছি। তবে দেবগ্রাম ও দৌলতদিয়া এলাকার কৃষকদের সরিষা চাষে আগ্রহ সৃষ্টির জন্য উপজেলা কৃষি বিভাগের তেমন কোন ভূমিকা নেই বলে অভিযোগ রয়েছে ওই এলাকার কৃষকদের। তাদের মতে, কৃষি বিভাগ যদি কৃষকদের প্রশিক্ষণ প্রদানসহ দেখাশোনা করে তাহলে আরও বেশী জমিতে সরিষার চাষ করা সম্ভব। কৃষি বিভাগের প্রয়োজনীয় পরামর্শ, সার্বিক সহযোগিতা ও ন্যায্য মূল্য পেলে এ অঞ্চলের কৃষকরা সরিষাসহ অন্যান্য তৈল বীজ জাতীয় ফসল চাষে আরও বেশী আগ্রহী হবেন।
গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বিঘা জমিতে মাঘি সরিষা ৩-৪ মণ এবং বারি সরিষা ৫-৬ মণ পর্যন্ত উৎপাদন হয়। মাঘি সরিষা ৬৫-৭০ দিন এবং বারি সরিষার জাত ৮০-১০০ দিনের মধ্যে ঘরে তোলা যায়। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে আশা করা যায় এবার সরিষার ভাালো ফলন হবে। দাম ভালো পেলে আগামীতে কৃষকরা সরিষা চাষে আরও আগ্রহী হবে। শুধু বীজ উৎপাদনের জন্য প্রচলিত জাতগুলো থেকে উন্নত জাতের বেশ কিছু প্রদর্শনী প্লট করা হয়েছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শিকদার মোঃ মোহায়মেন আক্তার বলেন, এবার মাঘি ও বিভিন্ন ধরনের বারি জাত মিলিয়ে মোট ১হাজার ৪৭ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। এ উপজেলায় প্রতি বিঘা জমিতে ৫মণ পর্যন্ত সরিষার ফলন হয়। অনুকুল আবহাওয়া থাকলে এবার সরিষার বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামীতে এই অঞ্চলের ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণের জন্য সরিষার পাশাপাশি তিল, তিশিসহ অন্যান্য তেল বীজ জাতীয় ফসল আবাদের জন্য আমরা কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছি।