॥স্টাফ রিপোর্টার॥ আগামী ১৬ই ডিসেম্বর থেকে রাষ্ট্রের সর্বস্তরে ‘জয় বাংলা’ জাতীয় শ্লোগান হিসেবে ব্যবহারে হাইকোর্ট অভিমত দিয়েছেন।
‘জয় বাংলা’কে কেন জাতীয় শ্লোগান হিসেবে ঘোষণা করা হবে না- এ প্রশ্নে জারি করা রুল শুনানীকালে গতকাল ১০ই ডিসেম্বর আদালত এ অভিমত দেন।
বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি রক এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চে গতকাল মঙ্গলবার শুনানীকালে আদালত এ মৌখিক অভিমত দেন বলে জানান, ডেপুটি এটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন রিটকারী আইনজীবী সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ড. বশির আহমেদ। এছাড়াও ‘জয় বাংলা’ কে জাতীয় শ্লোগান বিষয়ে আনা রিটের পক্ষে ছিলেন সুপ্রিমকোর্ট বার সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সহ-সভাপতি সিনিয়র আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন, সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, এডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু।
ডেপুটি এটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার সাংবাদিকদের বলেন, আদালত বলেছেন সামনে ১৬ই ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী সব অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রের সর্বস্তরে ভাষণ-বক্তৃতায় ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান ব্যবহার করতে হবে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্র পক্ষে সাবমিশন ছিলো সংবিধানের ৩ ও ৪ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রভাষা, জাতীয় সঙ্গীত, জাতীয় প্রতীক, জাতীয় পতাকার বিষয় থাকলেও জাতীয় শ্লোগানের কথা নেই। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ সংবিধানে আছে। আমরা রাষ্ট্রপক্ষে জাতীয় শ্লোগান হিসেবে ‘জয় বাংলা ‘ঘোষণা বিষয়ে আনা রিটের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছি। এ বিষয়ে এটর্নী জেনারেল মাহবুবে আলম আদালতে বক্তব্য দিয়েছেন।
এডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের সংবিধানে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ সংযোজন আছে। সেই হিসেবে ‘জয় বাংলা’ সংবিধানের অংশ হিসাবে আছে। ভারতসহ বিভিন্ন দেশে জাতীয় শ্লোগান থাকার কথা তুলে ধরেন আমিন উদ্দিন।
ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান আমাদের উদ্দীপ্ত করেছে। এটা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। ‘জয় বাংলা’ জাতীয় শ্লোগান ঘোষণায় সকলেই একমত।
২০১৭ সালের ৪ঠা ডিসেম্বর ওই রিটের শুনানী নিয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। রুলের বিবাদীরা(রেসপনডেন্ট) হচ্ছেন- মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন সচিব ও শিক্ষা সচিব।
ড. বশির আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘জয় বাংলা’ হচ্ছে আমাদের জাতীয় প্রেরণার প্রতীক। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে জাতীয় শ্লোগান আছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের দুর্ভাগ্য যে আমরা আমাদের চেতনার সেই ‘জয় বাংলা’কে স্বাধীনতার এতদিন পরেও জাতীয় শ্লোগান হিসেবে পাই নাই।
তিনি বলেন, ‘জয় বাংলা’ কোনো দলের শ্লোগান নয়, কোনো ব্যক্তির শ্লোগান নয়, এটা হচ্ছে আমাদের ন্যাশনাল ইউনিটি। এই শ্লোগান দিয়ে একদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। বাঙালি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো।
রুলের শুনানীর পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে ১৪ই জানুয়ারী।