॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন ও জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের কার্যালয়ের আয়োজনে ‘১৮ বছরের আগে বিয়ে নয়, ২০ বছরের আগে বিয়ে নয়’-শীর্ষক প্রতিবাদ্যকে সামনে রেখে কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা তহবিল কর্মসূচীর আওতায় গতকাল ৩রা সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় রাজবাড়ী পৌরসভার উপকারভোগীদের স্বাস্থ্য সেবা জোরদার করার লক্ষ্যে দুই দিনব্যাপী হেলথ ক্যাম্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শহরের সেগুনবাগিচাস্থ জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বক্তব্য রাখেন। জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নূরে সফুরা ফেরদৌসের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বার।
এছাড়াও অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে জেলা শিক্ষা অফিসার(ভারপ্রাপ্ত) শামসুন্নাহার চৌধুরী, মেরীস্টপ ক্লিনিকের জেলা ম্যানেজার এডঃ ইউনুস আলী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মৃন্ময়ী মহিলা সমিতির নির্বাহী পরিচালক নাহিদা ইসলাম। এ সময় জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কর্মকর্তাগণ, মেরীস্টপ ও সূর্যের হাসি ক্লিনিকের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীগণসহ রাজবাড়ী পৌরসভার ১, ২, ৩ ও ৪নং ওয়ার্ডের ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা তহবিলের উপকারভোগী মায়েরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বলেন, আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আজকে যে শিশুটি জন্মগ্রহণ করছে সেই শিশুসহ জন্মদাত্রী মাকে সুস্থ ও সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য অবশ্যই নিজের ও শিশুর স্বাস্থ্য-পুষ্টি সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। যাতে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সুস্বাস্থ্য ও মেধাসম্পন্ন হয়ে গড়ে উঠে ভবিষ্যতে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখতে পারে। আর সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই বর্তমান সরকার মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য তাদেরকে ভাতা প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করছে। আমাদের সকলের মনে রাখা উচিত কোন অবস্থাতেই ১৮ বছরের নীচে কোন মেয়ের যাতে বিয়ে না হয়। ১৮ বছরের নীচে কোন মেয়ের বিয়ে হলে এবং ২০ বছরের নীচে সন্তান হলে অনেক ধরনের স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দেয়। বর্তমানে যারা এ ধরনের সমস্যায় রয়েছে তাদের মেয়ে সন্তানদের ক্ষেত্রে যাতে ১৮ বছরের নীচে বিয়ে না হয় সে ব্যাপারে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে। কারণ সকল মা-ই তার বাচ্চাটি যাতে সুস্থ-সবল ও পুষ্টি সমৃদ্ধ হয়। এর জন্য বর্তমান সরকার ল্যাকটেটিং মায়েদের ভাতা বাড়িয়ে ৮শ’ টাকা করেছে। এমন একসময় ছিল যখন চাকরীজীবী মায়েদের ৪মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি দেয়া হতো। এতে কর্মজীবী মায়েরা তার শিশুদের প্রতি খেয়াল রাখতে পারতো না। কিন্তু বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি উপলদ্ধি করতে পেরে চাকরীজীবী মহিলাদের সেই ছুটি ৬ মাস করায় মায়েরা তাদের শিশুর প্রতি খেয়াল রাখতে পারছে। যার ফলে শিশুটি সুন্দর ও সুস্থভাবে বেড়ে উঠছে। এই শিশুই আগামীর ভবিষ্যৎ হয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে নিজেকে আত্মনিয়োগ করতে পারবে বলে তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
এছাড়াও তিনি তার বক্তব্যে মায়েদেরকে ডেঙ্গু সম্পর্কে সচেতন থেকে বাড়ীর আশপাশে পরিষ্কার রাখাসহ নিজেদের শিশুদের প্রতি আরও যতœশীল হওয়ার আহ্বান জানান। বক্তব্যের শেষে তিনি ল্যাকটেটিং মায়েদের মধ্যে স্বাস্থ্য সামগ্রী বিতরণের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন।
পরে জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের চলমান টিস্যু বানানো, বিউটিফিকেশন ও সেলাই প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ঘুরে দেখেন। দুই দিনব্যাপী এই হেলথ ক্যাম্পের পাশাপাশি রাজবাড়ী পৌরসভার ১, ২, ৩ ও ৪নং ওয়ার্ডের ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা তহবিলের উপকারভোগী মায়েদের মধ্যে ভাতার অর্থ বিতরণ করা হবে।