॥দেবাশীষ বিশ্বাস॥ বর্ষার শুরুতেই পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। পদ্মার ভাঙ্গনে বিলীন হচ্ছে শত শত বিঘা ফসলী জমি।
রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ও বরাট ইউনিয়ন এবং গোয়ালন্দ উপজেলার ছোটভাকলা, দেবগ্রাম ও দৌলতদিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার পদ্মাপাড়ের মানুষের বাড়ীঘরও হুমকির মধ্যে পড়েছে। এসব এলাকায় এরই মধ্যে ভাঙ্গনের তান্ডব দেখা দিয়েছে। উজান থেকে আসা পানি বৃদ্ধির সাথে পদ্মায় সৃষ্টি হয়েছে তীব্র ¯্রােতের, যে কারণে ভাঙ্গনের তীব্রতা বাড়ছে। বর্ষা মৌসুমসহ ভাদ্র-আশ্বিন মাসে ভাঙ্গনের তীব্রতা বৃদ্ধির শংকায় নদীর তীরবর্তী বাসিন্দারা তাদের বাড়ী-ঘর সরিয়ে নিচ্ছে। ইতিমধ্যে গোয়ালন্দ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের শত শত বিঘা কৃষি জমি গ্রাস করেছে পদ্মা।
দেবগ্রাম ইউনিয়নের কাউজানা গ্রামের কৃষক করিম শেখ বলেন, এবার পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে আমার নদী তীরের প্রায় ৫০ বিঘা জমির পাট ও বেগুনের ক্ষেত নদীতে বিলীন হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে আমাদেরকে কোন সহায়তা করে না এবং নদী ভাঙ্গনের সঠিক হিসাবও তারা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে জমা দেয় না।
সদর উপজেলার চরসিলিমপুর এলাকার বাসিন্দা রাজ্জাক দেওয়ান বলেন, ভাঙ্গন রোধে সরকার যে পদক্ষেপ গ্রহণ করে-রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ড সেভাবে কাজ করে না। তাদের কাজের ধীরগতির জন্য প্রতি বছর রাজবাড়ীর মানুষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শিকদার মোঃ মোহায়মেন আক্তার বলেন, গত বছর প্রায় ২৫০ বিঘা কৃষি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে। এবারও নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। কী পরিমাণ কৃষি জমির ক্ষয়-ক্ষতি হচ্ছে তা বর্ষা মৌসুম শেষে জানা যাবে।
রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শফিকুল ইসলাম শেখ বলেন, ইতিমধ্যে ভাঙ্গন কবলিত এলাকার ৮কিলোমিটার অংশে জরুরী ভিত্তিতে প্রতিরোধের কাজ চলমান রয়েছে। রাজবাড়ী জেলার জন্য নদী ভাঙ্গন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সমস্যা। তাই আরও ১৭কিলোমিটারের জন্য ডিপিপির কাজ চলছে। সরকার এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বলেন, রাজবাড়ী জেলা অত্যন্ত নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকা। জেলার নদী পাড়ের ৮৫ কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় ৩০ কিলোমিটার ভাঙ্গনের শংকার মধ্যে রয়েছে। আমি যোগদান করার পরই নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। স্বচ্ছতার সাথে ভাঙ্গন প্রতিরোধের কাজ করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশনা প্রদান করেছি। সেই সাথে নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা প্রণয়ন করে সহায়তার আওতায় আনার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।