॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ স্বাধীনতার মহান স্থপতি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গতকাল ৬ই নভেম্বর বেলা ১১টায় ২য় প্রস্তুতিমূলক সভা কালেক্টরেটের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগমের সভাপতিত্বে সভায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর) মোঃ ফজলুল করিম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মোহাম্মদ আশেক হাসান, জাতীয় মহিলা সংস্থার রাজবাড়ী জেলা শাখার চেয়ারম্যান তানিয়া সুলতানা কংকন, জেলা তথ্য অফিসার(অতিরিক্ত দায়িত্ব) শাহিন আলম, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মোঃ আলীমুর রেজা, জেলা শিল্পকলা একাডেমীর কালচারাল অফিসার পার্থ প্রতিম দাস, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোঃ হেদায়েত আলী সোহ্রাব, বীর মুক্তিযোদ্ধা মহসীন উদ্দিন বতু, এনজিও রাসের নির্বাহী পরিচালক লুৎফর রহমান লাবু ও ডাঃ আবুল হোসেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সহকারী অধ্যপক শামীমা আক্তর মুনমুন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম, রাজবাড়ী সরকারী আদর্শ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর দিলীপ কুমার কর, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক মোঃ বাকাহীদ হোসেন, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী খান এ শামীম, সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী(চঃ দাঃ) কে.বি.এম সাদ্দাম হোসেন, জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণ, রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বলেন, সারা দেশের ন্যায় রাজবাড়ীতেও অত্যান্ত জাঁকজমকপূর্ণভাবে স্বাধীনতার মহান স্থপতি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উদযাপনের লক্ষে কিছুদিন আগে ১ম প্রস্তুতিমূলক সভায় যে সমস্ত নির্দেশনাগুলো ছিল তার অগ্রগতি এবং কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর মধ্যে নতুন আরও যা যুক্ত হয়েছে সেগুলো পালনের বিষয়ে আলোচনার জন্য আজকে ২য় প্রস্তুতিমূলক সভার আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীর ১০০ দিনের কাউন্ট ডাউনের(গণনার) জন্য সারা দেশের ন্যায় রাজবাড়ীতেও বড় আকৃতির একটি ডিজিটাল বোর্ড স্থাপন করা হবে। সেটির নিরাপত্তা, বিদ্যুৎ সংযোগসহ অধিক মানুষের সমাগম হয় এমন স্থানে স্থাপন করতে হবে। সেই সমস্ত দিক বিবেচনা করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের কাছাকাছি স্থাপন করলে সবদিক থেকেই ভালো হয় বলে সকলের মতামতের ভিত্তিতে সেখানেই বোর্ডটি স্থাপন করা হবে। সেটি স্থাপনের পর ১০০ দিনের কাউন্ট ডাউন শুরুর আগে আনুষ্ঠানিকভাবে সেটির উদ্বোধন করা হবে। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক আগামী ১৭ই মার্চ (২০২০) বঙ্গবন্ধুর জন্ম দিন থেকে পরের বছরের (২০২১) ১৭ই মার্চ পর্যন্ত এক বছরব্যাপী বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে পালন করা হবে। সেই লক্ষ্যে প্রতিটি সরকারী বিভাগের কাছ থেকে তাদের স্ব-স্ব উদ্যোগে কি কি অনুষ্ঠান পালন করা হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রদানের জন্য বলা হয়েছিল। এর মধ্যে যারা এখনও তাদের কর্মসূচী প্রদান করেন নাই তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে আপনাদের কর্মসূচী জমা দিবেন। যাতে জেলা প্রশাসন সব অনুষ্ঠান সমন্বয়ের মাধ্যমে বছরব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করতে পারে। এ সকল অনুষ্ঠানমালার বিস্তারিত তথ্য জনগণকে জানানোর জন্য একজন ফোকাল পার্সনসহ একটি মিডিয়া কর্ণার স্থাপনের মাধ্যমে সমস্ত তথ্য প্রচারের ব্যবস্থা করা হবে। যেহেতু বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ১৭ই মার্চকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হয় সে জন্য এই বছর অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে আরো বেশী জমকালোভাবে জেলা শিশু একাডেমীকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে হবে। বঙ্গবন্ধু যেহেতু নির্বাচনী প্রচারণায় রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন জয়গায় বাই সাইকেলে করে ঘুরেছেন সে জন্য তার জন্মশত বার্ষিকীতে একটি বাই সাইকেল চালানোর প্রতিযোগিতার আয়োজন করাসহ রচনা, চিত্রাংকন, বিতর্ক ইত্যাদি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে। জেলা শিল্পকলা একাডেমী বছরব্যাপী বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করবে। প্রতিটি সরকারী বিভাগকে নতুন কিছু উদ্ভাবন করে বঙ্গবন্ধুর জন্য সেটি উৎসর্গ করার চেষ্টা করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীতে সকল সরকারী বিভাগ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও যে কোন বেসরকারী প্রতিষ্ঠান বা সাংস্কৃতিক সংগঠন যে কেউ জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীতে অনুষ্ঠান করতে পারবে। তবে যারাই যে কর্মসূচী পালন করুক না কেন সেটি যাতে জেলার তৃণমূল পর্যায়ের মানুষ জানতে ও অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
এছাড়াও সভায় বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উদযাপনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি শহরের বড়পুল থেকে রেলগেট পর্যন্ত প্রধান সড়কটি বঙ্গবন্ধুর নামে নামকরণ, জন্মশত বার্ষিকীর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে জঙ্গী গোষ্ঠীর যে কোন ধরনের নাশকতা প্রতিরোধে পর্যপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা, ১৭ই মার্চ জমকালো উদ্বোধন অনুষ্ঠান, কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে, কনসার্ট, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, বিভিন্ন প্রতিযোগিতার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ কেন্দ্রীয় কর্মসূচীগুলো পালনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।