Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

কাটাখালীতে চৈত্র সংক্রান্তির চড়ক পূজায় বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থী

SAMSUNG CAMERA PICTURES

॥দেবাশীষ বিশ্বাস॥ চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট ভাকলা ইউনিয়নের কাটাখালী চড়ক খোলা মাঠে গত ১৪ই এপ্রিল সন্ধ্যায় চড়ক পূজা অনুষ্ঠিত হয়। হাজার হাজার দর্শনার্থী গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী এ অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
জানাগেছে, ছোট ভাকলা ইউনিয়নের মালিপাড়া গ্রামে চৈত্র মাসের শেষ দিনে(পঞ্জিকা মতে) গত ২৪ বছর চলে আসছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এই চড়ক পূজা। পূজা উপলক্ষে খোলা মাঠে পুরাতন একটি চড়ক গাছে ধর্মীয় বিধি মোতাবেক এই পূজার আয়োজন করা হয়।
সন্যাসীরা উপবাস থেকে পুরোহিতদের কাছ থেকে পিঠে বড়শি এবং জিহ্বায় লোহার শিক গেঁথে চড়ক গাছ প্রদক্ষিণ করে। পরে চড়ক গাছের দুই দিকে দু’জন সন্যাসীকে পিঠে বড়শি গেঁথে শূন্যে ঘোরানো হয়।
চড়ক পূজা কবে কিভাবে শুরু হয়েছিল তার সঠিক ইতিহাস জানা যায়নি। তবে জনশ্র“তি রয়েছে, ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে সুন্দরানন্দ ঠাকুর নামে এক রাজা এই পূজার প্রচলন করেন। রাজ পরিবারের লোকজন এই পূজা আরম্ভ করলেও চড়কপূজা কখনো রাজ-রাজাদের পূজা ছিল না। এটি ছিল হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক সংস্কৃতি।
চড়ক পূজা দেখতে জেলার বাইরে থেকে ছুটে এসেছিল বিভিন্ন বয়সের মানুষ। অনেকের কাছে এই অনুষ্ঠান একবারেই নতুন।
আয়োজক কমিটির সদস্য বাদল বিশ্বাস জানান, ২৬বছর ধরে সাহসী যুবকদের পিঠে বড়শি দিয়ে শূন্যে ঘোরানো হয়। এবার রাজীব বিশ্বাস এবং দেবদাস বিশ্বাস এই দুই চড়ক সন্যাসী চড়ক গাছে শূন্যে ভাসে।
সব ধর্মের মানুষের সহযোগিতায় এই অনুষ্ঠান পালন করছেন বলে জানিয়েছেন আয়োজক কমিটির অপর সদস্য বাবলু বিশ্বাস। তিনি জানান, হিন্দু ধর্মালম্বীদের এই অনুষ্ঠান প্রাচীনকাল থেকে চলে আসছে। কালের আবর্তে অনেক স্থানে হারিয়ে গেছে গ্রাম-বাংলার চিরাচরিত এই অনুষ্ঠান। সবার সহযোগিতায় এই অনুষ্ঠান আরো বড় করে করা হবে-এমনটাই প্রত্যাশা আয়োজক ও দর্শকদের।
পূজা দেখতে আসা পঙ্কজ বিশ্বাস নামে এক দর্শনার্থী জানান, সত্যি অসাধারণ এক অনুভূতি। পিঠে বড়শি দিয়ে শূন্যে ভাসানো কঠিন এক সাধনার ব্যাপার।