॥শিহাবুর রহমান॥ রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ফরিদ হাসান ওদুদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘন ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে গতকাল ২০শে মার্চ দুপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি একেএম শফিকুল মোর্শেদ আরুজ।
সাংবাদিক সম্মেলনে পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসান আলী বিশ্বাস, পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও পাংশা পৌরসভার মেয়র আব্দুল আল মাসুদ বিশ্বাস, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডাঃ একেএম শফিউদ্দিন পাতা, জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক নূরুদ্দিন মিয়া, পাংশা পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওদুদ সরদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ওসমান গনি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিক সম্মেলন আওয়ামীলীগের প্রার্থী একেএম শফিকুল মোর্শেদ আরুজ বলেন, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ফরিদ হাসান ওদুদ ও তার ভাইয়েরা প্রায় সবাই সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। এদের বিরুদ্ধে পাংশা থানায় বিস্ফোরক মামলা, সন্ত্রাসী মামলা ও মাদক ব্যবসার মামলা রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, সাংবাদিক নির্যাতন, দলীয় কর্মীদের নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। এমনকি গত সংসদ নির্বাচনেও তিনি দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। সে কারণে উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় তাকে দল থেকে বহিস্কারের সুপারিশ করে কেন্দ্রে পাঠানো হয়।
একেএম শফিকুল মোর্শেদ আরুজ বলেন, গত ১৯শে মার্চ ফরিদ হাসান ওদুদ সাংবাদিক সম্মেলন করে তার নির্বাচনী কার্যালয় ভাংচুরের যে অভিযোগ করেছেন তা ডাহা মিথ্যা ও বানোয়াট। মূলত ওদুদ ও তার ভাইয়েরা সন্ত্রাসীদের লালন করে। তারা নির্বাচনে পরাজয় নিশ্চিত জেনে নিজেরা নিজেদের নির্বাচনী কার্যালয় ভাংচুর করে আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছেন। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই যে, উনারা সন্ত্রাসের লালন পালন করেন। একই সাথে নিজেরাই বড় ধরণের সন্ত্রাসী এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে অভিযুক্ত। তারা রাতের অন্ধকারে তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে তাদের কার্যালয় ভেঙে আওয়ামীলীগের উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করেছে।
তিনি আরো বলেন, পাংশা উপজেলার ৯জন ইউপি চেয়ারম্যানসহ পাংশা পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরগণ তার দূর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ করার কারণে তিনি বিভিন্ন চেয়ারম্যান কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে নানা রকম মিথ্যা অভিযোগ করছেন। যেমন খন্দকার সাইফুল ইসলাম বুড়ো মাছপাড়া ইউনিয়নের বার বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান এবং সম্ভ্রান্ত পরিবারের একজন সন্তান। শরিষা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজমল হক বাহারও সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান। ওদুদ সরদার ৫বারের নির্বাচিত পৌর কাউন্সিলর এবং পাংশা পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক। নৌকার গণজোয়ার দেখে দিশেহারা হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী ওদুদ মন্ডল আমাদের উল্লেখিত নেতাদের বিরুদ্ধে নানা রকম মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করে নির্বাচনের সুষ্ঠ পরিবেশকে নষ্ট করার অপচেষ্টা করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ফরিদ হাসান ওদুদ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালে অবৈধ উপায়ে প্রচুর কালো টাকার মালিক হয়েছেন এবং বিপুল কালো টাকা ব্যবহার করে এ নির্বাচনকে কুলষিত ও প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ^াস করি আসন্ন উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠ হবে। পাংশার জনগণ সন্ত্রাস, দূর্নীতি, চাঁদাবাজী ও মাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং আমাদের প্রিয় নেতা মোঃ জিল্লুল হাকিম এমপির প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখার চেষ্টা করবে। সেই সাথে ব্যাপক উন্নয়নের প্রয়াসে শিক্ষা, সাংস্কৃতি, ধর্মীয় এবং সর্বক্ষেত্রে উন্নয়নের লক্ষ্যে আগামী ২৪শে মার্চের নির্বাচনে শেখ হাসিনা মনোনীত প্রার্থী আমি শফিকুল মোর্শেদ আরুজকে নৌকা প্রতীকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবে।
এদিকে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ফরিদ হাসান ওদুদ তার বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলনে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার বলেন, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আরুজ আমার ৩টি নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করেছে। সেই ভাংচুরের বিষয়টি আমি প্রশাসনকে জানিয়েছি। ভোটাররা যাতে নির্বিঘেœ যাতে ভোট কেন্দ্রে যেতে না পারে সে জন্য আরুজই আতঙ্ক সৃষ্টি করে চলেছে। নিজের দোষ ঢাকার জন্যই সে সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যাচার করেছে।