॥এম.এইচ আক্কাছ॥ ঢাকা-খুলনা জাতীয় মহাসড়কের রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দের ব্যস্ততম রেলক্রসিং-এ দীর্ঘদিন ধরে কোন গেট না থাকায় বর্তমানে গেটের কাজ চালানো হচ্ছে পুরাতন বাঁশ দিয়ে। অরক্ষিত এই রেলক্রসিং-এ যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশংকা বিরাজ করছে।
দৌলতদিয়া-খুলনা রেল লাইনের উপর দিয়ে ক্রসিং হওয়া ঢাকা-খুলনা জাতীয় মহাসড়কের গোয়ালন্দ উপজেলা কমপ্লেক্স এলাকার অদূরে উপজেলা রেলগেট নামে পরিচিত এই গেট দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। বর্তমানে ব্যস্ততম গেটটিতে অত্যন্ত নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ট্রেনর আসার সংকেত পেলে গেটের দায়িত্বরত গেটম্যান কাঁধে করে পুরাতন একটি বাঁশ এনে গেটের একপাশে ব্রেরীয়ার হিসেবে ফেলে রাখে। অপর পাশে লাল-নীল রংয়ের ফ্লাগ হাতে ঝুঁকি নিয়ে গাড়ীর সামেন দাঁড়িয়ে থাকে। অনেক সময়ই দ্রুত গতির যানবাহনগুলো বাঁশের তোয়াক্কা না করে রেল লাইনের কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। কখনও দেখা যায় ট্রেন সামান্য একটু দূরে থাকলে গেটম্যানকে তোয়াক্কা না করে গেট পার হয়ে চলে যায়। এভাবে পার হওয়ার সময় লাইনের মধ্যে হঠাৎ কোন গাড়ীর ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গেলে মারাত্মক দুর্ঘটনা ও ট্রেনে কাটা পড়ে প্রাণহানি নিশ্চিত।
জানা গেছে, মেসার্স মাহবুব এন্ড ব্রাদার্স নামে ঢাকার একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গোয়ালন্দের এই রেলগেটসহ রাজবাড়ী জেলার রেলগেটগুলোর মেরামত ও নতুন রেলগেট স্থাপনের দায়িত্ব পেয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আব্দুস সালাম নামে রাজবাড়ীর একজন ঠিকাদার কাজগুলোর সাব-কন্ট্রাক্ট নিয়েছে। স্থানীয় ঠিকাদার নি¤œমানের মালামাল দিয়ে কাজ সম্পন্ন করার চেষ্টা করছে।
গতকাল ৪ঠা নভেম্বর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সরেজমিনে গোয়ালন্দ রেলগেটে গিয়ে দেখা যায়, খুলনা থেকে ছেড়ে আসা দৌলতদিয়া ঘাটগামী নকশী কাঁথা এক্সপ্রেস মেইল ট্রেনটি গেট পার হচ্ছে। এ সময় মিতুল কুমার সরকার ও সোহেল রানা নামে ২জন গেটম্যান একটি বাঁশ কাঁধে নিয়ে গেটের স্ট্যান্ডের উপর আড়াআড়িভাবে নমিয়ে দেয়। ট্রেনটি গেট পার হয়ে চলে যাওয়ার পর তারা পুনরায় বাঁশটি সড়কের বাইরে নিয়ে রেখে দেয়।
এছাড়া ট্রেন পার হওয়ার সময় শরিফুল নামে অপর এক গেটম্যান লাল-সবুজ পতাকা হাতে নিয়ে গেটের অপর প্রান্তে সড়কের মাঝখানে গাড়ীর সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। গেটম্যানরা জানান, প্রায় ৭মাস আগে রেলগেটের ব্রেরীয়ার ভেঙ্গে যায়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। মেরামতকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গেটটি মেরামতের কাজ করার কথা থাকলেও তারা এখনো তা করেনি।
এ বিষয়ে রাজবাড়ী রেলওয়ের আইডব্লিউ হাফিজুর রহমান এবং এইএন আবু বক্কার সিদ্দিক জানান, গেট ব্রেরীয়ার মেরামতের কাজটি চলমান আছে। ঢাকার মেসার্স মাহবুব এন্ড ব্রাদার্স নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রেলগেটগুলোর কাজ পেয়েছে। তারা আঃ সালাম নামে স্থানীয় একজন ঠিকাদারকে সাব-কন্ট্রাক্ট দিয়েছে। তবে কবে নাগাদ রেলগেটগুলোর ব্রেরীয়ার ঠিক হবে তারা তা বলতে পারেননি।