বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:১১ পূর্বাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সাংবাদিকদের ফ্রি কিডনী পরীক্ষা ও সেমিনার অনুষ্ঠিত

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২ মার্চ, ২০১৭

স্বাস্থ্য সেবামূলক স্বেচ্ছাসেবী ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠান কিডনী অ্যাওয়ারনেস মনিটরিং এন্ড প্রিভেনশন সোসাইটি(ক্যাস্পস) মূলতঃ কিডনি বিষয়ে গবেষণা, গণসচেতনতা বৃদ্ধি করে কিডনী রোগ প্রতিরোধ, স্বল্পমূল্যে চিকিৎসা ও কিডনী স্বাস্থ্য বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে বছরব্যাপী নানাবিধ কর্মসূচী বাস্তবায়ন করে থাকে।
এরই অংশ হিসেবে ২০১৭-এর বিশ্ব কিডনী দিবসের প্রাক্কালে ক্যাম্পস, বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের সাথে যৌথ উদ্যোগে সাংবাদিকদের ফ্রি কিডনী স্ক্রিনিং এবং কিডনী সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সেমিনার ও দিনব্যাপী বিনামূল্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষার আয়োজন করে।
ল্যাব এইড স্পেশালাইজড হাসপাতালের কিডনী বিভাগের চীফ কনসালটেন্ট ও ক্যাম্পস এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এ সেমিনারে ভিডিও প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে কিডনী রোগের কারণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধ বিষয়ে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির(ডিআরইউ) সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, ক্র্যাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক এম.এ সামাদ উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে প্রায় দুই কোটিরও অধিক লোক কোন না কোন কিডনী রোগে আক্রান্ত। কিডনী রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতি ঘন্টায় অকাল মৃত্যুবরণ করছে ৫জন লোক। সাধারণত ৭৫ভাগ কিডনী নষ্ট হওয়ার আগে রোগীরা বুঝতেই পারেনা যে, সে ঘাতক ব্যাধিতে আক্রান্ত। কিডনী যখন বিকল হয়ে যায় তখন বেঁচে থাকার একমাত্র উপায় কিডনী সংযোজন অথবা ডায়ালাইসিস। অন্যদিকে কিডনী রোগের চিকিৎসা এতোই ব্যয়বহুল যে, এ দেশের শতকরা ১০ ভাগ লোকেরও সাধ্য নেই এই ব্যয়বহুল চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার।
তিনি বলেন, অনেক রোগ আছে যা শিশু বয়স থেকে শুরু হয়ে সুপ্ত অবস্থায় বাড়তে থাকে এবং বড় হলে তা কিডনী বিকলে রূপান্তরিত হয়। তবে আশার কথা হচ্ছে, একটু সচেতন হলে শতকরা ৬০ ভাগ ক্ষেত্রে ভয়াবহ কিডনী বিকল প্রতিরোধ করা সম্ভব। যেহেতু কিডনী রোগ একটি নীরব ঘাতক, প্রাথমিক অবস্থায় এর কোন লক্ষণ বা উপসর্গ প্রকাশ পায় না। তাই সুপ্ত রোগ প্রাথমিক অবস্থায় নির্ণয়ের জন্য প্রয়োজন ঝুঁকিপূর্ণ লোকদের নিয়মিত কিছু ল্যাবরেটরী পরীক্ষা। সেই উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে ডিআরইউ সদস্যসহ সাংবাদিকদের জন্য এই বিশেষ আয়োজন।
অধ্যাপক ডাঃ এম.এ সামাদ আরো বলেন, দেশে অসংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৬৩% লোকের মৃত্যু হয়। আগামী ১০ বছরে এ হার ৭০% ছাড়িয়ে যাবে। কারণ প্রতিবছর ২% হারে বৃদ্ধি পায়। এই জীবন সংহারী রোগ সমূহের মধ্যে রয়েছে হৃদরোগ, ফুসফুসের রোগ, ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও কিডনী রোগ। অথচ একটু সচেতন হলেই এবং লাইফস্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে ৫০ থেকে ৬০ ভাগ ক্ষেত্রে এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। বর্তমান বিশে^ ১০ জনের মধ্যে ১জন কিডনী রোগী। আমেরিকায় বছরে ৫৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হয় কিডনী রোগীদের পিছনে। আগামী দশকে চীন এ কিডনী চিকিৎসায় ব্যয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ৫৫৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। কিডনী রোগ প্রতিরোধে আন্তর্জাতিকভাবে আজ ১০টি স্বর্ণালী সোপান কঠিনভাবে অবলম্বনের তাগিদ তৈরি হয়েছে। এই ১০টি পন্থা হলো ঃ কায়িক পরিশ্রম ও খেলাধূলা এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা, ধূমপান থেকে বিরত থাকা, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ যাতে প্রতিদিন শাকসবজি ও ফল থাকবে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা ও ফাস্টফুড পরিহার করা, পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান করা, উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা, পরিচ্ছন্ন থাকা ও খাবার পূর্বে হাত ধোয়া, ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন ব্যাথানাশক ও এন্টিবায়োটিক ঔষধ সেবন না করা, নিয়মিত কিডনীর কার্যকারিতা পরীক্ষা করা। ক্যাম্পস এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে কিডনী রোগের ব্যাপকতা ও ভয়াবহতা সম্পর্কে বাংলাদেশের মানুষকে সচেতন করা ও কিডনী বিকল প্রতিরোধে প্রাথমিক অবস্থায় কিডনী রোগ শনাক্ত করে চিকিৎসা করা ও সুস্থ্য জীবন ধারায় সবাইকে অভ্যস্ত করা। বিশ্বব্যাপী আজ কিডনী রোগের ভয়াবহতা সংশ্লিষ্ট সকলেই উপলব্ধি করতে পারছেন। তারা মনে করেন যে, চিকিৎসা করে নয় বরং প্রতিরোধ করেই এ রোগের প্রাদূর্ভাব প্রশমন করতে হবে। এ জন্য সচেতনতাই একমাত্র উপায়।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি’র সভাপতি এরূপ মহতী উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং ক্যাম্পসের সকল সকল সামাজিক ও মানবিক কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত থাকার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। দিনব্যাপী চলা ফ্রি স্ক্রিনিং কর্মসূচীর মাধ্যমে প্রায় ২০০জন পেশাদার সাংবাদিকের স্ক্রিনিং করা হয়। ক্র্যাবের সভাপতি আবু সালেহ আকনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে ডিআরইউ ও ক্র্যাবের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। এ ধরণের মহতী উদ্যোগকে তারা সাধুবাদ জানান -প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!