॥স্টাফ রিপোর্টার॥ মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগে রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়ায় দুই শিশুকে রশি দিয়ে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত সাবেক সেনা সদস্য জুলফিকার আলী শেখ(৫৩) ও তার ছেলে সুমন শেখ (২৫)কে গত ৯ই ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যায় নারুয়া বাজার থেকে থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
এ ঘটনায় নির্যাতিত শিশু বিজয় মোল্লার(১১) পিতা ফরিদ মোল্লা বাদী হয়ে বালিয়াকান্দি থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। গ্রেফতারকৃত পিতা-পুত্রকে গতকাল ১০ই ফেব্রুয়ারী আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
গত ৮ই ফেব্রুয়ারী বিকালে অবঃ সেনা সদস্য জুলফিকার আলী শেখ ও তার ছেলে নারুয়া বাজারের মোবাইল ফোনের মেকানিক সুমন শেখ মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগে বিলধামু গ্রামের সাদেক আলীর ছেলে ও মধুপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণীর ছাত্র আশিক (৭) ও একই গ্রামের ফরিদ মোল্লার ছেলে ও বিলধামু আবুল কাসেম মন্ডল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্র বিজয় মোল্লাকে নারুয়া বাজার সংলগ্ন একটি ভবনে আটকে রেখে রশি দিয়ে বেঁধে অমানবিকভাবে নির্যাতন করে।
এ ঘটনায় পরদিন ৯ই ফেব্রুয়ারী দৈনিক মাতৃকণ্ঠের প্রথম পাতায় ‘নারুয়ায় মোবাইল চুরির অভিযোগে দুই শিশুকে রশি দিয়ে বেঁধে মারপিট’ শিরোনামে নির্যাতনের সচিত্র সংবাদ প্রকাশিত হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
সংবাদটি রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি (বিপিএম,পিপিএম)-সেবা’ এর নজরে এলে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে সময়ে জরুরী ভিত্তিতে বালিয়াকান্দি থানার ওসিকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। এরপর বালিয়াকান্দি থানার এস.আই বিল্লাল হোসেন সঙ্গীয় ফোর্সসহ সন্ধ্যায় নারুয়া বাজারে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত সাবেক সেনা সদস্য জুলফিকার আলী শেখ ও তার ছেলে সুমন শেখকে গ্রেফতার করেন। রাতেই নির্যাতিত বিজয় মোল্লার পিতা ফরিদ মোল্লা বাদী হয়ে তাদেরকে আসামী করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
বালিয়াকান্দি থানার এস.আই বিল্লাল হোসেন বলেন, মোবাইল চুরির অভিযোগে দুই স্কুল ছাত্রকে রশি দিয়ে বেঁধে শারীরিক নির্যাতন করার কারণে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। যথাযথভাবে তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
মামলার বাদী ফরিদ মোল্লা বলেন, ছেলেকে মারপিটের কথা শুনে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি দু’জনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারপিটের ফলে রক্ত জমে আছে। সেখান থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছ থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ীতে নিয়ে আসি। ছেলে দু’টি নির্দোষ। মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তাদেরকে অমানবিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। আমি এর শাস্তি চাই।