॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ আগামী ১৫ই আগস্ট হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস যথাযথ মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গতকাল ২৯শে জুলাই বেলা ১১টায় প্রস্তুতিমূলক সভা কালেক্টরেটের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগমের সভাপতিত্বে সভায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বার, পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মোঃ সালাহ উদ্দিন, সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ মোস্তাফিজার রহমান সরকার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মোহাম্মদ আশেক হাসান, রাজবাড়ী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার কামরুল ইসলাম গোলদার, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রুবাইয়াত মোঃ ফেরদৌস, জেলা তথ্য অফিসার তাহমিনা আক্তার, জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নূরে সফুরা ফেরদৌস, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা আলীমুর রেজা, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হেদায়েত আলী সোহ্রাব, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এডঃ শফিকুল আজম মামুন, এনজিও রাসের নির্বাহী পরিচালক লুৎফর রহমান লাবু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় রাজবাড়ী সরকারী আদর্শ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর দিলীপ কুমার কর, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী খান এ শামীম, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শম্ভুরাম পাল, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাঈদুজ্জামান খান, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাঃ মজিনুর রহমান, জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনারগণ, বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, এনজিও প্রতিনিধি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে সঠিকভাবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বলেই আমরা আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে পেয়েছি। বঙ্গবন্ধুকে ছাড়া বাংলাদেশকে চিন্তা করা অসম্ভব। আজকে তার কারণে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করছি। আর সেই বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের সদস্যদের পাকিস্তানের মদদপুষ্ট একটি কুচক্রী মহল রাতের অন্ধকারে ইতিহাসের নৃশংসভাবে হত্যা করে। সেদিন আমি চিন্তা করেছিলাম মানুষ কতোটা জঘন্য হতে পারলে জাতির পিতাকে এভাবে হত্যা করতে পারে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের সকলের উচিত ১৫ই আগস্ট তার শাহাদৎ বার্ষিকী গভীর শ্রদ্ধা ও যথাযথ মর্যাদার সাথে পালন করা। রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর যে ভাস্কর্যটি রয়েছে, আমার কাছে মনে হয়েছে সেটির আরো সৌন্দর্যবর্ধণ সম্ভব। এই বিষয়টি মাথায় রেখে মূল ভাস্কর্যকে ঠিক রেখে এর আরো সৌন্দর্যবর্ধণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। আগামী ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধুর শাহাদৎ বার্ষিকী যথাযথভাবে পালনের লক্ষ্যে জাতীয় ও জেলা পর্যায়ের সকল কর্মসূচীতে সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অবশ্যই উপস্থিত থাকতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সভায় ১৫ই আগস্ট সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে উত্তোলন, সকাল ৯টায় কালো ব্যাজ ধারণ ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, সোয়া ৯টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্ত্বরের আ¤্রকানন থেকে শোক র্যালী, র্যালী শেষে সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের আ¤্রকানন চত্ত্বরে আলোচনা সভা ও পুরষ্কার বিতরণ, বাদ যোহর সকল মসজিদে বিশেষ মোনাজাত, সুবিধাজনক সময়ে অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনা, ১৪, ১৫ ও ১৬ই আগস্ট ৫টি উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তথ্য অফিসের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর উপর তথ্যচিত্র প্রদর্শন, ৭ই আগস্ট হাই স্কুল পর্যায়ে এবং ১০ই আগস্ট প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে রাজবাড়ী অফিসার্স ক্লাবে বঙ্গবন্ধুর উপর রচনা, চিত্রাংকন, কবিতা আবৃত্তি, ছড়া ও বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করা হবে বলে জানানো হয়। ১৫ই আগস্টের দিন পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ সুপারকে সভার পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়।
এছাড়াও বিভিন্ন সরকারী দপ্তর ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ জাতীয় কর্মসূচী ও জেলা প্রশাসনের কর্মসূচীর সাথে সমন্বয় রেখে তাদের স্ব-স্ব উদ্যোগে কর্মসূচী পালন করবে এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তথ্য অফিস ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মাদ্রাসায় বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কিত বই বিতরণ করা হবে জানানো হয়।