॥স্টাফ রিপোর্টার॥ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় পৃথক দুই ধারায় ফেনীর সোনাগাজী মডেল থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনকে ৮বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৬ ধারায় ৫বছর কারাদন্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা এবং ২৯ ধারায় ৩বছর কারাদন্ড ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন গতকাল ২৮শে নভেম্বর এ রায় ঘোষণা করেন।
ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে গতকাল ২৮শে নভেম্বর কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালতে হাজির করে রায় ঘোষণার সময় ট্রাইব্যুনালে নেওয়া হয়।
সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন হয়রানী করেন ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ। এ বিষয়ে নুসরাতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। জিজ্ঞাসাবাদকালে ধারণ করা ভিডিও সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানোর অভিযোগে মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
গত ২১শে নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ এবং আসামীপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গতকাল ২৮শে নভেম্বর রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
গত ১২ই নভেম্বর মামলাটিতে সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। মামলাটিতে ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন ট্রাইব্যুনাল। এরপর ১৪ই নভেম্বর নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করেন ওসি মোয়াজ্জেম।
গত ১৫ই এপ্রিল মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ২৭শে মার্চ অধ্যক্ষ মেয়েটিকে তার কক্ষে নিয়ে যৌন নিপীড়ন করেন বলে অভিযোগ উঠলে তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন অধ্যক্ষ এবং ছাত্রীকে থানায় নিয়ে যান। ওই সময় ওসি নিয়ম বহির্ভূতভাবে জেরা করতে করতে অনুমতি ছাড়াই নুসরাতের বক্তব্য ভিডিও করেন। পরবর্তীকালে ওই ভিডিও ডিজিটাল ফেসবুক ও ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয়।
মামলায় আরো বলা হয়, ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন নিয়ম বহির্ভূতভাবে অনুমতি ছাড়াই নুসরাত জাহান রাফির ভিডিও ধারণ করে ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচার করে এবং অপমানজনক ও আপত্তিকর ভাষা প্রয়োগ করে মানহানি করেছেন, যা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ অনুযায়ী দন্ডনীয় অপরাধ।
আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন। মামলাটি তদন্ত করে ২৩শে মে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এই প্রতিবেদন আমলে নিয়ে মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পরোয়ানা জারির ২০দিন পর ১৬ই জুন মোয়াজ্জেম হোসেনকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
উল্লেখ্য, নুসরাত হত্যা মামলায় গত ২৪শে অক্টোবর ১৬ জনের মৃত্যুদন্ড দিয়ে রায় দিয়েছেন ফেনী আদালত।