বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫২ অপরাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

নীতি,আদর্শ নিয়ে চলার জন্য আ’লীগের নেতাকর্মীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

  • আপডেট সময় শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৯

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে দেশের সব থেকে বড় এবং শক্তিশালী রাজনৈতিক দল আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলটির নেতাকর্মীদের নীতি ও আদর্শ নিয়ে চলার এবং ত্যাগ স্বীকারে সর্বদা প্রস্তুত থাকার আহবান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেকোন রাজনৈতিকের জীবনে নীতি-আদর্শই সব থেকে বড় কথা। আর সেই আদর্শের জন্য যেকোন ত্যাগ স্বীকারে সদা প্রস্তুত থাকতে হবে।’
বঙ্গবন্ধুর সারাজীবনের ত্যাগ-তীতিক্ষা এবং সংগ্রামের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘যিনি ত্যাগ স্বীকার করতে পারেন তিনিই সফল হতে এবং দেশ ও জাতিকে কিছু দিতে পারেন।’
প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা গতকাল ২০শে ডিসেম্বর বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই উপমহাদেশের প্রাচীন এবং অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দুই দিনব্যাপী ২১তম জাতীয় কাউন্সিলে উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সেই সংগঠন যে সংগঠনের নেতাকর্মীরা বার বার আত্মত্যাগ করেছেন এবং তারই ফসল বাংলাদেশের জনগণ আজ পেয়েছেন।
ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ যে বাংলাদেশের স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন সেই স্বপ্ন পূরণ এবং আওয়ামী লীগকে তৃণমূল পর্যায় থেকে আরো শক্তিশালী করাই তাঁর লক্ষ্য বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
তাঁর সরকার ‘বাঙালি জাতিকে বিশ্বে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করতে চায় এবং সেইলক্ষ্য নিয়েই তাঁদের রাজনীতি’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে আমি এই অনুরোধই করবো যে, আপনাদেরকেও সেই চিন্তা-চেতনা নিয়েই কাজ করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী নীতি ও আদর্শ নিয়ে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনকে অনুসরণ করার জন্য তাঁর একটি ভাষণের উল্লেখযোগ্য অংশ উদ্বৃতি হিসেবে অংশ তুলে ধরেন বলেন, যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের জন্য এটা একান্তভাবে দরকার। তিনি বলেন, ‘নীতিবিহীন নেতা নিয়ে অগ্রসর হলে সাময়িকভাবে কিছু ফল পাওয়া যায় কিন্তু সংগ্রামের সময় তাকে খুঁজে পাওয়া যায় না।’
দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং উপ-প্রচার সম্পাদক আামিনুল ইসলাম অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং সম্মেলনের অভ্যর্থনা উপ-পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ নাসিম স্বাগত বক্তৃতা করেন এবং দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ শোক প্রস্তাব পাঠ করেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ’৫২’র ভাষা শহীদ এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদ, জাতীয় চারনেতা, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবসহ ১৫ই আগস্টের সকল শহীদ, ২১শে আগস্টের গ্রেনেড হামলাসহ দেশ মাতৃকার সকল গণআন্দোলনের শহীদদের স্মরনে সকলে দাঁড়িয়ে ১মিনিট নিরবতা পালন করেন।
সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশন আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে অনুষ্ঠিত হবে।
এবারের জাতীয় কাউন্সিলের থিম হচ্ছে- ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে গড়তে সোনার দেশ, এগিয়ে চলেছি দুর্বার, আমরাই তো বাংলাদেশ।’
সম্মেলনে সারাদেশ থেকে আগত প্রায় ৭ হাজার কাউন্সিলর এবং ১৫হাজার ডেলিগেটসহ ৫০ হাজার নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন।
জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাগণ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ এবং যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, ভারত, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনামসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক এবং বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধি আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
