॥সোহেল মিয়া॥ রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত গড়াই নদীতে অসময়ে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। এই ভাঙনের ফলে নদীতে বিলীন হচ্ছে বসতভিটা, কৃষি জমি, গাছপালা, রাস্তা-ঘাট, সড়ক, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা।
গড়াই নদীর ভাঙন প্রতিরোধে কোন স্থায়ী ব্যবস্থা না নেয়ায় পানি বৃদ্ধি ও হ্রাসের সময় জঙ্গল ও নারুয়া ইউনিয়নের ১৩টি গ্রামের মানুষ ভাঙন আতংকে থাকেন। গ্রামগুলো হলো ঃ নারুয়া ইউনিয়নের মরাবিলা, কোনাগ্রাম, জামসাপুর, বাকসাডাঙ্গী, নারুয়া, সোনাকান্দর এবং জঙ্গল ইউনিয়নের পোটরা, আখপোটরা, পুষআমলা, বিজয়নগর, সমাধিনগর, হাবাসপুর, বাঙ্গরদাহ ও তারালিয়া। বিগত কয়েক বছরে এসব গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অব্যাহতভাবে গড়াই নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলো ভাঙনের শিকার হলেও প্রতিরোধে কোন স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় এসব গ্রামের মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে জঙ্গল ইউনিয়নের পুষআমলা গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, গড়াই নদীর পানি কমার সাথে সাথে ভাঙনের কবলে পড়েছে প্রায় ৩০টি বসতবাড়ী। এরই মধ্যে নদীর কূল থেকে নিরাপদ জায়গায় সরে গেছে আরো প্রায় অর্ধশত পরিবার। অনেকেই আবার বাপ-দাদার ভিটা ছেড়ে যেতে চাচ্ছে না।
স্থানীয় বাসিন্দা কুমারেশ, নিমাই ও মাখন বাড়ৈ বলেন, প্রতি বছরই গড়াই নদীর ভাঙনে কৃষি জমি, বসতভিটা, গাছপালাসহ নানা স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ভাঙন প্রতিরোধে সামান্য কিছু সিসি ব্লক বসানো হলেও তা কোন কাজেই আসছে না। সিসি ব্লকগুলো এরই মধ্যে ভেঙে নদীতে চলে গেছে। আমাদের পূর্ব পুরুষরা এই জায়গায় বাস করতো। এখন নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। সরকার যদি দ্রুত স্থায়ী কোন পদক্ষেপ না নেয় তাহলে আমরা নিঃস্ব হয়ে যাবো।
নদীর কূল(পাড়) থেকে সরে যাওয়া কালীপদ বিশ্বাস বলেন, ঘরবাড়ী ভেঙে নদীগর্ভে চলে গেছে। নিঃস্ব হয়ে অন্যত্র গিয়ে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছি।
জঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নৃপেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, প্রতি বছরই গড়াই নদীর ভাঙনে কৃষি জমি বিলীন হচ্ছে। কৃষকরা জমি হারিয়ে বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। নদীতে পানি কমার সাথে সাথে ভাঙনে নদী পাড়ের বসত ভিটাগুলো চোখের সামনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। তাই যত দ্রুত সম্ভব এ বিষয়ে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।