॥কাজী তানভীর মাহমুদ॥ রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে মেশিন ৫বছরের বেশী সময় ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে।
এর ফলে পাংশা উপজেলাবাসী চিকিৎসায় এক্স-রে’র সেবা গ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এই সুযোগে প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো রমরমা এক্স-রে বাণিজ্য করে আসছে।
পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের প্রথম দিকে এক্স-রে মেশিনটি বিকল হয়ে পড়ে। এরপর থেকে নাকি অনেকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোন সুরাহা মেলেনি।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা হাত ভাঙ্গা রোগী মোঃ সোহাগ(৪৩) বলেন, হাত ভেঙ্গে যাওয়ায় এখানে এসে এক্স-রে করাতে গিয়ে শুনলাম হাসপাতালে এক্স-রে মেশিন নষ্ট। তাই বাধ্য হয়ে বাজারের প্রাইভেট ক্লিনিক থেকে এক্স-রে করালাম।
পাট্টা ইউনিয়ন থেকে বুকের চিকিৎসা করাতে আসা মামুন মিয়া(৫৪) বলেন, চিকিৎসক এক্স-রে করাতে বলেছেন। কিন্তু হাসপাতালের এক্স-রে মেশিনটি নাকি নষ্ট। তাই বাইরের থেকে করাতে হবে।
পায়ের এক্স-রে করাতে আসা শেফালী বেগম(৪০) বলেন, ক্লিনিকে একটি ডিজিটাল এক্স-রে করাতে গেলে লাগে ৫শ’ টাকা। সরকারী হাসপাতালে লাগতো ২শ’ টাকার মতো। গরীব মানুষের জন্য এটা অনেক কষ্টের।
মনোয়ার হোসেন নামের একজন রোগীর স্বজন বলেন, তার মেয়ে জুলেখার বয়স ৮বছর। খেলতে গিয়ে তার হাত ভেঙ্গে গেছে। ডাক্তার ডিজিটাল এক্স-রে করাতে বলেছে। হাসপাতালে এসে দেখি ডিজিটাল এক্স-রে তো দূরের কথা, এনালগ মেশিনটিও নষ্ট। তাই বাধ্য হয়ে রাজবাড়ী যাচ্ছি।
এ ব্যাপারে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বে থাকা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোসাম্মৎ আনজুয়ারা খাতুন বলেন, এক্স-রে মেশিনটি দীর্ঘ দিন ধরে বিকল হয়ে রয়েছে। তার দাবী, বিষয়টি একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
তবে রোগী ও স্বজনদের ধারণা, প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোকে ব্যবসার সুযোগ করে দেয়ার জন্যই এতোদিন ধরে এক্স-রে মেশিনটি বিকল করে ফেলে রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন গড়ে ২শ’ থেকে ৩শ’ রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। তাদের মধ্যে অন্ততঃ অর্ধশত রোগীর এক্স-রে করানোর প্রয়োজন হয়। কিন্তু এক্স-রে করানোর সুযোগ না থাকায় তাদেরকে দ্বিগুণেরও বেশী অর্থ ব্যয়ের পাশাপাশি দৌড়াদৌড়ির ভোগান্তি পোহাতে হয়।