॥চঞ্চল সরদার॥ মানসম্পন্ন বেসরকারী টিচার্স ট্রেনিং কলেজসমূহের এমপিওভুক্তির দাবীতে বেসরকারী টিচার্স ট্রেনিং কলেজ শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
গতকাল ১৫ই জুলাই সমিতির রাজবাড়ী জেলা শাখার পক্ষ থেকে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক আলমগীর হুছাইনের মাধ্যমে এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপি প্রদানের সময় সমিতির জেলা শাখার সভাপতি মোহাম্মদ আলীসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এসডিজি বাস্তবায়নের মাধ্যমে উন্নত বাংলাদেশ গড়তে শিক্ষক প্রশিক্ষণের কোন বিকল্প নাই। ১৯৯২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বেসরকারী টিচার্স ট্রেনিং কলেজগুলোর যাত্রা শুরু হলেও ১৯৯৬ সাল থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত হয়ে আসছে। দীর্ঘ ২৭ বছরে প্রায় ২ লক্ষ শিক্ষক এসব কলেজ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশ ও জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। বেসরকারী টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে মাধ্যমিক শিক্ষকরা এমপিওভুক্ত হচ্ছেন, জাতীয় স্কেলে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় আমরা যাদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে জাতি গঠনে অবদান রাখলাম-যারা শিক্ষকদের শিক্ষক তাদেরকে আজও এমপিওভুক্ত কিংবা সরকারী কোন সুযোগ-সুবিধার আওতায় আনা হয়নি। এসব শিক্ষকরা বছরের পর বছর নামমাত্র বেতনে কিংবা বিনা বেতনে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছেন। এসব শিক্ষকরা যে শুধু বেতন-ভাতা পাচ্ছে না তাই নয়, তাদেরকে দেশ-বিদেশের কোন ট্রেনিংয়ের সাথেও যুক্ত করা হচ্ছে না। বেসরকারী টিচার্স ট্রেনিংগুলোর শিক্ষকদের মধ্যে এখনো ডিজিটাল কোন ছোঁয়া লাগেনি। তারা তথ্য-প্রযুক্তির উপর কোন ট্রেনিং পায়নি এবং কলেজগুলোতে ডিজিটাল ল্যাব কিংবা পাঠদানে কোন সহায়তাও করা হয়নি। বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ৭১টি কলেজে প্রায় ১৫শত শিক্ষক ও ১০ হাজার প্রশিক্ষণার্থী অধ্যয়ন করছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রশিক্ষণের শতকরা প্রায় ৭৫ ভাগই বেসরকারী টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে আসছে। সরকারী ও বেসরকারী কলেজগুলোতে এক ও অভিন্ন কারিকুলাম অনুসরণ করা হলেও সুযোগ-সুবিধার বিবেচনায় উভয় প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আকাশ-পাতাল বৈষম্য বিরাজ করছে। এতে উন্নত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এমতাবস্থায় আমরা বেসরকারী টিচার্স ট্রেনিং কলেজগুলোতে কর্মরত সকল শিক্ষক-কর্মচারীকে এমপিওভুক্তকরণ, সরকারী কলেজগুলোর শিক্ষকদের ন্যায় দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুযোগ দান, প্রতিটি বেসরকারী টিচার্স ট্রেনিং কলেজে ডিজিটাল ল্যাব স্থাপনসহ তথ্য-প্রযুক্তির সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নামে একখ- করে নিষ্কন্টক জমি চিরস্থায়ীভাবে বন্দোবস্ত দেয়া, প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রশিক্ষণার্থী ও শিক্ষকদের আবাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দাবী জানানো হয়।