॥হেলাল মাহমুদ॥ রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজী সাইফুল ইসলামের মনোনয়নপত্রের সমর্থনকারী আ’লীগ নেতা রাকিবুল ইসলাম আকমল ওরফে আকমল মেম্বার(৫৫) ও তার ছেলে আহাদ খান (১০)কে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেছে দুর্বৃত্তরা। জখম অবস্থায় পিতা-পুত্র দু’জনকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গত ২৯শে মে রাতে পাংশা উপজেলা শহরের নারায়ণপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তাদেরকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত কেবিনে ভর্তি করা হয়েছে।
খবর পেয়ে কালুখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজী সাইফুল ইসলাম তাদেরকে দেখতে হাসপাতালে যান। এ সময় তিনি রাকিবুল ইসলাম আকমল ও তার পরিবারের সদস্যদের শান্তনা দেন এবং হামলার সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবী জানান।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আওয়ামী লীগ নেতা রাকিবুল ইসলাম আকমল জানান, তিনি কালুখালী উপজেলার সাওরাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং মৃগী বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক। তার বাড়ী সাওরাইল ইউনিয়নের বড়পাতুরিয়া গ্রামে। তিনি পরিবার নিয়ে পাংশা শহরে বসবাস করেন। গত বুধবার রাতে তিনি তার শিশু সন্তানকে ডাক্তার দেখিয়ে মোটর সাইকেলযোগে ফেরার পথে বাসার অদূরে কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে। এ সময় তারা তার ছেলেকেও মারপিট করে। এ ব্যাপারে তিনি থানায় মামলা দায়েরের প্রস্ততি নিচ্ছেন।
আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান কাজী সাইফুল ইসলাম বলেন, আগামী ১৮ই জুন ৫ম ধাপে আমাদের কালুখালী উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে আমি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী। নির্বাচনের তফসীল ঘোষণার পর থেকেই আমি যখন প্রচারণা চালাই তখন থেকেই প্রভাবশালী একটি চক্র আমার কর্মী সমর্থকদের উপরে ন্যাক্কার জনকভাবে হামলা মামলা চালিয়ে যাচ্ছে। আমি নৌকা প্রতীক পাওয়ার আগেই আমার একজন কর্মী বোয়ালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাসেম মোল্লা তাকে হা-পা ভেঙে দেয়া হয়েছে। সে এই রাজবাড়ী হাসপাতালে প্রায় এক মাস চিকিৎসাধীন ছিল। তারপরও সে এখনো বেডে শুয়ে আছে। তারপরেও বিভিন্নভাবে হয়রানীমূলক মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে আমার বিশেষ করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের স্বাধীনতা বিরোধী পরিবারের এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে কাজ করানোর জন্য পরিকল্পিতভাবে হামলা ও মামলা অব্যাহত রেখেছে। তারই ফলশ্রুতিতে গত পরশুদিন আমার ৫জন কর্মীকে মারধর করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থীর নৌকার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া জেলা পরিষদের কতিপয় সদস্য উপস্থিত থেকে মদাপুরে দুইজন কর্মীকে মারপিট করেছে এবং একজন ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে কালিকাপুরে আমার ১জন কর্মীকে মারধর করা হয়েছে। বোয়ালিয়াতে ১জনকে মারধর করা হয়েছে। সর্বশেষ গত ২৯শে মে রাতে আমার সমর্থনকারী অত্যন্ত জনপ্রিয় আওয়ামী লীগ নেতা সাওরাইল ইউনিয়নের ৪বারের মেম্বার এবং মৃগী বাজার কমিটির সেক্রেটারী ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান রাকিবুল ইসলাম আকমলকে তার ছেলেসহ হত্যার উদ্দেশ্যে তার উপর আক্রমন করে দুর্বৃত্তরা। আল্লাহর রহমত সে জানে বেঁচে গেছে।
আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান কাজী সাইফুল ইসলাম আরো বলেন, কালুখালীতে নির্বাচনে সুষ্ঠ কোন পরিবেশ নেই। আমার নৌকা প্রতীকের দলীয় কর্মী সমর্থকেরা চরম আতংক ও উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছে। আমি ইতিপূর্বে সাংবাদিকদের কাছেও বলেছি এবং রাজবাড়ী জেলা ও কালুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায়ও বলেছি, সর্বশেষ নির্বাচন কমিশনেও বলেছি। তারপরেও এখন পর্যন্ত নির্বাচনের কোন সুষ্ঠ পরিবেশ দেখছি না। আগামী ১৮ই জুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নৌকা প্রতীক দিয়েছেন। আমি দেখছি আওয়ামী লীগের যারা প্রভাবশালী নেতা তারাই নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। আমার বোধগম্য নয় কেন তারা জননেত্রী শেখ হাসিনার এই নৌকা মার্কাকে অবমাননা করছে।
এ ব্যাপারে পাংশা থানার ওসি মোঃ আহসান উল্লাহ বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, আগামী ১৮ই জুন কালুখালী উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।