॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া এবং মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে গত রবিবার ঝড়ের কারণে দুই দফায় প্রায় দুই ঘন্টার মতো ফেরী চলাচল বন্ধ ছিল।
ঝড়ের কবলে পড়ে গাড়ি বোঝাই চারটি ফেরীকে কয়েক কিলোমিটার ভাটিতে টেনে বালুর চরে ফেলে। প্রচন্ড বাতাসে ছয় নম্বর ঘাটের পন্টুনের যন্ত্রাংশ ফেটে যাওয়ায় ঘাট বন্ধ রয়েছে। ফেরী চলাচল ব্যাহত হওয়ায় উভয় ঘাটে দীর্ঘ যানজট তৈরী হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয় জানায়, গত ৩১শে মার্চ বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে প্রচন্ড ঝড় শুরু হলে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয়। এক ঘন্টার বেশি সময় পর ফেরী চালু হয়। দৌলতদিয়া থেকে যানবাহন বোঝাই করে ছেড়ে যাওয়া রোরো খানজাহান আলী ও আমানত শাহ ও পাটুরিয়া থেকে ছেড়ে আসা বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন ও ইউটিলিটি মাধবীলতা ঝড়ের কবলে পড়ে। খানজাহান আলী, বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন ও মাধবীলতাকে দৌলতদিয়া ঘাট ছেড়ে প্রায় ৭/৮কিলোমিটার ভাটিতে নিয়ে বালুর চরে ফেলে। আমানত শাহকে দৌলতদিয়ার ১নম্বর ঘাটের অদূরে বালুর চরে আটকায়। ঝড় থেমে গেলে উদ্ধারকারী জাহাজের সাহায্যে খানজাহান আলীকে প্রায় ১৪ ঘন্টা পর গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে উদ্ধার করা হয়। রুহুল আমিন পাঁচ ঘন্টা পর রবিবার রাত দশটার দিকে, মাধবীলতা প্রায় ছয় ঘন্টা পর সাড়ে ১০টার দিকে এবং রুহুল আমিন প্রায় দশ ঘন্টা পর রাত সাড়ে তিনটার দিকে উদ্ধার করা হয়। রহুল আমিন রাত সাড়ে তিনটার দিকে উদ্ধার হলেও ইঞ্জিন দুর্বলের কারণে গতকাল সকাল সাড়ে ছয়টা থেকে ট্রিপ শুরু করে। প্রচন্ড বাতাসে ছয় নম্বর ঘাটে থাকা ফেরীর ধাক্কায় পন্টুনের পাশ ফেটে যায়। এতে পন্টুনে পানি উঠতে থাকলে রবিবার রাত ১১টা থেকে কর্তৃপক্ষ ঘাট বন্ধ করে দেয়। এই নৌপথে ১৭টির মধ্যে বর্তমানে ১৪টি ফেরি চলছে।
গতকাল সোমবার সকালে দৌলতদিয়ায় দেখা যায়, ঘাট থেকে দৌলতদিয়া-খুলনা মহাসড়কের প্রায় চার কিলোমিটার যানজট তৈরী হয়েছে। এরমধ্যে অধিকাংশ যাত্রীবাহি বাস ১০ থেকে ১২ ঘন্টা আটকে আছে। পন্যবাহি গাড়ি আরো বেশি সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। রাতের নৈশ কোচ গতকাল সোমবার দুপুরেও পার হয়। ছয় নম্বর ফেরী ঘাটে দেখা যায় লাল নিশানা উড়িয়ে রাখা হয়েছে। একটি স্যালো ইঞ্জিনের সাহায্যে পন্টুন থেকে পানি অপসারণ করা হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, চাকুরী জীবনে এমন বাতাস ও ঝড় দেখিনি। মুহুর্তের মধ্যে সবকিছু কেমন যেন ওলোট পালোট হয়ে গেল। বাতাসের ধাক্কায় চারটি যানবাহন বোঝাই ফেরীকে কয়েক কিলোমিটার ভাটিতে টেনে নিয়ে বালুর চরে আটকে দিল। ছয় নম্বর ঘাট ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় বন্ধ রয়েছে। এসব কারণে দৌলতদিয়ার পাশাপাশি পাটুরিয়া ঘাটেও যানজট তৈরী হয়েছে।