এরআগে আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় কাউন্সিল-২০১৯ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন এবং জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এ সময় সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়।
দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন। পাশাপাশি সকল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি জাতীয় পতাকা এবং সাধারণ সম্পাদক দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
এরপর আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক উপকমিটির আয়োজনে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয় পবিত্র কোরআনসহ ধর্মগ্রন্থগুলো পাঠের মাধ্যমে।
আওয়ামী লীগের সম্মেলন ঘিরে মিছিলের মোহনায় পরিণত হয় বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ এবং পাকিস্তানী বাহিনীর আত্মসমর্পণ দলিলে স্বাক্ষরের ঐতিহাসিক স্থান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। শৈত্য প্রবাহের তীব্র ঠান্ডাকে উপেক্ষা করে দলে দলে নেতাকর্মীরা দুপুরের আগেই সমগ্র সম্মেলন স্থল, পার্শ্ববর্তী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-টিএসসি, শাহবাগ এবং হাইকোর্ট এবং তার আশাপাশের এলাকা পূর্ণ করে। স্বতঃস্ফূর্ত নেতা-কর্মীদের ভিড়ে সর্বত্র লোকে লোকারণ্য হয়ে যায় ।
বর্ণাঢ্য সাজে সজ্জিত করা হয় সমগ্র সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে। গাছে গাছে মরিচবাতি, আশপাশের এলাকায় ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ড এবং মৎস্যভবন থেকে শাহবাগ পর্যন্ত রাস্তা জুড়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনার ছবি দিয়ে সজ্জিত করা হয়। আওয়ামী লীগের ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডের চিত্রসংবলিত ফেস্টুন, উন্নয়ন এবং মেগা প্রকল্পগুলোর ছবি, জাতীয় স্মৃতিসৌধ এবং জাতীয় চারনেতার ছবিও সেখানে শোভা পায়।
সম্মেলনের মূল মঞ্চ তৈরি হয় পদ্মা সেতুর আদলে এবং ১০২ ফুট দীর্ঘ ও ৪০ ফুট প্রশস্থ। মূল মঞ্চটি এমনভাবে স্থাপন করা হয়েছে, যেন পদ্মা নদীর বুকে বিশাল এক নৌকা ভেসে বেড়াচ্ছে। চারপাশ জুড়ে রয়েছে প্রমত্তা পদ্মার বিশাল জলরাশি। পদ্মার জলতরঙ্গ, পদ্মার বুকে ঘুরে বেড়ানো ছোট ছোট নৌকা, এমনকি চরের মধ্যে কাশবনের উপস্থিতিও দেখা যায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মৃতি রোমন্থনে বলেন, আওয়ামী লীগকে সম্পূর্ণভাবে শেষ করে দেয়ার অপচেষ্টা বিভিন্ন সময়ে অনেকেই করেছেন।
তিনি বলেন, পাকিস্তান আমলে ইয়াহিয়া ও আইয়ুব খান এবং ’৭৫-এর ১৫ই আগস্টের পরে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী জিয়াউর রহমান, জেনারেল এরশাদ ও খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসার পর সবার আগে আঘাতটা আওয়ামী লীগের ওপরই এসেছে। কিন্তু জাতির পিতার হাতে গড়া তাঁর আদর্শের এই সংগঠনকে কেউ নিঃশেষ করতে পারেনি।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে ছোট ছোট ভাগে বিভক্ত করার অপচেষ্টাও হয়েছে। আমাদের নিজেদের মধ্যে ভাঙন হয়েছে কয়েকবার। সারাদেশে ঘুরে ধীরে ধীরে দলকে গড়ে তুলেছি। আজ আওয়ামী লীগ দেশের সবচেয়ে বড় এবং শক্তিশালী সংগঠন।’
তিনি বলেন, ‘আঘাত এসেছে বার বার, জাতির পিতাকেও কতবার হত্যার চেষ্টা, মিথ্যা মামলা এবং ফাঁসিতে ঝোলানোর চেষ্টা করা হয়েছে এবং ফাঁসির হুকুম পর্যন্ত হয়েছে। তারপরও তিনি নীতি এবং আদর্শ নিয়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন বলেই আজকে বাঙালি জাতি একটি জাতিরাষ্ট্রের মর্যাদা লাভে সমর্থ হয়েছে।’
জাতির পিতার ১৯৭২ সালে ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড ফ্রষ্টকে দেয়া স্বাক্ষাৎকারের একটি চুম্বক অংশও এ সময় দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী-
‘নেতৃত্ব আসে সংগ্রামের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। কেউ আকস্মিকবাবে একদিনে নেতা হতে পারে না। সংগ্রামের মধ্যদিয়ে আসতে হবে। তাঁকে মানুষের মঙ্গলের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করতে হবে’- জাতির পিতা এই সংগ্রামের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করে যান।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ হচ্ছে বাংলাদেশের একমাত্র দল যে দল এদেশের মানুষকে বাংলা ভাষায় কথা বলার অধিকার দিয়েছে। স্বাধীনতা দিয়েছে এবং অর্থনৈতিক মুক্তির পথে নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি ২০১৩, ১৪ এবং ১৫ সালে আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যার জন্য বিএনপির তীব্র সমালোচনা করেন।
