## রওশন আরা পারভেজ ## আজ ২রা এপ্রিল বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে, “সহায়ক প্রযুক্তির ব্যবহার, অটিজম বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন ব্যক্তির অধিকার।” অটিজম কী এবং কেন হয় এ নিয়ে হাজারো প্রশ্ন মানুষের মনে। একটা সময় ছিল যখন অটিজমকে মনে করা হতো বাবা-মায়ের পাপের কারণে বাচ্চার এই অবস্থা হয়েছে। অনেকে মনে করতো মা গর্ভবতী অবস্থায় পুষ্টিকর খাবার খায়নি তাই বাচ্চা এ রকম হয়েছে। বর্তমানে একুশ শতাব্দীতে এসে মানুষের ভুল ধারণাগুলো অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে। তবে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে এখনও কিছু কুসংস্কার প্রচলিত রয়েছে। অটিজম হচ্ছে ¯œায়ুবিকাশজনিত সমস্যা। এ সমস্যায় আক্রান্ত শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশ সঠিকভাবে হয় না। শিশুদের আচরণগত ও চিন্তাগত সমস্যা দেখা দেয়, জটিল চিন্তন দক্ষতা অর্জন করতে পারে না, যোগাযোগে সমস্যা দেখা দেয় অর্থাৎ সার্বিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। এতো অসুবিধা বা প্রতিকূলতা থাকা সত্ত্বেও অটিস্টিক বাচ্চারা পিছিয়ে নেই। অনেক ক্ষেত্রেই এসব শিশুরা অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী হয়ে থাকে।
আমি যখন প্রতিবন্ধীদের নিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসমূহ যেমন-প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশন, সুইড বাংলাদেশ প্রভৃতি পরিদর্শন করি দেখতে পাই ওরা অনেক প্রতিভা সম্পন্ন। কেউ মালা তৈরীতে পারদর্শী, কেউ ব্যাগ বানাচ্ছে, কেউ কম্পিউটার পরিচালনায় পারদর্শী, কেউবা আবার অঙ্কনে। ওদের আঁকা ঈদ কার্ড দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানানো হয়। এসব কিছুর জন্য প্রয়োজন আমাদের সকলের সচেতনতা। আমরা যদি অটিজমের লক্ষণগুলো সম্পর্কে জানি তাহলে ছোটবেলা থেকেই ওদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য যেসব স্কুল রয়েছে সেগুলোতে যদি ওদের ছোট বেলাতেই অন্তর্ভুক্ত করানো যায় তাহলে সামাজিক বিকাশের পাশাপাশি ওদের অন্যান্য বিকাশও ত্বরান্বিত হয়।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য কন্যা সায়মা ওয়োজেদ পুতুল বাংলাদেশে অটিজম সম্পর্কে সচেতনতা তৈরীর অগ্রদূত। তিনি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু ও অন্যান্য শিশুদের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আসুন আমরা সবাই তার সাথে একাত্মতা পোষণ করি। আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই পারে অটিজম বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন শিশুদের সমাজের বোঝা হিসেবে পরিগণিত না করে সমাজের সম্পদে পরিণত করতে। লেখিকা ঃ প্রভাষক, মনোবিজ্ঞান বিভাগ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারী মহিলা কলেজ, ঢাকা।