॥আন্তর্জাতিক ডেস্ক॥ জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, সকলের জন্য সম্মানজনক কাজ নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার জোর দিয়েছে।
জাতিসংঘ সদর দপ্তরে গত ১১ই এপ্রিল ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশনের(আইএলও) শত বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ‘কাজের ভবিষ্যৎ’ বিষয়ক এক উচ্চ পর্যায়ের সভায় তিনি একথা বলেন।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি মারিয়া ফার্নান্দা এস্পিনোসা গার্সেজ আইএলও এর শতবর্ষ উপলক্ষে বিশেষায়িত এই অধিবেশন আহ্বান করেন।
বিশেষায়িত এই সেশনে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ এবং আইএলও এর মহা-পরিচালক গাই রাইডার বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে সদস্য দেশসমূহের মন্ত্রী, রাষ্ট্রদূত, প্রতিনিধি, এবং আন্তর্জাতিক ট্রেড ইউনিয়নের ও মালিক সমিতির প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা বিশ্বে সামাজিক ন্যায় বিচার সৃষ্টির ক্ষেত্রে আইএলও’র ভূমিকার কথা তুলে ধরেন।
আইএলও-এর শতবর্ষ উপলক্ষে জাতিসংঘ আয়োজিত অনুষ্ঠান গত ১০ই এপ্রিল শুরু হয় যা গত ১১ই এপ্রিল শেষ হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন এই অনুষ্ঠানে বলেন, “বাংলাদেশ এখন স্বল্পোন্নত দেশগুলোর(এলডিসি) ক্যাটেগরি থেকে উত্তরণের পথে। গুরুত্বপূর্ণ এই সময়ে জনগণের ক্ষমতায়ন করা এবং সমতা ও সামগ্রিকতা নিশ্চিত করার মূখ্য নিয়ামক হিসেবে সকলের জন্য সম্মানজনক কাজ নিশ্চিতে জোর দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার।”
স্থায়ী প্রতিনিধি বাংলাদেশের শ্রম আইনের মূলনীতি তুলে ধরে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শোষণ ও বৈষম্য মুক্ত এবং সামাজিক ন্যায় বিচার ভিত্তিক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন, যা আমাদের জাতীয় শ্রম নীতিতে প্রতিভাত হয়েছে। কাজের অনানুষ্ঠানিকতা হ্রাস, ভালো মজুরি, নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই আমরা আমাদের উন্নয়ন পরিকল্পনা, নীতি ও পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।
মাসুদ বিন মোমেন উল্লেখ করেন বর্তমান সরকার তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি নিয়মিতভাবে পর্যালোচনা করছে এবং নারী, প্রতিবন্ধী, অরক্ষিত ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য কাজের অধিক সুযোগ সৃষ্টিতেও পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, শেখ হাসিনা সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় দশ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে একশ’ নতুন বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কাজে হাত দিয়েছে। পাশাপাশি সরকার এসএমই খাতকেও উৎসাহিত করছে যাতে, বিশেষ করে নারী ও যুবদের জন্য সম্মানজনক কাজ এর সুযোগ সৃষ্টি হয়। কর্ম-সৃজনের ভবিষ্যৎ প্লাটফর্ম হিসেবে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
চতুর্থ শিল্প-বিপ্লবের চ্যালেঞ্জসমূহ দুর্বল অর্থনীতির দেশ এবং যে সকল দেশে কাঠামোগত রূপান্তর চলছে সেসকল দেশগুলোর কাজের বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, “ন্যায় ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে কিভাবে প্রযুক্তিকে উন্নয়নের মূলশক্তি হিসেবে কাজে লাগানো যায়, সে বিষয়ে সদস্য দেশসমূহের সরকার, মালিক, ট্রেড ইউনিয়ন এবং নেতৃত্বদানকারী কারিগরি প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে আইএলও আলোচনা সাপেক্ষে একটি রোড ম্যাপ তৈরি করতে পারে”।