॥স্টাফ রিপোর্টার॥ নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকার অভিযোগে রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন স্থগিত করার দাবী জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী, কালুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান কাজী সাইফুল ইসলাম।
গতকাল ১৮ই জুন সকাল ৮টায় নির্বাচনে ভোট শুরুর আগে কালুখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার বরাবর লিখিত আবেদন করে তিনি এই দাবী জানান। পরে তিনি এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন।
আবেদনে অবিযোগ করা হয়েছে, কালুখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার শুরু থেকে আমার বিভিন্ন নেতাকর্মীদের উপর হামলা ও জানে মেরে ফেলার হুমকিসহ প্রায় ২০/২৫ জন নেতাকর্মীকে হাত-পা ভেঙ্গে পঙ্গু করে দিয়েছে। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। বহিরাগত সন্ত্রাসী দ্বারা গত সোমবার রাতে ১২টার পর হতে উপজেলার কালিকাপুরের রজবের বাড়ী, বিকয়ার আমির মাস্টারের বাড়ী, বোয়ালিয়ার রাজ্জাকের বাড়ী, পারকুলার মিজান মেম্বারের বাড়ী, কাউয়াখোলার আশরাফুলের বাড়ীসহ কমপক্ষে ২০জন নেতাকর্মীর বাড়ীতে সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে। আমি বার বার পুলিশকে জানানোর পরও তারা সারা রাত নীরব থেকে কোন পদক্ষেপ নেয়নি এবং আজ মঙ্গলবার ভোর ৪টার পর হতে আমার নৌকা প্রতীকের পোলিং এজেন্ট রজব আলীর বাড়ী, মোহনপুরের শহীদ মিয়ার বাড়ী, খামারবাড়ীর মকছেদ কাজীর বাড়ীসহ অনেক নেতাকর্মীর বাড়ীতে ককটেল বিস্ফোরণসহ রামদা দিয়ে বাড়ী-ঘর ভাংচুর করা হয়েছে। তারা রামদা মিছিল, লাঠি মিছিল ও অস্ত্র মিছিল করেছে। পুলিশকে জানানোর পরও তারা কোন পদক্ষেপ নেয়নি। আমার নির্বাচনী প্রধান সমন্বয়ক মদাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম মৃধাকে প্রকাশ্য দিবালোকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম ও মারপিট করেছে। আমার দু’জন এজেন্ট আমিরুল কাজী ও আবুল কাশেম গত রাত থেকে এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছে এবং প্রত্যেক ভোটকেন্দ্র থেকে পোলিং এজেন্টদেরকে বের করে দেয়া হয়েছে। আমি আশা করেছিলাম নির্বাচনের দিন অন্তত সুষ্ঠু পরিবেশে সাধারণ জনগণ সুশৃঙ্খল ভাবে তাদের পছন্দমত প্রার্থীকে ভোট প্রদান করতে পারবে, কিন্তু নির্বাচনের কোন সুষ্ঠু পরিবেশ নাই। এমতাবস্থায় আমি নির্বাচন স্থগিত চাই।
এছাড়াও সকাল ৯টার দিকে নৌকার প্রার্থী কাজী সাইফুল ইসলাম তার নিজ বাড়ীতে সাংবাদিকদের নিকট অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ প্রশাসন সম্পূর্ণরূপে পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ করছে। এভাবে কোন সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। আমার পোলিং এজেন্টদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে হুমকি দেয়া হয়েছে। অন্তত ৫০টি বাড়ী ভাংচুর করা হয়েছে। রাতে বাড়ীতে হামলার পর সকালে আবার পোশাকধারী পুলিশ গিয়ে তান্ডব চালিয়েছে। আমার সমর্থক ৮০ বছর বয়সী বৃদ্ধ মঙ্গল মন্ডল ভোট দিতে গেলে তাকে মেরে দাঁত ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। এক প্রতিবন্ধী ভোটারকেও মারপিট করা হয়েছে। এ জন্য আমি নির্বাচন স্থগিত করার জন্য লিখিতভাবে দাবী জানিয়েছি।
আবেদনের অনুলিপি প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনের সচিব, রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি/সম্পাদক বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে।