॥হেলাল মাহমুদ॥ বৈশাখের প্রচন্ড তাপদাহে সর্দি-জ্বর, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। ফলে বহু মানুষকে চিকিৎসা নেয়ার জন্য হাসপাতালে ছুটতে হচ্ছে।
এতে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে শিশু-বৃদ্ধসহ সব বয়সী রোগীদের চাপ বেড়েছে। হাসপাতালের আউটডোরে প্রতিদিন অন্তত দেড় সহ¯্রাধিক রোগী টিকেট কেটে চিকিৎসককে দেখাচ্ছেন। কিন্তু ১২ লক্ষাধিক জনসংখ্যা অধ্যুষিত রাজবাড়ী জেলার প্রধান এই হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটসহ নানা কারণে তাদেরকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
দীর্ঘ লাইনে অনেকক্ষণ, ক্ষেত্র বিশেষে ২/৩ ঘন্টা পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ডাক্তারের নাগাল পেলেও সংশ্লিষ্ট ডাক্তার রোগীকে কয়েক সেকেন্ডের বেশী সময় দিতে পারছেন না। অত্যধিক রোগীর চাপে ডাক্তার ঠিকমতো রোগের বর্ণনা না শুনেই তড়িঘড়ি করে প্রেসক্রিপশন লিখে দিচ্ছেন। দু’একটা কমন ওষুধ ছাড়া বাকী সব ওষুধই রোগীদের বাইরে থেকে কিনে খেতে হচ্ছে।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রাজবাড়ী সদর উপজেলার চরবাগমারা গ্রামের গৃহবধূ কমেলা বেগম বলেন, আমরা গরীব মানুষ। নিরুপায় হয়েই সরকারী হাসপাতালে আসি। এখনকার মতো ভীড় আগে কখনো দেখিনি। প্রচন্ড গরমের মধ্যে গাদাগাদি করে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট কাটা থেকে ওষুধ নেয়া পর্যন্ত ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
আলাদীপুর থেকে আসা সুমন নামের এক রোগী বলেন, বুকের ব্যাথার জন্য কয়েকদিন আগে হাসপাতালের ডাক্তার দেখিয়ে ইসিজি করে ওষুধ খেয়ে বর্তমানে একটু ভালো আছি। ১০দিন পর আজ আবার এসেছি। কিন্তু প্রচন্ড ভীড়ের কারণে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট কাটতে না পেরে জরুরী বিভাগ থেকে অনেক অনুরোধ করে টিকেট সংগ্রহ করে বহু কষ্টে ডাক্তারকে দেখাতে পারলেও ওষুধ কাউন্টারে এসে আটকে আছি।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা বলছেন, প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক থাকলে দীর্ঘ লাইনে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার ভোগান্তি পোহাতে হতো না। এছাড়া চর্ম, চক্ষুসহ কয়েকটি বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার(আরএমও) ডাঃ শাহনিমা নার্গিস বলেন, প্রচন্ড রোদের কারণে সর্দি-জ্বর, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ সিজনাল নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে রোগীরা হাসপাতালে আসছে। সীমিত সামর্থ্য দিয়েই আমরা তাদেরকে সেবা দিচ্ছি। হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা আগের চেয়ে ভালো হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।