দেশে জঙ্গিবাদ ও বাংলাভাই সৃষ্টি, ২১শে আগস্টের গ্রেনেড হামলাসহ সীমাহীন সন্ত্রাস-নৈরাজ্য’র পাশাপাশি বাংলাদেশকে দুর্নীতিতে পর পর ৫বার চ্যাম্পিয়ন বানানোর জন্য তিনি বিএনপি-জামায়াত সরকারকে পুনরায় অভিযুক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি এমন একটি দল তারা সরকারে থাকলেও সন্ত্রাস করে আর বিরোধী দলে গেলেও সন্ত্রাস করে।’
ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের ২৯টি জেলার কাউন্সিল সম্পন্ন হয়েছে উল্লেখ করে কাউন্সিলরদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই জাতীয় কাউন্সিলের পর পরই বাকি সমস্ত জেলার কাউন্সিলগুলো আমরা করবো। একেবারে তৃণমূল থেকে প্রতিটি ইউনিয়ন, উপজেলা এবং জেলায় কাউন্সিল হবে। এজন্য প্রত্যেকের নামের তালিকা নিয়ে আমাদের একটি সেল কাজ করছে।
শেখ হাসিনা বিভিন্ন জেলা-কাউন্সিলের নতুনভাবে নির্বাচিত নেতৃবৃন্দকে অভিনন্দন জানান। আর যারা করতে পারেননি তারা দ্রুতই এই কাউন্সিল সম্পন্ন করবেন বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘কাউন্সিলের মধ্যদিয়েই সংগঠন চাঙ্গা হয়। সংগঠন আরো শক্তিশালী হয়। কাজেই আমরা সেভাবেই সংগঠনকে গড়তে চাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মূল সম্মেলনে নেতা নির্বাচনের দায়িত্ব থাকে কাউন্সিলরদের ওপর। আগামীকাল সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে তারা নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন এবং আমাদের সাংগঠনিক যে কার্যাবলী তা আমরা সেই কাউন্সিল অধিবেশনেই করবো।’
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। এই এক দশকেই বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, দারিদ্র্যের হার ২০ দশমিক ৫ ভাগে নেমে এসেছে এবং ৯৫ শতাংশ মানুষ বিদ্যুতের সুবিধা ভোগ করছে।
তিনি বলেন, জাতির পিতা যে স্বল্পোন্নত দেশ রেখে গিয়েছিলেন, আজ আমরা উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছি। এটা ধরে রেখে আমাদের লক্ষ্য আরো সামনে এগিয়ে যাওয়া।
এক বৈরী পরিস্থিতিতে দলের হাল ধরার কথা স্মরণ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘রাজনীতি আমার জন্য নতুন নয়। স্কুল জীবন থেকে মিছিলে গিয়েছি দেয়াল টপকে। কলেজ জীবনে সরাসরি রাজনীতি করেছি। কলেজে কলেজে ঘুরে সংগঠন করেছি। কলেজে ভিপি নির্বাচিত হয়েছি। তবে চিন্তাও করিনি আওয়ামী লীগের মতো দলের ভার নিতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৭৫’র নারকীয় হত্যাযজ্ঞের পর ছয়টি বছর দেশে আসতে পারিনি। রেহানার পাসপোর্টটিও রিনিউ করতে পারিনি। জিয়া আমাদের দেশে আসতে দেয়নি। আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্বাচিত করেছিল বলেই জনগণের সাড়া মিলে এবং একরকম জোর করেই দেশে ফিরি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতাকে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করা হয়। বিচারের পথ বন্ধ করা হয়। খুনিদের পুরস্কৃত করে দল করার সুযোগ দেয়া হয়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করে মন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত বানানো হয়। ’
প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালিন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ করতে গিয়ে জীবনদানকারী নেতা-কর্মীদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, ‘যারা আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তাদের শ্রদ্ধা করি। কারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের জন্ম। এ দল ক্ষমতার আলিঙ্গন থেকে প্রতিষ্ঠিত কোনো দল নয়, জনগণের ভেতর থেকে প্রতিষ্ঠিত দল।’
কূটনৈতিক মিশনের সদস্যসহ সম্মেলনে আগতদের এবং আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে তাঁর রাজনৈতিক প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে এবং বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে না। জাতির পিতার সোনার বাংলাদেশ আমরা অবশ্যই গড়ে তুলবো, কাউন্সিল অধিবেশনে এই আমাদের প্রতিজ্ঞা।’

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!