॥মেহেদুল হাসান আক্কাছ॥ গোয়ালন্দ উপজেলা কোর্ট চত্ত্বর এলাকায় ঢাকা-খুলনা জাতীয় মহাসড়কে স্থাপিত বিআইডব্লিউটিসি’র ডিজিটাল রোড ভেহিক্যালস্ ওয়েব্রীজ স্কেলটি(ট্রাক ওজন স্কেল) বিকল হয়ে পড়েছে।
এতে করে মহাসড়কের ওই এলাকায় ঘন্টায় ঘন্টায় যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। নানা বিড়ম্বনায় পড়ছে এ রুটে চলাচলরত যানবাহনগুলোর যাত্রী ও চালকরা।
সরেজমিনে গতকাল শুক্রবার দুপুরে দেখা যায়, স্কেলের প্লেটের সাথে স্থাপিত কম্পিউটার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। গত মঙ্গলবার হতে কম্পিউটারের ডিসপ্লেতে ট্রাক ওজনের পরিমান দেখা গেলেও স্লিপ প্রিন্ট বের হচ্ছিল না। বিকাল সারে ৪টা থেকে সারে ৫টা পর্যন্ত কম্পিউটার বিকল থাকায় ট্রাক ওজন কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটে। এ ভাবে মাঝে মাঝেই এমন ঘটনা ঘটছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। এ অবস্থায় পণ্যবাহী যানবাহন গুলোকে পরিমাপ করতে না পেরে পণ্যের চালান দেখে হাতে লিখে রশিদ দেয়া হচ্ছে। এতে করে সময় বেশী লাগায় স্কেলের উভয় পাশে যানবাহন আটকে চালক ও যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
স্কেলে দায়িত্বরত কম্পিউটার অপারেটর রেজাউল হোসেন জানান, এখানে মহাসড়কের কয়েক কিলোমিটার এলাকা প্রশস্থ করা খুবই দরকার। স্কেলেটিতে প্রায়ই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। স্কেলে মেরামত কাজ চলায় আমার হাতে লিখে চালকদের ওজন স্লিপ দিচ্ছি। তাছাড়া যানবাহনের ওজন করার জন্য প্রতিনিয়ত দীর্ঘ সিরিয়ালের সৃষ্টি হচ্ছে। পাশে থাকা সরকারী হাসপাতালে প্রায়ই এ্যাম্বুলেন্সসহ রোগী বহনকারী যানবাহন যাওয়া-আসা করতে পারে না। যানবাহনের উচ্চ শব্দে রোগীদের খুবই সমস্যা হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিসি’র প্রকৌশলী শুভ্রদেব পাল জানান, ওয়েব্রীজের স্কেলটির নিচে স্থাপন করা সেন্সর ঠিকমত কাজ করছে না। এ জন্য শুক্রবার বেলা ৩টার দিকে স্কেলটি পুনরায় খুলে রিফ্রেস করার কাজ শুরু হয়েছে। স্কেলটি চালু করতে অন্তত তিন দিন সময় লাগবে বলে তিনি জানান।
স্থানীয়রা আশঙ্কা প্রকাশ করে জানান, স্কেলটির ওজন কার্যক্রম ঠিক করা হলেও যানজট আগের মতই থাকবে। কারন ট্রাকের সিরিয়াল মহাসড়কের অর্ধেকটা জুড়ে দাড়িয়ে থেকে যানজটের সৃষ্টি করে। সেক্ষেত্রে স্কেল থেকে কমপক্ষে দক্ষিনে অন্তত ২কিলোমিটার সড়ক চওড়া করা হলে এই সমস্যা থাকবে না বলে তারা জানান।
বিআইডব্লিউটিসি সুত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যায়ে স্কেলটি স্থাপন করা হয়েছিল। ঢাকার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স বেলাল এন্ড ব্রাদার্স কোম্পানী স্কেলটি স্থাপন করে। তৎকালীন সময় ৩ মাস পর থেকেই স্কেলের মেরামতের কাজ করতে হচ্ছিল। মাত্র তিন বছরের মাথায় আবার ২০১৭ সালের শেষ দিকে ৩৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে স্কেলটি পুনরায় মেরামত করা হয়। আড়াই বছর পর আবারও স্কেলটি পুনরায় বিকল হয়ে পড়ায় অভিজ্ঞ মহলের অনেকেই বলছেন, স্কেলটি স্থাপনের সময় অপরিকল্পিত ভাবে নি¤œমানের মালামাল ব্যবহার ও সঠিকভাবে অবকাঠামো তৈরী না করার ফলেই এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিসি’র দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক আবু আব্দুল্লাহ জানান, স্কেলটি রিফ্রেস করে সেটিং এর কাজ শুরু করা হয়েছে। আশা করছি নতুন করে সেটিং করা হলে হয়ত আর এ ধরনের সমস্যা থাকবে না।