সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫২ পূর্বাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

গোয়ালন্দে জাতীয় মহাসড়কের উন্নয়নে ডালপালা কর্তনের নামে বন বিভাগ কর্তৃক গাছ কেটে সাবাড়

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৯

॥গোয়ালন্দ প্রতিনিধি॥ ঢাকা-খুলনা জাতীয় মহাসড়কের রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দে মহাসড়কের পাশে রোপনকৃত গাছের ডালপালা কেটে ফেলতে রাজবাড়ী সড়ক ও জনপথ বিভাগ(সওজ) থেকে চিঠি দেয়া হলেও বন বিভাগ গাছ কেটে সাবাড় করেছে।
বন বিভাগের দাবী, দ্বিতীয় দফা সওজ ডালপাল কর্তনের জন্য বললেও প্রথম দফায় চিঠিতে গাছ কেটে ফেলার কথা বলেছিল। মহাসড়কে দুই পাশের গাছ না থাকায় এখন মরভূমিতে পরিণত হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৫-২০০৬ অর্থ বছরে গোয়ালন্দ সামাজিক বন বিভাগ ঢাকা-খুলনা জাতীয় মহাসড়কের গোয়ালন্দ রেলগেট থেকে দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত মহাসড়কের দুই পাশে অ্যাকাশি, রেইনট্রি, বাবলা, শিশু, গামারীসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপন করে। ‘উন্নয়নের’ নামে বন বিভাগ প্রায় ৩বছর আগে মহাসড়কের পশ্চিম পাশের সব গাছ কেটে ফেলে। ফের এ বছর মহাসড়কের পূর্ব পাশে বিভিন্ন প্রজাতির ছোট-বড় সব গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে।
গাছ কাটা কাজের তদারকি করছেন মোঃ লিটন মোল্লা। তিনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি দাবী করে বলেন, চলতি বছর গত ৭ই অক্টোবর ফরিদপুর বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে এসব গাছ বিক্রির দরপত্র প্রদান করা হয়। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে মের্সাস টিটল এন্টার প্রাইজ, গোয়ালচামট, ফরিদপুর এর অধিন কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। মোট ৩৬৫টি গাছের বিপরিতে ৩ লাখ ৫১ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। কার্যাদেশের পর নভেম্বর মাসের শেষ দিকে গাছ কাটা শুরু করেন।
দেখা যায়, প্রায় ১০/১২ জন শ্রমিক মহাসড়কের পাশে থাকা ওই সব গাছ কেটে সাবার করে ফেলছে। অনেক গাছ এখনো অপরিপক্ক রয়েছে। শ্রমিকেরা গাছের গুড়ি কেটে মহাসড়কের পাশে স্তুপ করে রেখেছেন। কয়েকজন গাছ কাটায় ব্যস্ত রয়েছেন। গাছ কাটা কাজের তদারকি করছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন।
কয়েকজন পরিবহন চালক ও যাত্রী বলেন, মহাসড়কের পাশের সব গাছ কেটে সাবার করে ফেলায় এখন মরভূমিতে পরিণত হয়েছে। অথচ ঘাটে নানা ধরনের সমস্যার কারণে প্রায় যানজট সৃষ্টি হয়। তখন সড়কের পাশে গাছপালা থাকলে অনেকে বিশ্রাম নিতে পারতো। এমনিতে গরমের সময় প্রখর রৌদ্রের মধ্যে মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করা যায়না। গাছপালা থাকলে পরিবহন ছায়ায় দাঁড়িয়ে থাকলে তারাও রক্ষা পায়।
গোয়ালন্দ উপজেলা বন কর্মকর্তা(ফরেষ্টার) মীর সাইদুর রহমান জানান, গত ১৪ই ফেব্রুয়ারী রাজবাড়ী সড়ক বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ আশিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি পত্র বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, ফরিদপুরকে প্রদান করেন। পত্রে সড়ক উন্নয়ন কাজের লক্ষ্যে জাতীয় মহাসড়ক(এন-৭) এর বাংলাদেশ হ্যাচারী (চেইঃ ৩+৪৩০) থেকে গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন (চেইঃ ৩+৮৩০) পর্যন্ত দুই পাশে ব্যক্তি মালিকানাধীন ছাড়াও বিভিন্ন প্রজাতির গাছ অপসারনের কথা বলা হয়। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ এনামুল হক ভূইঁয়া স্বাক্ষরিত এক পত্রে বন বিভাগের কোন গাছ আছে কিনা সরেজমিন পরিদর্শন করে পূর্নাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য রাজবাড়ী সদর ও গোয়ালন্দ ফরেষ্টারকে বলা হয়।
এদিকে গত ২২শে সেপ্টেম্বর রাজবাড়ী সড়ক বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ আশিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক পত্রে ফরিদপুর বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কাছে বলা হয়, দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট থেকে বসন্তপুর পর্যন্ত মহাসড়কের উভয় পাশে বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষ বিদ্যমান রয়েছে। বৃক্ষের ডালপালা মহাসড়কের ভিতর চলে আসায় যানবাহন চলাচল ঝুকিপূর্ণ ও বিপদজনক হয়ে পড়েছে। ডালপালা সড়ক আচ্ছাদিত থাকায় বৃষ্টির পরও পাতায় জমে থাকা পানি টিপটিপ করে সড়কে পড়তে থাকায় পেভমেন্ট ক্ষতিগ্রস্থ হয়। সরকারী সম্পদ রক্ষার্থে ও সড়কে যান চলাচল নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে বর্ণিত সড়কের বিদ্যমান বৃক্ষের ডালপালা কর্তন জরুরী।
এ সংক্রান্ত পত্রের আলোকে রাজবাড়ী সদর ও গোয়ালন্দের ফরেষ্টারকে উপকারভোগীদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গত ২৪শে সেপ্টেম্বর বিভাগীয় বন কর্মকর্তার দপ্তর থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এ প্রসঙ্গে রাজবাড়ী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কেবিএম সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমরা মহাসড়কের ওই এলাকায় মাত্র ৫০০ মিটার দৈর্ঘ, পাশে ৫ ফুট করে বাড়াতে কিছু গাছ কর্তন করতে বলেছিলাম। তার মানে এই নয় যে, সমস্ত গাছ কাটতে বলা হয়েছে। তবে আমরা তাদেরকে পুনরায় গাছ রোপনের জন্য চিঠি দিব।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!