॥বালিয়াকান্দি প্রতিনিধি॥ রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা এ বছর তাদের জমিতে বাঙ্গী ও নালিম(বাঙ্গী জাতীয়, আকারে ছোট) চাষ করে লাভবান হয়েছেন। এতে তাদের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে।
উপজেলার সব ইউনিয়নের কৃষকরাই তাদের জমিতে কম-বেশী বাঙ্গী ও নালিমের চাষ করেছে। আবার অনেক কৃষক ‘বন্ধু ফসল’ হিসেবে অন্য ফসলের মধ্যে বাঙ্গী ও নালিমের চাষ করেছে। এখন চলছে এই বাঙ্গী ও নালিমের ভরা মৌসুম। রোজার দিন হওয়ায় এর চাহিদাও অনেক বেড়ে গেছে। কৃষকরাও ভালো দাম পাচ্ছে।
বাঙ্গী ও নালিম বেলে দো-আঁশ মাটিতে ভালো হয়। বাঙ্গী সাধারণত ৩জাতের হয়-বেলে, এঁটেল, দো-আঁশ। বেলে জাতের বাঙ্গী পাকলে ফেটে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। এ জাতের বাঙ্গী নরম হওয়ায় বয়ষ্ক মানুষ এই বাঙ্গী খেতে খুব মজা পায়। এঁটেল বাঙ্গী খেতে খুব সুস্বাদু হয়। দো-আঁশ বাঙ্গী অনেকটা শক্ত হয়। পাকলে এই বাঙ্গীর ভিতর থেকে সুন্দর ঘ্রাণ বের হয়, খেতেও মজা। গ্রীষ্মকালীন ফসল বাঙ্গী গরমের সময় খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে। বাঙ্গী মানবদেহে জন্য অনেক উপকারী ও পুষ্টিদায়ক খাদ্য। সাধারণভাবে চাষ করার পাশাপাশি মিষ্টি কুমড়া ও আখ ক্ষেতসহ বিভিন্ন ফসলের মধ্যে বন্ধু ফসল হিসেবে কৃষকরা বাঙ্গীর চাষ করে থাকে। বাঙ্গীর চাষ করলে অন্যান্য ফসলের কোন ক্ষতি হয় না বলে কৃষকরা জানান।
নবাবপুর ইউনিয়নের ইন্দুরদী গ্রামের কৃষক মনিরুল ইসলাম মেঘনা জানান, এ বছর তিনি তার ২২ শতাংশ জমির মুখী কচুর ক্ষেতের মধ্যে মাঘ মাসে তাওয়া করে বাঙ্গীর বীজ রোপন করেছিলেন। বাঙ্গী ধরে বড় হয়ে বর্তমানে পাকতে শুরু করেছে। বাঙ্গীগুলোর ২ কেজি প্রায় ১০ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়েছে। এখন পবিত্র রোজার মাস হওয়ায় বাঙ্গীর চাহিদাও বেড়ে গেছে। ১০০টি বাঙ্গী ৪ থেকে ৫হাজার টাকা দরে ক্ষেত থেকে পাইকারী বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন হাট-বাজারে প্রতিটি বাঙ্গী ৩০ থেকে ২০০ টাকা দামে খুচরা বিক্রি হচ্ছে। ভালো দাম পাওয়ায় এবার বাঙ্গী চাষ করে অনেক লাভবান হয়েছি। তবে গোজড়া পোকায় বাঙ্গীর কিছুটা ক্ষতি করেছে।
একই গ্রামের বাঙ্গী চাষি আলতাব হোসেন মোল্লা জানান, তিনি তার ১৫ শতাংশ জমিতে বাঙ্গীর চাষ করেছেন। ক্ষেতে প্রচুর পরিমাণে বাঙ্গী ধরেছে, বড় হয়ে পাকতে শুরু করছে। রোজার মাসে বাজারে বাঙ্গী বিক্রি করে তিনি ভালো দাম পাচ্ছেন।
একই গ্রামের নালিম চাষী লুৎফর রহমান জানান, এবার তিনি তার ৩০ শতাংশ জমিতে নালিমের চাষ করেছেন। গাছগুলো বেশ তরতাজা হয়ে নালিম ধরতে শুরু করেছে। রোজার মাসেই তিনি উৎপাদিত নালিম বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন।
বালিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শাখাওয়াত হোসেন জানান, এ বছর উপজেলার কৃষকরা প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে বাঙ্গী ও নালিমের চাষ করেছে। রোজার মাসে বাঙ্গী ও নালিম বিক্রি করে কৃষকরা ভালো দামও পাচ্ছে।