॥গোয়ালন্দ প্রতিনিধি॥ রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দে পঞ্চম শ্রেণীর মাদ্রাসা ছাত্রী(১১) ধর্ষণের অভিযোগে গতকাল ১৬ই এপ্রিল তরিকুল ইসলাম ওরফে রিমন(২৮) নামের এক বখাটেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেফতারকৃত তরিকুল গোয়ালন্দ পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড হাউলি কেউটিল ওলিম উদ্দিন পাড়ার মৃত মোতালেব বেপারীর ছেলে। সে এলাকায় বখাটে ও ভবঘুরে হিসেবে পরিচিত।
মামলার এজাহারে মাদ্রাসা ছাত্রীর পিতা উল্লেখ করেন, গোয়ালন্দ বাসষ্ট্যান্ড দাখিল মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণীতে পড়াশুনা করে তার মেয়ে। মাদ্রাসায় যাতায়াতের পথে মাঝেমধ্যে তরিকুল ইসলাম ওরফে রিমন বিভিন্ন সময় খারাপ অঙ্গ ভঙ্গি করতো। এমনকি মাঝেমধ্যে কুপ্রস্তাবও দিত। বিষয়টি জানার পর পরিবার থেকে রিমনকে বারণ করা হয়। এতে সে আরো বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। গত ৪ঠা এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বাড়ির পাশের একটি মুদি দোকান থেকে ডিম কিনে বাড়ি ফেরার সময় পথরোধ করে রিমন। এ সময় রিমন তার মেয়ের মুখ চেপে ধরে স্থানীয় সালামের বাড়ির পিছনে বাঁশ বাগানে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষন করে। ঘটনাটি কাউকে না জানানোর জন্য সে ভয়ভীতি দেখায়। ভয়ে সে বাড়ির কাউকে কিছু বলেনি। ঘটনার কয়েক দিন পর গত ১৫ই এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে তরিকুল ইসলাম ওরফে রিমন আচমকা ঘরে প্রবেশ করেই জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় সে ধস্তাধস্তি করে ছুটে গিয়ে দৌড়ে পাশের বাড়ি গিয়ে ওঠে এবং ঘটনাটি খুলে বলে। প্রতিবেশী কয়েকজন বাড়িতে ছুটে এলে রিমন দৌড়ে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় কয়েকজন ও পুলিশ জানায়, বখাটে তরিকুল ইসলাম রিমন স্থানীয় এক নেতা গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে জামায়। সে এলাকার বখাটে এবং স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি। কয়েক মাস আগে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে রিমনসহ কয়েকজন গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে ধারালো অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করে প্রতিপক্ষকে কুপিয়ে মারাতœকভাবে জখম করে। এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও রয়েছে। তার নিজস্ব কোন পেশা না থাকায় এলাকায় ভবঘুরে এবং বখাটে হিসেবেও পরিচিত।
মাদ্রাসার ছাত্রীরপিতা অভিযোগ করেন, মাঝে মধ্যে মাদ্রাসায় যাতায়াতের পথে মেয়েকে উত্ত্যক্ত করতো। বিষয়টি জানার পর কয়েকবার বারণ করায় উল্টো সে আরো বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। ভয়ে আমার মেয়ে ঠিকমতো মাদ্রাসায় যাতায়াত করতে পারতো না। আমিসহ এলাকাবাসী বখাটে রিমনের উপযুক্ত শাস্তি দাবী করছি।
অভিযোগ প্রসঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে থানা হেফাজতে গ্রেপ্তারকৃত তরিকুল ইসলাম ওরফে রিমন মাদ্রাসার ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করেন। এছাড়া মাদকের কারবারির সাথেও জড়িত নয়। স্থানীয়ভাবে তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার বলে দাবী করেন। তবে এর আগে হাসপাতালে ঢুকে প্রতিপক্ষকে কুপিয়ে জখম করার বিষয়টি স্বীকার করেন।
এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মোঃ এজাজ শফী বলেন, গতকাল মঙ্গলবার সকালে থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দেয়ার সাথেই অভিযুক্ত তরিকুল ইসলাম ওরফে রিমনকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়াও ওই ছাত্রীর ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।