বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫০ অপরাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

রাজবাড়ী ম্যাটারনিটির চিকিৎসক গোপালের কাছে অসহায় রোগীরা জিম্মি॥কর্তৃপক্ষ নীরব

  • আপডেট সময় বুধবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৯

॥হেলাল মাহমুদ/ইউসুফ মিয়া॥ রাজবাড়ী মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডাঃ গোপাল চন্দ্র সুত্রধরের বিরুদ্ধে শিউলি বেগম নামে সিজারিয়ান এক রোগীর সাথে খারাপ আচরণ করে তাড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
গত ১০ই অক্টোবর ডাঃ গোপাল চন্দ্র সুত্রধর ওই নারীকে রাজবাড়ী মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের সামনের বেসরকারী ক্লিনিকে সিজার করেছিলেন। ওই নারীর বাড়ী রাজবাড়ী শহরের বিনোদপুর এলাকায়।
শিউলি বেগম জানান, গত ১১ই অক্টোবর রাতে স্বামী ইকরাম হোসেনের সাথে প্রসব বেদনা নিয়ে তিনি নিরাময় ক্লিনিকে আসেন। এ সময় ক্লিনিকের এক মহিলা স্টাফ তার অবস্থা দেখে তাকে ফরিদপুরে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। ঠিক ওই মুহুর্তে ডাঃ গোপাল চন্দ্র সুত্রধর এসে তাকে দেখে বলেন ফরিদপুর নেয়া লাগবে না, এখানেই আপনার সিজার করা হবে। এরপর তিনি ওই ক্লিনিকে ভর্তি হলে রাতেই তার সিজার করেন ডাঃ গোপাল চন্দ্র সুত্রধর। গত ১৩ই অক্টোবর তিনি ক্লিনিক থেকে বাড়ীতে চলে আসেন। বাড়ীতে আসার সময় ডাঃ গোপাল তাকে প্রতিদিন ৪টি করে ডিম, এক কেজি করে দুধ ও ৪ থেকে ৫টা মালট্টা খেতে বলেন। তিনি সাধ্য মতো এসব খাবার খান। বাড়ী যাওয়ার কয়েকদিন পর দেখেন তার পেটের কাটা স্থান ভিজে যাচ্ছে। তখন তার বোন মোবাইল দিয়ে ছবি তুলে দেখেন পেটের ওই অংশে দুইভাগে ভাগ হয়ে রয়েছে এবং সেখান থেকে পুঁজ বের হচ্ছে। তখন তিনি ওই ক্লিনিকে আসেন সেলাই কাটতে। সেলাই কাটতে এসে ডাক্তার না পেয়ে ওই মেয়েটা যে তাকে ভর্তি নিতে চেয়েছিল না সেই তাকে সেলাইটা কাটেন। ওই সময় ক্ষত স্থানে টান মেরে মেরে তার সেলাই কাটা হয়েছে। ওই সময় তিনি খুব চিৎকার করে ছিলেন। তখন তার বোন এ রকম ফাঁক হয়ে রয়েছে কেন জানতে চাইলে ওই মহিলা বলেন কোন সমস্যা নাই। এটা ঠিক হয়ে যাবে। পরে উনি ড্রেসিং করে দিয়ে বলেন বাসায় গিয়ে সাবান টাবান দিয়ে গোসল করেন ভাল হয়ে যাবেন। তার পরের দিন তিনি ম্যাটানিটিতে ডাঃ গোপাল চন্দ্র সুত্রধরের চেম্বারে আসেন। নার্সরা একটা স্লিপ কেটে ড্রেসিং করে দেয়। এরপর ডাঃ গোপাল তাকে জিজ্ঞাসা করেন ঠিক মতো খেয়েছেন কিনা। তখন তিনি বলেন ব্যাথায় ঠিক মতো খেতে পারি না। এরপর ডাঃ গোপাল তাকে ওষুধ পত্র লিখে দিয়ে প্রচন্ড খারাপ আচরণ করে বলেন আমার কাছে আর আসার দরকার নাই। এখানে আর আসবে না।
পরে শিউলি বেগম সুচিকিৎসার জন্য ডাঃ আবু হান্নানের কাছে গিয়ে চিকিৎসা নেন এবং বর্তমানে তিনি সুস্থ্য আছেন বলে জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডাঃ হান্নান বলেন, তার পেটের ওই স্থানে টিসু হিলিং হয়নি। যার ফলে জয়েন্ট হয় নাই। ভাগ হয়ে ছিল। আমি আবার তার ওই স্থানে সেলাই করে দিয়েছি। আমি ডায়াথিন ব্যবহার করেনি। ৮/৯দিনের মধ্যেই তিনি সুস্থ হয়ে যাবেন।
এ ব্যাপারে ডাঃ গোপাল চন্দ্র সুত্রধরের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আপনারা কোন রোগীর কথা বলছেন আমি বুঝতে পারছিনা। কারণ এখানে প্রতিদিন বহু রোগী আসেন। সবার কথা মনে রাখা সম্ভব না। আমি এখানে প্রতিমাসে ৪০/৪৫জনকে সিজার করি। এখানে যাদের সিজার করা সম্ভব হয়না তাদের বাইরের ক্লিনিকে করি। তবে আপনারা যে অভিযোগ করছেন তা সত্য নয়। আমি কোন রোগীর সাথে খারাপ আচরন করি না। আগে যেখানে মাসে ১৫/১৬টা সিজার হতো এখন আমি সেখানে ৪০/৪৫টা সিজার করি। ওই রোগীর যদি ইনফেকশন হয়ে থাকে তার গাফিলতির কারণে হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমি এখানে সিজার বেশী করার কারণে কিছু কুচক্রী মহল আমাকে তাড়ানোর ষড়যন্ত্র করছে।
সরেজমিন রাজবাড়ী মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে(ম্যাটারনিটি) গিয়ে জানা গেছে, ডাঃ গোপাল চন্দ্র সুত্রধর রাজবাড়ীতে যোগদানের পর থেকে ম্যাটারনিটির কর্মচারীদের চাপের মুখে রেখে রমরমা প্রাইভেট প্র্যাকটিস বানিজ্য করে চলেছেন। এ কেন্দ্রে কোন মহিলা চিকিৎসার জন্য এলে তাকে আগে তার কাছে প্রাইভেট দেখাতে হয় এবং পরে তিনি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে চিকিৎসা দেন। বেশীর ভাগ রোগীকে তিনি দালালের মাধ্যমে ভাগিয়ে ক্লিনিকে পাঠিয়ে সিজার করেন। তার অফিস সময় শেষ না হতে বেলা আড়াইটা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ম্যাটারনিটি সরকারী বাসায় রোগী দেখার পরে রাতভর শহরের বিভিন্ন ক্লিনিকে সিজার বানিজ্য করেন।
অভিযোগ আছে, ম্যাটারনিটির কর্মচারীদের দিয়ে তার বাসার বাজার সদাই ও রান্নার কাজও করান গুনধর এই চিকিৎসক। তার নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক কার্যালয় ম্যাটারনিটির সাথে অবস্থিত হলেও অদৃশ্য কারণে এ কার্যালয় যেন কোন নিয়ন্ত্রণ নেই তার কর্মকান্ডের উপর। যার ফলে ম্যাটারনিটিতে পূর্বের তুলনায় রোগীর সংখ্যা কমেছে।
এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ভূক্তভোগীরা উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষে আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!